বড়লেখা প্রতিনিধি::
বড়লেখা ও জুড়ীতে যুগ যুগ ধরে জরিপহীনভাবে পড়ে থাকা ভারত সীমান্ত ঘেষা পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট মৌজার প্রায় ২৫ হাজার একর বনভূমি জরিপের আওতায় নিয়ে আসার যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর। গত ১০ মার্চ ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাঠ জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে জোনাল সেটেলমেন্ট কার্যালয়। বুধবার এই জরিপ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন জরিপ অধিদপ্তরের চার্জ অফিসার সোনিয়া সুলতানা।
জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার ভারত সীমান্ত ঘেষা সাবাজপুর চা বাগান মৌজা, ছোটলেখা চা বাগান মৌজা, বিওসি কেছরিগুল মৌজা, নিউ সমনবাগ মৌজা এবং জুড়ী উপজেলার জামকান্দি মৌজা, পূর্ব দূর্গাপুর মৌজা, গোবিন্দপুর মৌজা ও বিনোদপুর মৌজা নিয়ে পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ মৌজা গঠিত। এই মৌজার ভূমির পরিমাণ ২৩ হাজার ৫শ’ ৩২ একর। কিন্তু মৌজা গঠনের কয়েক যুগ পার হলেও নানা জটিলতার কারণে এলাকাটির কখনও জরিপ হয়নি। এতে সীমান্তবর্তী স্থানীয় জনসাধারণ ও বিভিন্ন চা বাগান সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ভোগান্তির শিকার হন। অবশেষে গত বছরের ২৮ আগষ্ট বিশাল এই আনসার্ভেড ল্যান্ড সার্ভে করতে ‘বাংলাদেশ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর’ ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাঠ জরিপের পরিকল্পনা’ নামক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। উক্ত প্রজ্ঞপানের নির্দেশনা অনুযায়ি সিলেট বিভাগের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট মৌজার ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাঠ জরিপ কাজ সুষ্ঠু ও নির্ভুল করার লক্ষে জিওডেটিক পিলার স্থাপনের স্থান নির্ধারণ পুর্বক পিলার স্থাপনের জন্য জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি গত ১০ মার্চ সরেজমিনে জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে।
গত ১৪ মার্চ জরিপ অধিদপ্তরের চার্জ অফিসার সোনিয়া সুলতানা পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্টের সাবাজপুর চা বাগান মৌজায় চলমান জরিপ কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। এসময় বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার সনদ কুমার সাহা, সাবাজপুর চা বাগানের জেনারেল ম্যানেজার আলী আহমেদ, স্কয়ার গ্রুপের (করপোরেট রিলেশনস) ডিজিএম নুরুজ্জামান, জুড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, গণমাধ্যম কর্মী, সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার নুরুল আমীন, সার্ভেয়ার মো. ঈদুন নবী, মো. আবুল কাশেম, বড়লেখা সহকারি কমিশনার (ভূমি)’র প্রতিনিধি অসিত দেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জরিপ অধিদপ্তরের চার্জ অফিসার সোনিয়া সুলতানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা জরিপহীন ভূমির জরিপ কার্যক্রমের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে জিওডেটিক পিলার স্থাপন করা হচ্ছে। এগুলো সঠিক জায়গায় নির্ভুলভাবে স্থাপন করা হচ্ছে কি না তা তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটির প্রধান হিসেবে তিনি সরেজমিনে জরিপ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এর আগে তিনি বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদের নিকট থেকে উক্ত জরিপ কার্যক্রম সুষ্ঠু ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে নানা পরামর্শ গ্রহণ করেন।
Leave a Reply