সিলেট সংবাদদাতা :: সিলেট নগরীতে যানজট নিরসন ও সুশৃঙ্খল পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নগরীতে ৩০টি বৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও লেগুনা স্ট্যান্ডে তালিকা অনেক আগেই প্রকাশ করেছে। বর্তমানে কোন স্ট্যান্ডে কতোটি গাড়ি থাকবে তা উল্লেখ করে নগরীর বিভিন্ন স্ট্যান্ডে একাধিক নির্দেশনা বোর্ড লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে। যেখানে কোনো স্ট্যান্ডে সর্বনিম্ন ৫টি গাড়ি ও কোনো স্ট্যান্ডে সর্বোচ্চ ১৫টি গাড়ির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা সেই নির্দেশনা গুলো উপেকআ করে তা অমান্য করছেন।
গত বুধবার (১ অক্টোবর) সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্ট্যান্ডে এই বোর্ড লাগানো হয় এবং বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) তা চলমান আছে।
নির্দেশনা বোর্ডে উল্লেখ করা হয়, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্ট্যান্ড ছাড়া রাস্তায় এবং নির্ধারিত এলাকার বাইরে অন্য কোনো সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও লেগুনা পার্কিং করা অবস্থায় পাওয়া গেলে যথাবিহীত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট ও বিভিন্ন স্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, যে স্ট্যান্ডে ৫টি গাড়ি থাকার কথা সেখানে ২৫-৩০টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা রাখা রয়েছে। এবং যেখানে ১৫টি থাকার কথা সেখানে ৫০টিরও বেশি গাড়ি লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে কোনো কোনো স্ট্যান্ডে লেগুনার সংখ্যা ১০টিরও বেশি আবার কোনো কোনো স্ট্যান্ডে ৭-৮টি লেগুনা পার্কিং করা রয়েছে।
সিলেট মহানগরীর অনুমোদিত ৩০টি স্ট্যান্ডের মধ্যে কোন স্ট্যান্ডে কতোটি গাড়ি থাকবে সেগুলো হলো- আম্বরখানা স্ট্যান্ডের আওতাধীন (সুনামগঞ্জ মূখী ৫ টি, এয়ারপোর্ট মূখী ৫ টি, চৌহাট্টা মূখী ৫ টি গাড়ি), টিলাগড় পয়েন্ট স্ট্যান্ডের আওতাধীন (বালুচর মূখী ৫ টি, তামাবিল মূখী ৫ টি, শিবগঞ্জ মূখী ৫ টি গাড়ি), মদিনা মার্কেট স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, পাঠানটুলা স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট স্ট্যান্ডে ১৫টি গাড়ি, তেমুখী স্ট্যান্ডের আওতাধীন (বাধাঘাট মূখী ৫ টি, টুকের বাজার মূখী ৫ টি গাড়ি), টুকের বাজার স্ট্যান্ডের আওতাধীন (লামাকাজী মূখী ৫ টি, তেমূখী গামী ৫ টি গাড়ি), ভার্থখোলা ক্বীন ব্রিজ স্ট্যান্ডে ১০টি গাড়ি, বাবনা পয়েন্ট স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, কদমতলী মুক্তিযোদ্ধা পয়েন্ট স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, হুমায়ুন রশিদ চত্বর স্ট্যান্ডের আওতাধীন (ফুলকলির সামনে ৫ টি, ফেঞ্চুগঞ্জ গামী রোডের পাশের স্ট্যান্ডে ৫ টি, আপন হোটেলের পাশের স্ট্যান্ডে ১০ টি), সামাদ চত্বর স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, শেখঘাট জিতু মিয়ার পয়েন্ট স্ট্যান্ডে ৫টি গাড়ি, রিকাবিবাজার পয়েন্ট স্ট্যান্ডে ৫ টি গাড়ি, শাহপরান মাজার গেইট স্ট্যান্ডের আওতাধীন (মেজরটিলা মূখী ৫ টি, সুরমাগেট বাইপাস মূখী ৫ টি গাড়ি), মেজরটিলা ইসলামপুর বাজার স্ট্যান্ডের আওতাধীন (টিলাগড় মূখী ৫টি, শাহপরান মাজার গেট মূখী ৫ টি গাড়ি), বালুচর পয়েন্ট এমসি কলেজ ছাত্রাবাস সংলগ্ন স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, উত্তর কুশিঘাট স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেইট স্ট্যান্ডে ৫ টি গাড়ি, ধোপাদিঘিরপাড় এম.এ.জি ওসমানী শিশু পার্ক স্ট্যান্ডে ৫ টি গাড়ি, কাজীটুলা বাজার স্ট্যান্ডে ৫ টি, জেলরোড পয়েন্ট স্ট্যান্ডে ৫ টি গাড়ি, শাহী ঈদগাহ পয়েন্ট স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, কদমতলী ওভারব্রিজ স্ট্যান্ডের আওতাধীন (গোলাপগঞ্জ গামী ৫ টি, বটেশ্বর গামী ৫টি গাড়ি), ভার্থখলা স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, চন্ডিপুল স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, শ্রীরামপুর স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি, জালালাবাদ গ্যাস অফিস সংলগ্ন মেন্দিবাগ স্ট্যান্ডে ৫ টি গাড়ি, সিসিক ২৮ নং ওয়ার্ডের মকন দোকান বাজার স্ট্যান্ডে ১০ টি গাড়ি ও শিববাড়ী বাজার স্ট্যান্ডে ১০ টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা থাকবে।
এর আগে গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) মহানগর এলাকায় ৩০টি বৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও লেগুনা স্ট্যান্ডের তালিকা প্রকাশ করে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই নির্ধারিত স্ট্যান্ডগুলো ছাড়া অন্য কোথাও সিএনজি বা লেগুনা পার্কিং সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। আদেশ অমান্যকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) ও সিলেট ট্রাফিক পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও এগুলো কতোটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্ধে রয়েছেন নগরবাসী।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার সিলেটভিউকে বলেন, ‘সিলেটের ৩০টি বৈধ স্ট্যান্ড ব্যতিত অন্য কোনো স্থানে কিংবা রাস্তায় গাড়ি করা যাবে না। নির্ধারিত স্ট্যান্ডে গাড়ির পরিমাণ উল্লেখ করে বোর্ড লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে। প্রথম অবস্থায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও লেগুনার মালিক ও শ্রমিকদেরকে নির্ধারিত স্ট্যান্ডে বেশি গাড়ি না রাখার জন্য সচেতন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে যদি নির্দেশনা না মানা হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট নগরীর ভেতরে বৈধ স্ট্যান্ডের বিষয়ে এরআগে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও লেগুনার মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে সভা করা হয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশের উদ্যোগে নগরীর ৩০টি বৈধ স্ট্যান্ডে নির্দেশনা বোর্ড লাগানো হয়েছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও লেগুনার মালিক ও শ্রমিকরা নির্দেশনা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply