নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) :: নওগাঁর আত্রাইয়ে নদী ও বিভিন্ন খাল বিলে নিষিদ্ধ চায়না ম্যাজিক জাল (রিংজাল) দিয়ে অবাধে চলছে মাছ শিকার। নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের পর এবার ভয়ঙ্কর চায়না জালের ফাঁদে দেশিয় প্রজাতির মাছ। এতে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, ডিমওয়ালা মাছসহ জলজ প্রাণী ধরা পড়ছে এ জালে। ফলে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার নদী, খাল-বিল ও জলাশয়।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এক শ্রেণির অসাধু মৎস্য শিকারী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রিং জাল দিয়ে মাছ নিধনে। এবারে আত্রাইয়ে বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই নদী ও খাল বিলে পানি কম।
নদ-নদীতে থাকা মিঠা পানির সব ধরনের দেশি মাছ সূক্ষ এই চায়না জালে ধরা পড়ছে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টির ফলে আত্রাই নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ে পানি বৃদ্ধির ফলে এই প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কই, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ প্রাকৃতিক সব মাছ এই সর্বশেষ চায়না জালে নিধন হচ্ছে।
এ জন্য অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে মাছের প্রজননও অনেক কম হয়েছে। তারপরও নিষিদ্ধ রিংজালের ব্যবহারে দেশীয় প্রজাতির মাছের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে উপজেলার শতাধিক জেলে পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে সহস্রাধিক জেলে পরিবার রয়েছে। তারা সারা বছর মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এবারে মৌসুমের শুরু থেকেই অনাবৃষ্টি ও উজানের ঢল না থাকায় খাল-বিলে তেমন পানি না থাকায় মাছের প্রজননও খুব কম হয়েছে।
বর্ষা মৌসুমের শেষের দিকে এসে কিছুটা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু অসাধু মাছ শিকারীর রিংজালে এসব মাছ ধরা পড়ায় মাছের প্রজনন বৃদ্ধি চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে এক দিকে
যেমন দেখা দিয়েছে মাছের সংকট তেমনি বিপাকে পড়েছে জেলে পরিবার। আত্রাই মাছ বাজার আড়তদার সমিতির সভাপতি আলহাজ শিপন প্রামাণিক বলেন, অনান্য বছর বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন শত শত টন মাছের আমদানি হতো। কিন্তু এবারে বন্যা থাকায় দেশী প্রজাতির মাছ নেই বললেই চলে।
উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম মামুনুর রশিদ বলেন, নদী মাতিৃক সোনার বাংলায় আমরা মাছে-ভাতে বাঙ্গালী। কিন্তু নিষিদ্ধ এই চায়না জালের ব্যবহার বন্ধ না হলে হয়তো বা আর মিলবে না মিঠা পানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য সিনিয়র কর্মকর্তা পলাশচন্দ্র দেবনাথ বলেন, বিভিন্ন স্থানে রিংজালের ব্যবহার হচ্ছে। আমরা এগুলোর প্রতিরোধে অভিযানও পরিচালনা করছি। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জাল আটক ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, নিষিদ্ধ চায়না জাল (রিংজাল) ব্যাবহার বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনভাবেই নিষিদ্ধ রিংজাল দিয়ে মাছ ধরতে দেয়া যাবে না। গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার আত্রাই নদীতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান রিংচাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply