নিজস্ব প্রতিবেদক ::
আলোচিত গ্রাম পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ইউপি সদস্যের নাতিসহ আরও দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব।
শনিবার দুপুরে র্যাব-৯ সিলেট,সিপিসি-৩ সুনামগঞ্জ কোম্পানী দফতরে কোম্পানী অধিনায়ক লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ এমন তথ্য তুলে ধরেন সংবাদ সম্মেলনে ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, উপজেলার হলহলিয়া চরগাঁও গ্রামের মলাই মিয়ার ছেলে আব্দুল হেকিম (৩০) বোরোখারা গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে এনামুল হক (২৫) ওরফে শাবনুর।
এরপুর্বে শুক্রবার সন্ধায় উপজেলার হলহলিয়া চরগাঁও এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব।
অপর আসামি উপজেলার হলহলিয়া চরগাঁও গ্রামের আকবর আলীর ছেলে সোহেল পলাতক রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত দুই আসামির মধ্যে হাফিজ উদ্দিনের ছেলে এনামুল হক ওরফে শাবনুর উপজেলার উওর বড়দল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বোরোখাড়া গ্রামের বাসিন্দা শবদর আলীর নাতি।
ক্ললেস হত্যাকান্ড সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কোম্পানী অধিনায়ক লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ বলেন, চুরিতে বাধা দেওয়ায় ও চোরদের ঝাপটে ধরার চেষ্টা করলে মূলত গ্রাম পুলিশ আব্দুর রউফ গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে সাহরির কিছু সময় পুর্বে ছুরিকাঘাতে বোরোখাড়া নিজ বাড়ির অদুরেই নির্মমভাবে হত্যকান্ডের শিকার হন।
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান আসামি আব্দুল হেকিম, ইউপি সদস্যের নাতি শাবনুর, তাদের সহযোগি সোহেলসহ তাদের সহযোগিরা বোরোখাড়া গ্রাম সংলগ্ন হাওরে বসে প্রথম মাদক সেবন করে। এরপর রাতের খাবার খেয়ে ইউপি সদস্য শবদর আলীর মাড়াই খলা হতে ধান চুরি করে। এক পর্যায়ে সোহেল তার একটি সোলারের ব্যাটারী প্রয়োজন জানালে সহযোগিদের নিয়ে বোরোখাড়া গ্রামের বাসিন্দা গ্রাম পুলিশ আব্দুর রউফের নির্মাণাধীন দরজা বিহিন বাড়ি হতে ব্যাটারি চুুরি করে। সোহেল ব্যাটারী নিলেও সহযোগীদের ৭ থেকে ৮’শ টাকা পরিশোধের কথা ছিল।
ব্যাটারী চুরি করে নিয়ে যাবার পথে গ্রাম পুলিশ আব্দুর রউফ সজাগ হয়ে চুরিতে বাঁধা ও চোরদের ঝাপটে ধরার চেষ্টা করেন। প্রথম ধাপে সোহেল তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে ঘাঁ দিলে তার লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর আব্দুল হেকিম বুকেরপাশের্^ ছুরিকাঘাত করলে আব্দুর রউফ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তাৎক্ষণিক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
শনিবার বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের দুই আসামিকে তাহিরপুর থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব। নিহতের বোন জাহানারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার সন্ধায় থানায় মামলা দায়ের করলে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের সামছু মিয়ার ছেলে ইয়াসিনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
শনিবার তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, শুক্রবার ইয়াসিন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলি আদালত সুনামগঞ্জ (তাহিরপুর জোন) হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি প্রদান করেছে।
গ্রাম পুলিশ পরিবারের পাশে নেই প্রশাসন: শনিবার বিকেলে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ’র নিকট গ্রাম পুলিশ রউফ হত্যকান্ডের পর উপজেলা প্রশাসন তার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছিলো কি না? অভিভাবকহীন চার নাবালক শিশু সন্তানের পরিবারটির পাশে দাড়াতে কোন রকম সরকারি সহায়তা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বললেন, না যাইনি, নিউজে দেখলাম ছুরিকাঘাতে মারা গেছে।
চার শিশু সন্তানের জনক আব্দুর রউফ উপজেলার উওর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদে যতসামান্য বেতনে চাকরি করতেন। গ্রাম পুলিশ হত্যাকান্ডের এমন বর্বর ঘটনাটি বিভিণœ জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় দৈনিকের অনলাইন ও প্রিন্ট ভার্সনে পরপর দুদিন প্রকাশিত হলে দেশ বিদেশে থাকা অসংখ্য নেটিজেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব প্রতিবাদ জানিয়ে ঘাতকদের দৃষ্টান্তমুলক সর্ব্বোচ্য শাস্তির দাবির পাশাপাশী সরকার, প্রশাসন,বিক্তবান দানশীল ব্যাক্তিবর্গকে প্রয়াত রউফের পরিবারকে পাশে দাড়িয়ে সাহায্য সহায়তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।#
Leave a Reply