কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ‘‘জাঁত’ কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ‘‘জাঁত’ – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০২:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নাগেশ্বরীতে বিএনপির আহবায়কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ নিটার ক্যাম্পাসে সমকামীতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সরব অবস্থান  দিনে ‘অচল’ ড্রেজার রাতে সচল আত্রাইয়ে চুরি ও মাদক মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ৫ সংবাদ সম্মেলনে ওসমানীনগর বিএনপি : একটি মহলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ছাতকে ‘জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ’ ও আলোচনা সভা কুলাউড়ায় ফ্যাসিস্টযুক্ত বিএনপির কমিটি বাতিল কমলগঞ্জে শিক্ষিক খুনের ২ মাস : প্রধান আসামী অধরা : মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে ভিডিও বার্তায় বড়লেখায় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যানকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম : হামলাকারি গ্রেফতার জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ নিলেন কুলাউড়াবাসী

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ‘‘জাঁত’

  • সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি ::  উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ কৃষি পেশার ওপর নির্ভরশীল। এক সময় ফসলে পানি সেচের আদি যন্ত্র ছিল জাঁত। যা কালের বিবর্তনে বর্তমান প্রজন্মের কাছে ‘জাত’ শব্দটি শুধু অতীতের গল্প হয়ে রয়েছে।

আদিকালে পানি সেচের অন্যতম মাধ্যম ‘জাঁত’ এর অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন নাম থাকলেও উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা একে জাঁত বলেই চেনেন। এক সময় এই জাঁতের ব্যবহার ছিল গ্রাম-বাংলার প্রায় প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে। এখন জাঁত চলে গেছে জাদুঘরে। কৃষক হয়ে পড়েছে যন্ত্রনির্ভর।

আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় মাঝখান দিয়ে একে বেকে বয়ে চলেছে নদী-নালা ও ডোবা থেকে জাঁতের মাধ্যমে পানি সেচে কৃষক জমিতে ফসল ফলাতো।

উপজেলার বিভিন্ন প্রবীণ লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগেকার দিনে ফসলি জমিতে পানি সেচের জন্য টিন বা বাঁশের তৈরি সেঁউতি ও কাঠের দোন ব্যবহার করা হতো। নদী, খালবিল বা জলাশয় থেকে টিন বা বাঁশের চাটাই দিয়ে তৈরি সেঁউতি দিয়ে পানি সরবরাহ করা হতো। আর উঁচু-নিচু জমিতে পানি সেচ দিতে ‘জাঁত’ ছিল অতুলনীয়। গ্রাম-বাংলার কৃষকের আদি চিন্তা-চেতনার ফল ছিল এ কাঠের জাঁত আবিষ্কার।

আম অথবা কাঁঠালজাতীয় গাছের মাঝের অংশের কাঠ কেটে নিয়ে তার মাঝখানে খোদাই করে ড্রেন তৈরি করে পানি সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হতো। কোনো কোনো স্থানে নারিকেল, তাল, জিগা, সুপারি ও পাইন গাছ দিয়েও এ জাঁত তৈরি করা হতো। তবে বর্তমানে কাঠের তক্তা দিয়েও এ দোন তৈরি করা হয়। এতে পানি সেচ দিতে শ্রমিক ছাড়া অন্য কোনো খরচ হয় না।

উপজেলার তারাটিয়া ছোটডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুস ছামাদ বলেন, ক্রস আকারে দুটি বাঁশের শক্ত খুঁটি মাটিতে পুঁতে তার সঙ্গে লম্বা অন্য একটি বাঁশ বেঁধে দেওয়া হয়। এক অংশে জাঁতের মাথা অন্য অংশে মাটির ভরা (ওজন) তুলে দিয়ে পানিতে চুবিয়ে তুললে একসঙ্গে অনেক পানি উঠে আসে। এভাবে অনবরত পানি সেচ দিলে দ্রুত সেচের কাজ হয়ে যায়। আধুনিক শ্যালো, ডিপ, এলএলপি প্রভৃতি সেচযন্ত্র আসায় জাঁতের ব্যবহার এখন আর নেই।

উপজেলা বজ্রপুর গ্রামের কৃষক মজিদ মন্ডল বলেন, নদী-নালা ও বিলে একসময় সারা বছর পানি থাকত। এসব নদী-নালা ও বিল থেকে জাঁতের সাহায্যে ফসলের ক্ষেতে পানি দেওয়া হতো। এখন নদী হয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত। ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক যন্ত্রপাতির।

এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন জানান, বাংলার কৃষির আদি ঐতিহ্য অনেক কৃষক এখনও শখের বসে কিছু যন্ত্র ধরে রেখেছেন। আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে এসব আদি যন্ত্র একটি শিক্ষনীয় বিষয়। শখের বসে এসব আদি যন্ত্রের ব্যবহার কৃষিতে কৃষকের আগ্রহ ও ভালবাসার বহি:প্রকাশ। শুধু এসব আদি যন্ত্রপাতি নয় কৃষক এখন বিষমুক্ত বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করতে বিভিন্ন দেশীয় প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। যা মানব স্বাস্থ্য, প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য অপরিহার্য। #

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews