কুড়িগ্রামে অবৈধভাবে ফ্লাওয়ার মিল নির্মাণে বাঁধা দিয়ে চরম বিপাকে নিরীহ কৃষক – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রাজস্ব তহবিলের অর্থ আত্মসাত- বড়লেখা উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক বরখাস্ত, বিভাগীয় মামলা বড়লেখায় নবপল্লব প্রকল্পের ‘প্রকল্প অবহিতকরণ’ সভা একদল অপকর্ম করে পালিয়েছে, আরেকদল সেই অপকর্মের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে : শফিকুর রহমান আধ্যাত্মিক, মানবিক দর্শন ও লোক ক‌বি সাধক হাসন রাজার মৃত্যুবার্ষিকী আজ আজ বড়লেখা মুক্ত দিবস : মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আলোচনা সভা প্রয়াত ডা. পবন চন্দ্র দেবনাথের ছোট ভাই ব্রজেন্দ্র দেবনাথ আর নেই কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান

কুড়িগ্রামে অবৈধভাবে ফ্লাওয়ার মিল নির্মাণে বাঁধা দিয়ে চরম বিপাকে নিরীহ কৃষক

  • সোমবার, ১৬ মে, ২০২২

Manual3 Ad Code

মো: বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম সদর প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রাম পৌর এলাকায় অবৈধভাবে আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা ফ্লাওয়ার মিল নির্মাণে বাঁধা দিয়ে চরম বিপাকে নিরীহ ব্যক্তি কৃষক মোহাম্মদ আলী। কোটিপতি মিল মালিকের হুমকি-ধামকিতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কোর্টের আশ্রয় প্রার্থনাই কাল হলো কৃষক মোহাম্মদ আলীর। নিরাপত্তার পরিবর্তে উল্টো তার ভাগ্যে জুটেছে প্রভাবশালীর দেয়া চাঁদাবাজি, প্রতারণা সহ ৬টি মামলার খড়গ। স্ত্রী-সন্তান সহ পরিবারের সব সদস্য জেল খেটেছেন একাধিকবার। ন্যায়বিচারের আশায় পুলিশের আইজিপিসহ বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রকার প্রতিকার না পেয়ে এখন বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। দু’চোখ জুড়ে এখন অশ্রুসার।

Manual7 Ad Code

অসুন্ধানে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার ভেলাকোপা গ্রামের মৃত বছির উদ্দিনের পুত্র মোহাম্মদ আলী (৬০)। পেশায় তিনি একজন আলু চাষী। ৬ পুত্র সন্তানের জনক তিনি। কৃষি কাজের মধ্যদিয়ে সুখেই দিন যাচ্ছিল মোহাম্মদ আলীর পরিবারের।

Manual5 Ad Code

কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তার বাড়ির সীমানা ঘেঁষা জমির পাশেই অপর ব্যক্তি জমি ক্রয় করে কুড়িগ্রাম বাজারের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মোঃ সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলা (৫০)। ওই ব্যবসায়ী জমি ক্রয় করে আবাসিক এলাকায় অবৈধ উপায়ে শুরু করেন সুফিয়া অটো ফ্লাওয়ার মিল নামীয় প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ। যথারীতি মিলের নির্মাণ কাজ শেষের দিকে আসলে উক্ত মিলের প্রবেশদ্বারে থাকা অসহায় কৃষক মোহাম্মদ আলীর ৩ শতক জমি ক্রয়ের প্রস্তাব দেয় মিল মালিক সাইফুদ্দিন এ্যাপোলা। মিল মালিকের ১৩ লাখ টাকা প্রস্তাবে (জমির দাম বাবদ) রাজি না হওয়ায় বাদসাধে ওই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। জোরপূর্বক জমি ক্রয়ে শুরু হয় হুমকি-ধামকি।

Manual2 Ad Code

এরই প্রেক্ষিত গত ২০২০ সালের ২২ আগস্ট আদালতে জীবনের নিরাপত্তা এবং উক্ত বসতবাড়ি যাতে অবৈধভাবে দখল নিতে না পারে এজন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন মোহাম্মদ আলী। এতে আগুনে ঘি ঢালার পরিস্থিতি তৈরি হয়। ক্ষিপ্ত হয়ে মিল মালিক সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলা উল্টো বাদী হয়ে ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম সদর থানা একটি পরিকল্পিত এবং সাজানো লিখিত সাধারণ ডায়েরী করেন। যার নং-৪৮৩। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২০ সালের ১০ আগস্ট সন্ত্রাসী মোহাম্মদ আলী ও তার সন্তানরা জোটবদ্ধ হয়ে মিলের প্রবেশদ্বারে ৩ শতক জমি টিনের বেড়া দিয়ে দখলের পায়ঁতারা এবং তাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। ভিত্তিহীন জিডির তদন্তভার দেয়া হয় এসআই (নিরস্ত্র) আব্দুল জলিলকে। তিনি তদন্তে বাদী সাইফুদ্দিন এ্যাপোলের লিখিত অভিযোগের সত্যতা হুবহু সত্য বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে সেটি মামলায় নথিভুক্ত করা হয়। যার নং-এন.জিআর-১১/২০২০।

থানার মামলার নথিভুক্তির রেশ কাটতে না কাটতে আবারো ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নির্মাণাধীন মিলের ট্রাক ভর্তি রড-সিমেন্ট মোহাম্মাদ আলী ও তার পুত্ররা ছিনতাই করে এবং ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপারকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে কুড়িগ্রাম কোর্টে আবারো সাজানো একটি মামলা দায়ের করেন মিল মালিক সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলা। যার নং-সিআর-২৩৫/২০(কুড়ি)।

আবারো ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি কৃষক মোহাম্মদ আলী ও তার ৪ পুত্র মিলের প্রধান ফটকের টিনের বেড়া ভাংচুরকালে মিল মালিক সাইফুদ্দিন এ্যাপোলা বাঁধা প্রদান করতে গেলে হত্যার হুমকি দেন এবং ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে মর্মে আবারো কোর্টে একটি হয়রানিমুলক মামলা দায়ের করেন। যার নং-সি.আর-৬৫/২১(একুশ)। যার তদন্ত কর্মকর্তা কুড়িগ্রাম সদর থানার এসআই মোঃ জুয়েল (নিরস্ত্র)। তিনি বাদীর অভিযোগ সত্য বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কৃষক মোহাম্মদ আলী ও তার পুত্রদের বিরুদ্ধে আবারো মিলে অনধিকার প্রবেশ, ক্ষতিসাধন, হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর, চুরি ও বলপ্রয়োগের অজুহাতে কুড়িগ্রাম সদর থানায় আবারো একটি মামলা দায়ের করেন মিল মালিক সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলা ।( যার নং-২১, তাং-২৪.০৮.২১)। উক্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মোঃ রহমত উল্লাহ রনী।

এছাড়া ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর সংঘবদ্ধ অনধিকার প্রবেশ এবং স্থাপনা নির্মাণ সামগ্রী চুরির অভিযোগে মিল মালিক সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলার ভাই শফিকু ইসলাম সাজু বাদী হয়ে কৃষক মোহাম্মদ আলী ও পুত্রদের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করেন। (যার নং-৩০, তাং-২৪.১২.২০২১)।

একের পর এক মামলার হয়রানি, নথি গোপন করে ওয়ারেন্ট জারি এবং বহিরাগত দলীয় ক্যাডার দ্বারা হুমকি দিয়ে ২০২১সালের ২৫ ডিসেম্বর শহরের চিহ্নিত একাধিক মামলার আসামী এবং চিহ্নিত দলীয় ক্যাডারদের ১০০/১৫০জনের স্বশস্ত্র একটি দলের উপস্থিতিতে রাত পর্যন্ত চলে তাণ্ডবলীলা। অসহায় মোহাম্মদ আলীর ঘরের আসবাবপত্র, ধান, চাল, স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে যায় মিল মালিক সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলার ভাড়াটে গুন্ডাবাহিনী। মোহাম্মদ আলী কুড়িগ্রাম থানায় মামলা করতে গেলে পূর্ব পরিকল্পিত সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলা নির্দেশনায় থানা কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। দায়িত্বরত অফিসার ইনচার্জ খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার ঘটনাটি সালিশ বৈঠকে মিমাংসার পরামর্শ দেন এবং উভয়পক্ষকে জমির বৈধ কাগজপত্র ও প্রমাণাদি নিয়ে থানায় সালিশে বৈঠকে উপস্থিত হতে বলেন। পরবর্তীতে থানা চত্ত্বরে পুলিশের উপস্থিতিতে দু’দফায় কৃষক মোহাম্মদ আলী তার জমির বৈধ কাগজপত্র দেখালেও সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলা সেই বৈধ কাগজপত্রকে তোয়াক্কা না করে কৌশলে বৈঠক মুলতবি ঘোষণা দেন। পরে কয়েক দফায় সালিশে উপস্থিত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আর মোহাম্মদ আলীকে পাত্তা দেননি।

সবকিছু হারিয়ে মোহাম্মদ আলীর পরিবার এখন নিঃস্ব। তবু থেমে নেই মামলার হয়রানি। পাবনা জেলায় সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলা তার নিকটাত্মীয় মনিরুল ইসলামকে বাদী সাজিয়ে মোহাম্মদ আলীকে বিবাদী করে ৭ লাখ টাকা দাবি করে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। যার নং-সি.আর-১৭৬/২০২২।

এ ব্যাপারে কথা হলে কৃষক মোহাম্মদ আলী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, অবৈধভাবে বলপ্রয়োগ করে আমার বসতভিটা দখল ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দিনের বেলা পিকআপযোগে লুটপাট করলেও থানা কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ। সেই জমি বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘিরে নিয়েছে এ্যাপোলা গং। আমি ডিসি অফিস, থানায় অভিযোগ দিলেও মামলা নিচ্ছে না পুলিশ। আমি আমার জমিটুকু ফিরে চাই। আমি ন্যায্য বিচার চাই।

মিল মালিক সাইফুদ্দিন ইসলাম এ্যাপোলা জানান, মোহাম্মদ আলীর কোন প্রকার জমি আমার মিলের সামনে নেই। তার জমি পাশে। কিন্তু সে আমার মিলের সম্মুখদ্বার দাবি করে আসছে। আমি ভবিষ্যৎ হয়রানি থেকে বাঁচতে একাধিক মামলা করেছি।

কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানান, মোহাম্মদ আলীর দাবির প্রেক্ষিতে থানায় সালিশ বৈঠকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। মোহাম্মদ আলীর মামলা না নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন উনি এখন আসুক এখনই মামলা নেয়া হবে।

কুড়িগ্রাম পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া আবাসিক এলাকায় কিভাবে একটি ফ্লাওয়ার মিল স্থাপন হয় এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কেন প্রতিকার পাওয়া যায় এ প্রশ্ন এলাকাবাসীর।#

Manual7 Ad Code

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!