বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখা উপজেলার পুর্ব-হাতলিয়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে ফ্রান্স প্রবাসী নাজিম উদ্দিন ৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে ভিডিও কনফারেন্সে বিয়ে করেন বড়লেখা পৌরসভার হাটবন্দ এলাকার মৃত তছির আলীর মেয়ে তানজিলা আক্তার ছামিয়াকে। ছামিয়াকে ফ্রান্স পাঠাতে নাজিম উদ্দিনের কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা নেন শ্বাশুড়ি আমিনা বেগম, খালা শ্বাশুড়ি তানিসা জান্নাত ইবা ও শ্যালক তামিম আহমদ।
স্ত্রী তানজিলা আক্তার ছামিয়াকে নিজের টাকায় ফ্রান্সে নিয়ে কিছুদিন ঘর সংসার করার পর নিজাম উদ্দিন জানতে পারেন তানজিলা আরেক প্রবাসীর স্ত্রী। ওই প্রবাসী (তারেক আহমদ) ও তার মা-ভাইয়ের প্রনোচনায় তানজিলা বৈধ স্বামী নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ফ্রান্সে মিথ্যা মামলা করে তাকে ৬ মাস জেল খাটিয়েছে। এরমধ্যে স্ত্রী তানজিলা আক্তার ছামিয়া পালিয়ে গেছে। নিঃস্ব ফ্রান্স প্রবাসীর মা রানিয়া বেগম এই মহাপ্রতারণায় ছেলের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত ও ন্যায় বিচারের দাবিতে নিজাম উদ্দিনের শ্বাশুড়ি আমিনা বেগম, শ্যালক তামিম আহমদ ও খালা শ্বাশুড়ি তানিসা জান্নাত ইবা-কে আসামি করে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে মৌলভীবাজার পিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছেন।
এব্যাপারে বুধবার রাতে নিঃস্ব ফ্রান্স প্রবাসি নিজাম উদ্দিনের বাবা খলিলুর রহমান, মা রানিয়া বেগম চাচা মাসুকুর রহমান, আছার উদ্দিন, চাচী ছাবিনা ইয়াসমিন, লুৎফা বেগম, চাচাতো বোন মাছুমা আক্তার প্রমুখ বড়লেখায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

ফ্রান্স প্রবাসী নাজিম উদ্দিনের মা রানিয়া বেগম বলেন, ২০২২ সালে তার ছেলের সাথে মামলার ১নং আসামি আমিনা বেগমের মেয়ে তানজিলা আক্তার ছামিয়ার বিয়ে হয়। কিছুদিন পর, ছেলের শাশুড়ি আমিনা বেগম, শ্যালক তামিম আহমদ এবং খালা শ্বাশুড়ি তানিসা জান্নাত ইবা প্রস্তাব দেন পুত্রবধুকে (তানজিলা) যুক্তরাজ্য পাঠাতে পারবেন। সেখান থেকে পরে ফ্রান্সে নেওয়া সহজ হবে। ভিসা প্রক্রিয়ার জন্য তারা আমাদের কাছে ২৭ লাখ টাকা চান। তাদের কথায় আমরা সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ৮,৫৬,২০০ টাকার দাগসহ ২৭ লাখ টাকা তুলে দেই। এর পাশাপাশি আমার ছেলে তার স্ত্রীকে লন্ডন থেকে ফ্রান্সে নিতে আরও আড়াই লাখ টাকা খরচ করে। তারা মোট ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি করেছে।
কিন্তু আমার ছেলে যখন তার স্ত্রীকে ফ্রান্সে নিয়ে সংসার শুরু করে তখন জানতে পারে আসামিদের প্ররোচনায় তার স্ত্রী তানজিলা আক্তার ছামিয়াকে গোপনে তারেক আহমদ নামে এক প্রবাসীর সাথে দ্বিতীয় বিয়ে দিয়েছেন। এজন্য ফ্রান্সে যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে তানজিলা আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে তাকে ৬ মাস জেল খাটায় এবং পালিয়ে যায়। এটি কেবল আর্থিক প্রতারণা নয়, পুরো পরিবারকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা। আমার ছেলে ও আমরা এখন নিঃস্ব। এরপরও সবকিছু মেনে নিয়ে বিবাদিদের কাছে আমাদের পাওনা ২৯,৫০,০০০/- টাকা ফেরত চাই। দীর্ঘদিন ধরে তারা টালবাহানা করছে। ২৫ আগষ্ট হাটবন্দস্থ বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে, তারা হুমকি ধামকি দিয়ে সমস্ত লেনদেন অস্বীকার করে তাড়িয়ে দেয়। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলের প্রায় ৩০ লাখ টাকা অত্মসাৎ করেছে। অবশেষে ৩ সেপ্টেম্বর বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
এব্যাপারে আমিনা বেগম, তামিম আহমদ ও তানিসা জান্নাত বলেন, নাজিম উদ্দিন তার স্ত্রীকে লন্ডন পাঠানোর খরচ বাবত টাকা দিয়েছে। সে লন্ডন থেকে তার স্ত্রীকে ফ্রান্সে নিয়েও গেছে। এরপরের ঘটনার দায় তাদের নয়। যেহেতেু আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আদালতই ফয়সালা দিবেন।
রানিয়া বেগমের মামলার কৌশলী অ্যডভোকেট ইয়াছিন আলী জানান, আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে পিবিআই মৌলভীবাজারকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply