সালাউদ্দিন:-
★বিশেষ জাত ‘বঙ্গবন্ধু ১০০’ রোপণ
★পানি সংকটে ফসলি জমি
★মাঠে কৃষকদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় বেরো আবাদ শুরু করেছেন কৃষকরা।ধানের চারা রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন তারা।ফসলি জমিতে পানি সেচ, হালচাষে ব্যাস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে কৃষকদের।
ভোর বেলা ক্ষেতের জমি প্রস্তুত করতে কৃষকদের বেরিয়ে যাওয়ার দৃশ্য এখন সহজেই চোখে পরে । কনকনে শীত উপেক্ষা করে কৃষকরা বোরো আবাদের জমিতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করছেন ।কেউ জমিতে জৈব সার দিচ্ছেন আবার কেউ পানির কল দিয়ে সেচ দিচ্ছেন।অনেকেই বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করছেন।শীতের মৌসুমে কৃষকরা ভোর বেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে কাজ করে যাচ্ছেন।হাল-চাষে কৃষকদের পাওয়ার টিলার ব্যাবহার করতে দেখা যায়।এছাড়াও জমিতে কৃষকরা সার প্রয়োগ করছেন।স্থানীয় কিটনাশক বিক্রেতা মঈন উদ্দিন জানান, কৃষকরা বোরো ধান রোপণ করছেন।এজন্য এখন দোকানে সার বেশি বিক্রি হচ্ছে।প্রতিবছর ধানে পোকার আক্রমণ দেখা যায়।এজন্য পোকা দমনের কীটনাশক মজুদ করেছি’।
স্থানীয় কৃষক বদরুল ইসলাম জানান,বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়।এছাড়া বোরো আবাদ করতে খরচও বেশি হয়।ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পরপর সেচ দিতে হয়।আশা রাখি বোরো আবাদ হলে বেশি লাভমান হবো।
তবে এবার বোরো ধান চাষে কৃষকরা পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।বিভিন্ন জায়গায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় হাকালুকি হাওরে যে ছোট বড় খাল রয়েছে সেখান থেকে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে।আবাদি জমির পরিমান বেশি হওয়ায় তুলনামূলক পানির জোগান নেই।পানির সংকট অতিরিক্ত মাত্রায় দেখা দিলে বোরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মারাত্মক আশঙ্কা রয়েছে।কোনো কোনো জায়গায় খালে বাঁধ দিয়ে পানি আটকানো হয়েছে।
অনেক জায়গায় পানির অভাবে ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে না।বৃষ্টি না হলে ধান রোপনের প্রস্তুতি নেই অনেকের।ক্ষেতের জমির আশেপাশে পানির সুযোগ না থাকায় রয়েছে পানির সংকট।ভূকশিমইল ইউনিয়নের কৃষক সন্টু দাশ জানান,পানির অভাবে এখনও বোরো ধান রোপন করি নি।জমির আশেপাশে পানির সুযোগ না থাকায় ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি।বৃষ্টি না হলে এবার বোরো চাষের সম্ভাবনা নেই”।স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুবুল হাসান জসিম জানান,’পানির সংকটে শতাধিক চাষিরা ধান রোপণ করতে পারেন নি।পানি না থাকায় চাষিরা বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে’।
কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে , এ বছরের বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ২ শত হেক্টর।এর মধ্যে হাইব্রিড ১ হাজার হেক্টর,উপসী ৭ হাজার ১ শত ৮০ ও স্থানীয় জাত ২০ হেক্টর।উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার ৫ শত ৮৫ মেট্রিক টন।গত বছর ৭ হাজার ৯ শত ১২ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রায় ধান উৎপাদন হয়েছে ৪৬ হাজার ৯ শত ৩৮ মেট্রিক টন।
এ বছরের বোরো ধান উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের হাইব্রিড টিয়া SL8H জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।এছাড়াও ২ বিঘা জমিতে বিশেষ ধানের বীজ ‘বঙ্গবন্ধু ১০০’ দুই জন কৃষককে দেওয়া হয়েছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আব্দুল মোমিন জানান,বোরো ধান উৎপাদনে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় উৎপাদনে উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের সহযোগিতা করছে।উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply