কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রটি ৫০ বছর পর ২০১৮ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। কমপ্লেক্সের নতুন ভবন নির্মানের তিন বছরের মাথায় ভবনটির ২য় ও ৩য় তলার প্রায় শতাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন ডাক্তার, নার্সসহ আগত রোগীরা।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ বছর পর ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। ৮ কোটি ৩২ লক্ষ ৬ হাজার ৭০১ টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) কর্তৃক বাস্তবায়িত ৩১ থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মিত ৩ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয় ২০১৫ সালের ২ মে। ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি। প্রায় দেড় বছরে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও সংস্কার কাজটি বাস্তবায়ন করে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্টান মেসার্স পোদ্দার এন্টারপ্রাইজ এন্ড এসসি। কাজ সমাপ্তের পর ২০১৮ সালের ১০ মার্চ ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি।
এছাড়া পুরাতণ ভবনে ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোদ্দার এন্টারপ্রাইজ এন্ড এসসি।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবন উদ্বোধনের তিন বছরের মাথায় ভবনের ২য় ও ৩য় তলার পিলার, ভিমসহ ওয়ালের বিভিন্ন স্থানে প্রায় শতাধিক ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ডাক্তার, নার্সসহ আগত রোগীরা আতঙ্কে মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনে যে সংস্কার কাজ করা হয়েছিলো তাও প্রায় খসে পড়ছে। কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতার কক্ষ, পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কক্ষ, জরুরী বিভাগ ও রোগীদের থাকার ওয়ার্ডের ছাদের প্লাস্টার খসে পড়েছে। সিলেট বিভাগ উচ্চ ভূমিকম্প প্রবন এলাকা হওয়ায় যেকোন সময় ভবন ধসে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা সচেতন মহলের।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা: মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া জানান, যে সময় এই ভবনে কাজ হয়েছিল, সে সময় তিনি এখানে কর্মরত ছিলেন না। ভবনের ফাটলের বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, নতুন ভবনের ফাটলের বিষয়টি অবগত হয়েছি। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে ফাটল ও ঝুকিপূর্ণ ওয়াল পরিদর্শন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে নতুন ভবনের ফাটলের বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন জানিয়ে বলেন, সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভবণ উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সিলেট স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী) শফিকুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নতুন ভবনের কাজটি যখন শুরু হয় তখন তিনি ছিলেন না। উদ্বোধনের ২মাস পূর্বে তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ভিম ও কলামে ফাটলের কথা নয়। তারপরেও মৌলভীবাজার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করলে ফাটলের প্রকৃত কারণ জানা যাবে।#
Leave a Reply