এইবেলা, বড়লেখা ::
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলীর বড়লেখায় দায়িত্বপালনের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে কাল ২০ মে, ২০২২ইং। যোগদানের পরের মাসেই হারিয়েছেন সবচেয়ে কাছের মানুষ গর্ভবতী সহধর্মীনিকে। করোনার সাথে প্রায় এক মাস যুদ্ধ করে অবশেষে অনাগত সন্তানসহ তিনি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। এ শোককে পেছনে ফেলে কর্মস্থল বড়লেখাবাসীকে নিজের পরিবার মনে করে মনোনিবেশ করেন নানা মানবিক ও সরকারি গুরু দায়িত্ব পালনে। অর্পিত সরকারি দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিক ও নানা মানবিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে স্থান করে নিয়েছেন বড়লেখার সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে।
খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বড়লেখায় যোগদানের আগে থেকেই শুরু হয় করোনা মহামারি দ্বিতীয় ঢেউ। এসময়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তিনি সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করেন। করোনা কালিন সময়ে বড়লেখার অসহায় ও দরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন সরকারি খাদ্যসামগ্রী। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বড়লেখা উপজেলায় প্রবাসীদের ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম সহজতর ও সাশ্রয়ী করার লক্ষে ভ্রাম্যমাণ যানবাহনের ব্যবস্থা চালু করেন। এর ফলে করোনা কালিন লকডাউনের সময়ে সিলেট ও মৌলভীবাজারে না গিয়েই ঘরে বসে প্রবাসীগণ করোনার টিকার রেজিষ্ট্রেশন সুবিধা পেয়েছেন। সাংস্কৃতিক ও ক্রিড়াঙ্গণের গতিশীলতা আনয়নের লক্ষে বড়লেখা উপজেলার সকল সংস্কৃতিকর্মী ও ক্রীড়া সংগঠক এবং ক্রিড়ামোদীদের নিয়ে খেলাধুলাসহ জাকজমকপূর্ণ জাতীয় দিবস সমূহ পালনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে তুলেন। অসহায় ও দরিদ্র সাংস্কৃতিক ব্যক্তি/পরিবারকে সরকারি গৃহ প্রদান ও আর্থিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সচ্ছলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ অফিসার্স ক্লাব পুণঃসংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করায় উপজেলা প্রশাসনের সকল অফিসারের মিলনমেলায় পরিনত হয়েছে এ ক্লাবটি। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ভুমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত পাকাঘরের গুনগত মান নিশ্চিতকরণসহ সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রম সমূহ নিবিড়ভাবে তদারকি করেন। ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে সরকারি গৃহ প্রদান ও পিছিয়ে থাকা এই জনগোষ্ঠীকে সকল সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেন।
বিয়ানীবাজার ও জুড়ী উপজেলা হতে বড়লেখা উপজেলার প্রবেশ মুখে ‘স্বাগতম’ ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত মাধবকুল্ড ইকোপার্কের সামনে দৃষ্ঠিনন্দন ভাস্কর্য স্থাপনের মাধ্যমে বড়লেখা উপজেলাকে নান্দনিকভাবে উপস্থাপনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী এক বছরের কর্মকালিন সময়ে বড়লেখা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যমকর্মী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক ব্যক্তিবর্গের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেন। বড়লেখা-জুড়ী সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের দিক নির্দেশনা প্রতিপালনের মাধ্যমে তিনি পরিবেশ রক্ষায় টিলা কর্তন প্রতিরোধ, হাকালুকি হাওরের মৎস্য ও পাখি সংরক্ষণ এবং ভ্রমন পিপাসুদের আকৃষ্ট করণে কার্যকর ভুমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
Leave a Reply