আব্দুল আহাদ ::
এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় পানি সংকটে বোরো ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে বৃষ্টির জন্য ১৯ মার্চ শনিবার বিকালে হাওর তীরবর্তী এলাকায় মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে স্থানীয়রা।
হাকালুকি হাওর তীরবর্তী জকিরবিল, ধলিয়া, বাওনকান্দি এলাকার কৃষকরা জানান, বোরো চারা রোপনের কয়েকদিন পর থেকেই বৃষ্টির দেখা নেই। খাল-বিলে যা পানি ছিলো তা দিয়ে কোন রকমে ধানগাছগুলিকে বাচিয়ে রাখা হয়েছে। এখন ধানি জমির সাথে খাল-বিলগুলোও শুকিয়ে চৌচির। কি করবো বুঝতে পারছিনা। অনেক আশা করে বোরো ধান রোপণ করছিলাম, এখন পানির অভাবে সব নষ্ট। ঋণ করে টাকা খরচ করেছি।
পানি সংকটের ফলে ভাটেরা, বরমচাল, ভুকশিমইল, জয়চন্ডী, কাদিপুর, জায়ফরনগর ইউনিয়নের শত শত কৃষক জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। এসব এলাকার অধিকাংশ বোরো ধানের জমি পানির অভােেবা ফেটে রোপণকৃত চারা নষ্ট হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
এদিকে শনিবার বিকালে হাওর তীরবর্তী এলাকার লোকজনের উদ্যোগে হাওরে এক মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। এতে শতাধিক স্থানীয় লোকজন অংশগ্রহণ করেন। প্রাকৃতিক এ দূর্যোগ থেকে রেহাই পেতে এবং রহমতময় বৃষ্টির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, পানির পর্যাপ্ততা থাকলে হাওর অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় হাজার একর জমিতে আউশ, আমন ও বোরো চাষ করা যেত। সেচ সংকটে ভরা মৌসুমেও চাষাবাদ করতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেন এসব এলাকার কৃষকরা। তাঁদের মতে, হাওর এলাকায় গভীর নলকুপ স্থাপন হলে এ সমস্যা থাকতো না।
কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মোমিন জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ৮হাজার ২০০ হেক্টর নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাইব্রিড ১ হাজার হেক্টর, উফশী ৭হাজার ১৮০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাত ২০ হেক্টর। যা গত বছরের আবাদ থেকে ২৮৮ হেক্টর বেশি। দীর্ঘদিন থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খাল-বিলের পানি শুকিয়ে সেচ এ সংকট দেখা দিয়েছে। যারফলে নির্ধারিত লক্ষমাত্রায় ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ২-৪ দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছি।#
Leave a Reply