বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখা উপজেলার ১০ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ প্রায় ১৫ দিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতিও হয়নি। বন্যায় নিমজ্জিত রয়েছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৩৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্টানে খোলা হয়েছে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র। সেগুলোতে ৫ শতাধিক বন্যা দুর্গত পরিবার বসবাস করছে। এরই মাঝে ঈদের ছুটি ৭ দিন কমিয়ে কাল বুধবার খোলছে মাধ্যমিক স্তরের ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্যায় রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়া এলাকার শিক্ষার্থীদের স্কুল-মাদ্রাসায় পাঠানো নিয়ে অভিভাবকরা চরম উদ্বিগ্ন।
আগামি ৩ জুলাই পর্যন্ত ঈদের ছুটি থাকার নোটিশ দিয়ে ১১ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্টান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ছুটি চলাকালিন এক প্রজ্ঞাপনে ২৬ জুন বুধবার মাধ্যমিক স্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। বন্যার মাঝে ছুটি কমিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় অভিভাবকরা ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে, জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে অব্যাহত ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দেয়। হাকালুকি হাওড়পাড়ের তালিমপুর, সুজানগর, বর্নি ও দাসেরবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়ে পড়ায় ৮ জুন ১৫টি প্রাইমারি স্কুলের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় উপজেলা শিক্ষা অফিস। ক্রমশ বন্যার অবনতি ঘটায় উপজেলা প্রশাসন ৩৩টি প্রাইমারি ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোলেছে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র। এগুলোতে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫ শতাধিক বন্যা দুর্গত পরিবার বসবাস করছে। আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষিত ১১ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও ঈদগাহবাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, হাজী শামছুল হক উচ্চ বিদ্যালয়, গল্লাসাঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়, তালিমপুর বাহারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাতোলা উচ্চ বিদ্যালয়, এম. মুন্তাজিম আলী কলেজ, কানসাই উচ্চ বিদ্যালয়, ফকিরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়, পশ্চিম বর্নি উচ্চ বিদ্যালয়, সুজাউল ফাযিল ডিগ্রী মাদ্রাসা সহ অর্ধশতাধিক স্কুল-মাদ্রাসা বন্যায় পানিবন্দী রয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিক্ষার্থী মারা গেছে। এরই মাঝে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় অভিভাবকরা তাদের ছেলে-মেয়ের স্কুল মাদ্রাসায় যাওয়া আসা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাওলাদার আজিজুল ইসলাম বন্যায় মাধ্যমিক স্তরসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যায় পানিবন্দী থাকার সত্যতা স্বীকার করে জানান, যেহেতু ২৬ জুন বুধবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে, বিধায় শিক্ষার্থী আসুক বা না আসুক শিক্ষক-কর্মচারিদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
Leave a Reply