কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::
বসতঘরে অবচেতন অবস্থায় মৃত স্বামীকে রেখে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে উঠে স্ত্রী। পার্শ্ববর্তী ঘরের ভাসুর বিষয়টি বুঝতে পেরে বাগান পঞ্চায়েতসহ চা শ্রমিকদের অবগত করেন। পরে ঘরে প্রবেশ করে প্রেমিক যুগল ও অবচেতন স্বামীকে পাওয়া যায়। চা বাগানের চিকিৎসক আসার পর বিজয় বাউরী (৩০) কে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে স্থানীয়রা প্রেমিক যুগলকে আটক করেন। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে আটক দু’জনকে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার ফুলবাড়ী চা বাগানে নতুন লাইনের জিলপাড়া নামক এলাকায়।
নিহতের মা যমুনা বাউরি অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে বিজয় বাউরী (৩০) এর সাথে জুড়ি উপজেলার সোনারুপা চা বাগানের মতি বাউরীর মেয়ে অষ্টমি বাউরী (২৮) এর সাথে সামাজিক ভাবে ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে রূপালী (৭) ও লাভনী বাউরী (৪) বছর বয়সী দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কয়েক মাস পূর্বে প্রতিবেশী চাঁন মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া (৩৫) কে বাড়ির সামনে দোকান কোঠা ভাড়া দিলে তার কু-দৃষ্টি পড়ে আমার ছেলের সংসারে।
বিশ্বজিৎ বাউরী, সোহেল মিয়া, সুমন ও সুচিত্রাসহ এলাকাবাসী জানায়, চাঁন মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া একজন লম্পট প্রকৃতি। বুধবার দিবাগত রাতে স্থানীয় বিজয় বাউরীর বসত ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে সেলিমকে প্রবেশ করতে স্থানীয় এক যুবক দেখতে পেয়ে অন্যদের জানালে স্থানীয় যুবকরা বিজয় বাউরীর ঘর ঘিরে রাখে। একপর্যায়ে বাড়ির লোকজনকে ডেকে বিজয়ের ঘরের দরজা খুলে সেলিমকে পাওয়া যায়নি। পরে জনতার জেরার মুখে বিজয় বাউরীর স্ত্রী অষ্টমি বাউরী ড্রেসিং টেবিলের তালাবদ্ধ বক্সের ভেতর থেকে তালা খুলে সেলিম মিয়াকে বের করে দেয়। এ সময় বিজয় বাউরীকে অচেতন অবস্থায় মাটিতে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। ঘর তল্লাসীর সময় অষ্টমি বাউরির শয়ন কক্ষ থেকে ৪টি ঘুমের বড়ি এপিক্লোন-২ ও ৪ টি সিনারন প্লাস ট্যাবলেটের খোসা পাওয়া যায়। স্থানীয়রা জানান, সেলিম ও আষ্টমি তাদের প্রেম লিলা নিরাপদ ভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য হয়তো বিজয়কে রাতে হয়তো অতিরিক্ত ঘুমের বড়ি খাইয়ে প্রেমিক সেলিমকে ঘরে ঢুকিয়েছে। পরে চা বাগানের চিকিৎসকে আনার পর তিনি বিজয় বাউরীকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযোগ করে প্রতিবেশী সন্টু বাউরী বলেন, এই সেলিমের কারণে আমার সংসার ভেঙ্গেছে। আমার ঘরে এক অবুঝ সন্তান রয়েছে। আজ আরেক সংসার ভাঙ্গলো এই লম্পট সেলিম।
ফুলবাড়ী বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মনুরঞ্জন পাল বলেন, এর পূর্বে সেলিমের বিরোদ্ধে অভিযোগে একাধিক সালিশ বৈঠকে ক্ষমা চেয়ে পার পেলেও তার চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি।
কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক জিঞ্জসাবাদের জন্য দুই প্রেমিক যুগলকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলে বুঝা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।#
Leave a Reply