কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ::
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে করোনাকালেও পাওয়া গেলো ১২ বস্তা টাকা, বিদেশি মুদ্রাসহ স্বর্ণ ও রৌপ্যালঙ্কার।
শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মসজিদ কমিটির উপস্থিতিতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে এ বক্সগুলো খোলা হয়।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে পাঁচটি লোহার বানানো দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর বাক্সগুলো খোলা হয়ে থাকে। তবে এবার করোনাকালের জন্য প্রায় চার মাস পর আজ দানবাক্স খুলে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ দেখে সবার চক্ষু চড়কগাছ!
এর আগে গত গত বছরের ২৩ আগস্ট দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় এক কোটি ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার ১০৯ টাকা। এ ছাড়া বিদেশি মুদ্রাসহ স্বর্ণ ও রূপার অলঙ্কার।
মসজিদটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এসব অর্থ এ মসজিদসহ জেলার সব মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।
মসজিদের খতিব,এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন সূত্রে জানা যায়, এখানে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়- এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে দান করে থাকেন।
সূত্রমতে, একসময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝপথে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে।
মুসলিম ও হিন্দু-নির্বিশেষে সব লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়।ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।
তবে ওই সাধকের দেহাবসানের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকা এমনকি দেশের দূর-দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। মানত কিংবা দানখয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে।
তারা নগদ টাকা-পয়সা,স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে।
আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন এ মসজিদে। আর এ ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।
জেলা প্রশাসককে (ডিসি) সভাপতি করে প্রশাসন ও স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনকে নিয়ে গঠিত কমিটি এ মসজিদটির ব্যবস্থাপনা ও দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন।
আর দানের বিপুল অর্থ মসজিদ ও মসজিদ ক্যাম্পাসে অবস্থিত মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।
টাকা গোণার কাজে অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট (এডিএম), নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, নির্বাহী মাজিস্ট্রেট, রূপালী ব্যাংকের এজিএম ও অন্যান্য কর্মকর্তা, ব্যবস্হাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে থাকেন। একই সঙ্গে চলছে মেশিনে টাকা গুণার কাজ। পুরোপুরি টাকা স্বর্ণ-রৌপ্যালঙ্কার গণনার কাজ শেষ হতে বিকাল গড়িয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে।#
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085
Leave a Reply