কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে ননাশের (স্বামীর বড় বোনের) বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে গত ১৩ জুন ভোররাতে দীপা চৌধুরী (২৮) নামের এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যাকারীর পরিবার সদস্যরা শুরু থেকে বলে আসছিলেন এ ঘটনা আত্মহত্যা নয়, এটি একটি পরিকলিপত হত্যা। নিহত দীপা চৌধুরীর বোন মৌমিতা চৌধুরী বাদী হয়ে এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা উল্লেখ করে গত ১৫ জুন মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্যাট আদালতে গৃহবধুর স্বামী সাইফুল ইসলামসহ ৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে গত বুধবার রাতে পুলিশ ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামী শেফী বেগম (৪০), মিজান মিয়া (২০) ও বাদশা মিয়া (৩৫) কে গ্রেফতার করে মৌলভীবাজার আদালতে প্রেরণ করেন।
শমশেরনগর পুলিশ ফাড়ির উপ-পরিদর্শক শাহ আলম গৃহবধু দীপা চৌধুরী হত্যা মামলায় তিনজন আসামী গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃত তিনজনকে বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার আদালতে প্রেরন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ভোর রাতে শমশেরনগর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মঈনুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে। শমশেরনগর ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
জানা যায়, মুন্সীবাজার ইউনিয়নের বিক্রমকলস গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী দীপা চৌধুরী। সে যুক্তরাজ্যে বসবাস করতো। সেখানে তার প্রথম স্বামী ও প্রথম পক্ষের এক ছেলেও রয়েছে। প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে সাইফুল ইসলামের সাথে আদালতের মাধ্যমে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছিল। এ বিয়ে নিয়ে সাইফুল ইসলামের পারিবারিকি দ্বন্দ শুরু হলে সে স্ত্রী দীপা চৌধুরীকে গোবিন্দপুর গ্রামের স্বামীর বড় বোন শেফী বেগমের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন দীপা চৌধুরী। ১৩ জুন ভোর রাতের কোন এক সময় গৃহবধূ দীপা চৌধুরী রান্না ঘরের চালার সাথে পরনের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে রোববার সকালে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শাহ আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূ দীপা চৌধুরীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি মৌলভীবাজার সদর পাসপাতালে পাঠায় এবং ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধুর মোবাইল ফোন, ব্যাগ ভর্তি কাপড় জব্দ করা হয়।
ঘটনার পর পরই সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে গৃহবধুর বোন মৌমিতা জানায়, সাইফুল প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে তার বোন প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে সাইফুলের সাথে বিয়ে হয়। সে মনে করে এটি আত্মহত্যা নয় এটি পরিকল্পিত হত্যা। এ ঘটনায় তারা মামলা করবে বলেও জানিয়েছিল।
Leave a Reply