কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:: আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি নির্দেশনার পর শুরু হয় বিদ্যালয় সমুহে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও জীবানুনাশক প্রয়োগ। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও কলেজ সমুহে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষকরা ও শ্রমিক নিয়োগ করে ঝোঁপঝাড় পরিষ্কার, শ্রেণী কক্ষ ধোঁয়া মুছাসহ অগ্রিম প্রস্তুতি শুরু করেন। তবে তুলনামূলক প্রাথমিক বিদ্যালয় সমুহের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ছিল লক্ষ্যনীয়।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, কোভিড-১৯ সংক্রমনের কারণে টানা ১৮ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সরকারি নির্দেশনায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যালয় সমুহ খোলা হবে। গত বছর ১৮ মার্চ থেকে সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। এরপর অনলাইনে পাঠদান শুরু হলেও ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী নানা কারণে অনলাইনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে সরকারি নিয়ম মোতাবেক ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠান সমুহে পাঠদানে ক্লাস রুটিন তৈরি করা হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ সমুহে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার তুলনায় গত এক সপ্তাহ যাবত প্রাথমিক বিদ্যালয় সমুহে শিক্ষকরা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতায় বেশ মনোনিবেশ ছিলেন। এসব বিষয়েও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারাও তদারকি করেন। কমলগঞ্জের ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি মাদ্রাসা, ৮টি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়, ৪টি কলেজ ও ৩০টি কেজি স্কুল খোলার প্রস্তুতি নিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীরের ভেতর ও বাহিরের ঝোঁপঝাড়ও পরিচ্ছন্নতা এবং অফিস, শিক্ষক কক্ষ সবই জীবানুনাশক ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে।
ভরতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাম্মত ইসমত আরা, মঙ্গলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশাহিদ আলী, কৃষ্ণচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্ত কুমার সিংহ, শ্রীসূর্য্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন জাহান ও ধুপাটিলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরুল মোত্তাকীন বলেন, সরকারি নির্দেশনার পরপরই আমরা শিক্ষকরা যৌথভাবে এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা থেকে শুরু করে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা শুরু করি। দু’দফা জীবানুনাশক প্রয়োগ, কক্ষ ধোঁয়া-মোছা করে নতুন রূপে বিদ্যালয়কে সাজানো হয়েছে। তাছাড়া মাক্স, হ্যান্ড সেনিটাইজারসহ নির্দেশনা মোতাবেক সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্যেন্দ্র কুমার পাল ও পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়েজ আহমদ বলেন, ইতিমধ্যে আমরা সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে এরই মধ্যে আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে মাক্স, হ্যান্ডসেনিটাইজার, তাপমাত্রার মেশিন ও ১টা আলাদা আইসোয়েলেসনের জন্য রুম ঠিক করে রেখেছি।
কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম তালুকদার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন নাহার পারভীন বলেন, ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ পরিচ্ছন্ন ও শিক্ষা উপযোগী করে প্রস্তুত রাখতে সকল ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরাও যথারীতি পরিদর্শন করেছি এবং সবগুলো বিদ্যালয়েই প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, সরকারি নির্দেশনামত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত কিনা সে অনুযায়ী আমাদের নজরদারি ও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। শিক্ষকদেরও পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
Leave a Reply