আব্দুর রব::
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ অফিসার তৌফিক বক্ত এক সহকর্মী নিয়ে ২৪ নভেম্বর পাতাল রেলের দু:সাহসী উদ্ধার অভিযানের কৃতিত্বে বড়লেখায় গ্রামের বাড়িতে আনন্দের বন্যা বইছে। এদিকে, ২৮ নভেম্বর নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস তাঁদের জীবন বাজি রাখা অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই দিনটিকে ‘তৌফিক দিবস’ ও ‘ব্রুনেল ভিক্টর দিবস’ ঘোষণা করেছেন।
নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কর্মরত পুলিশ অফিসার তৌফিক বক্ত এবং তার সহকর্মী পুলিশ অফিসার ব্রুনেল ভিক্টর তাঁদের জীবনকে তুচ্ছ করে ম্যানহাটন, ইস্ট ১১৬ স্ট্রিট-লেক্সিংটন অ্যাভিনিউতে ট্র্যাকে পড়ে যাওয়া একজনকে অন্য একটি ট্রেন স্টেশনে প্রবেশ করার কয়েক সেকেন্ড আগে উদ্ধার করেন। তাদের সফল অপারেশনের কারণে নিশ্চিত মৃত্যুর কবল থেকে লোকটি বেঁচে যায়।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের পুলিশ অফিসার তৌফিক বক্ত মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের বড়থল গ্রামের বেলওয়ার বক্ত বাদল মিয়ার ছেলে এবং আগর-আতর ব্যবসায়ি রহিম বক্ত মুসার ভাতিজা। তিনি উপজেলার গাংকুল পঞ্চগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করে। এরপর পরিবারের সাথে আমেরিকায় পাড়ি জমান। সেখানে লেখাপড়া শেষে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে যোগ দেন।
২৮ নভেম্বর নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস তার ঘোষণাপত্রে বলেন, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের অফিসার তৌফিক বক্ত ও ব্রুনেল ভিক্টর ডিপার্টমেন্টের গর্বিত সদস্য। তারা জনৈক গৃহহীন ব্যক্তিকে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে পাতাল রেলের ট্র্যাক থেকে উদ্ধার করে অদম্য সাহসিকতা ও ত্যাগী মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তাদের এই সহমর্মিতা ও দৃঢ়তা ঘটনার দিনটিকে সমুজ্জ্বল করেছে। তাই আমি এই দিনটিকে ‘তৌফিক বক্ত দিবস’ ও ব্রুনেল ভিক্টর দিবস’ বলে ঘোষণা করছি।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ অফিসার তৌফিক বক্ত ও ব্রুনেল ভিক্টর পেশাদারিত্বের পাশাপাশি যে মানবিকতা প্রদর্শন করেছেন তা স্মরণীয় করে রাখতে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র হিসেবে তিনি দিনটিকে ‘তৌফিক দিবস ও ব্রুনেল ভিক্টর’ দিবস ঘোষণা করলেন।’
তৌফিক বক্তের চাচা রহিম বক্ত মুসা জানান, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া মারফত ভাতিজা তৌফিক ও তার এক সহকর্মীর দুঃসাহসী একটি অভিযানের খবর জেনেছেন। এ খবরে দেশে থাকা আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। তার জীবন বাজি রাখা এ কৃতিত্ব শুধু পরিবারের কিংবা বড়লেখাবাসীর নয়। এটি সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও সম্মানের।
Leave a Reply