এইবেলা, কুড়িগ্রাম ::
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে এক মাসের প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পানিতে সৃষ্ট প্রবল বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে পড়েছে কোন কোন এলাকা।
উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোড়ক মন্ডল, ঝামাকুটি, গোড়ক মন্ডল ঘাঘু এলাকার প্রায় ৪শ’ ৫০ পরিবার; শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের পেচাই, জ্যোতিন্দ্র নারায়ন, রোশন শিমুলবাড়ী, সোনাইকাজী, ও তালুক শিমুলবাড়ী একাংশের প্রায় ১ হাজার ২শ’ পরিবার; ফুলবাড়ী ইউনিয়নের কবির মামুদ, প্রাণকৃষ্ণ, ও চন্দ্রখানার প্রায় ৫শ’ পরিবার; বড়ভিটা ইউনিয়নের মেখলি, পশ্চিম ধনীরাম, পুর্ব ধনীরাম, ঘোগারকুটি, চর বড়ভিটা, চর বড়লই গ্রামের প্রায় ২ হাজার ২শ’ পরিবার; ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের খোচাবাড়ী, রাঙ্গামাটি ও ভাঙ্গামোড় গ্রামের প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫ টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা
পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পানিতে ভেসে গেছে অনেক পুকুরের মাছ। তলিয়ে যাওয়ায় মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে আউশ ধান, কলাবাগান, পাটক্ষেত, সবজি ক্ষেত ও বীজতলা। অনেক স্থানে রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এলাকাগুলো।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী থাকায় চরম বিপাকে পড়েছে মানুষগুলো। আশেপাশে কোন শুকনো জায়গা না থাকায় গবাদী পশু নিয়ে স্থানীয়দের পড়তে হচ্ছে আরো বিপদে। অনেকে গবাদী পশুসহ এসে আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। কেউবা আশ্রয়কেন্দ্রে অথবা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
কেউ কেউ ঝুকি নিয়ে কলাগাছের ভেলায় অথবা উঁচু করে মাচা পেতে রয়েছে নিজ বাড়ীতে। অনেক পরিবারের রান্না করার সুযোগ না থাকায় তৈরি খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। আত্মীয় সজনদের দিয়ে যাওয়া খাবার ও আশপাশের বাজার থেকে কিনে আনা চিড়া, মুড়ি, কলা আর পাউরুটি খেয়ে দিনাতিপাত করছে পানিবন্দী মানুষগুলো।
শিশু ও বয়ষ্কদের নিয়ে তাদের পরতে হচ্ছে চরম বিপাকে। এই দুর্যোগে স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদগুলো থেকে যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত সামান্য।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এজাহার আলী জানান, আমার ইউনিয়নে বন্যা কবলিত হয়েছে প্রায় প্রায় ১ হাজার ২শ’ পরিবার। কিন্তু এখন পর্যন্ত ২শ’ পরিবারের জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ১০ কেজি করে চালের বরাদ্দ পেয়েছি। বন্যা কবলিতদের তুলনায় এ ত্রাণ অত্যন্ত অপ্রতুল।
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু জানান, এ ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত। বানভাসিদের অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ও ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩শ পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে চাল ও পঁচিশ টাকা করে বরাদ্দ পেয়েছি।
বড়ভিটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খয়বর আলী মিয়া জানান, এ ইউনিয়নে বন্যার কবলে পড়েছে প্রায় ২ হাজার ২শ’ পরিবার। কিন্তু ত্রাণের বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ৩ শ’ পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে চাল ও পঁচিশ টাকা। উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুবুর রশীদ জানান, ৪৫ হেক্টর আউশ ধান, ৮৮ হেক্টর সবজি ক্ষেত, ৮৭ হেক্টর বীজতলা, ৩শ’ ৮০ হেক্টর পাটক্ষেত ও ৫০ হেক্টর কলাবাগান পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা যাবে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার রায়হান উদ্দিন সরদার বলেন, ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি ও খোচাবাড়ী এলাকার ২৪টি পুকুর পানিতে ভেসে গেছে। এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া সরেজমিনে ঘুরে বড়ভিটা ও শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের অনেক পুকুর পানিতে তলিয়ে থাকতে দেখা গেছে। যেগুলো নেটজাল দিয়ে ঘিরে কোন রকমে মাছ আটকানো হয়েছে।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply