অভিযোগ করায় হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি
আব্দুর রব, বড়লেখা :
বড়লেখার এক ঠিকাদার বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন শ্রীমঙ্গল চা গবেষণা ইন্সটিটিউটের কার্যাদেশ অনুযায়ী ২৭ লক্ষাধিক টাকার আবাসিক বাসাবাড়ি সমূহের মেরামত ও সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেন নির্ধারিত সময়ের আগেই। ১ লাখ টাকা দেয়ার পরও চাহিত আরো ৫ লাখ টাকা ঘুষ না দেয়ায় ওই ঠিকাদারের কাজের বিল থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা কেটে ফেললেন কার্যাদেশ বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী। অনৈতিকভাবে বিল কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ঠিকাদার বুধবার বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, চা বোর্ড চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র মহা-পরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্তরা হলেন- শ্রীমঙ্গল চা গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিটিআরআই) সহকারী প্রকৌশলী নয়ন আহমদ, মূখ্য বিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেন, তথ্য ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানী সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ফ্যাক্টরী করণিক শফিক আহমদ।
এদিকে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করায় বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গল বিটিআরআই’র অভিযুক্ত মূখ্য বিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেন ভুক্তভোগী ঠিকাদার জিয়াউর রহমান জুয়েল ও অভিযোগের স্বাক্ষীদের হাত-পা গুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে ঠিকাদার জুয়েল অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল চা গবেষণা ইন্সটিটিউটের আবাসিক বাসাবাড়ি মেরামত ও সংস্কার কাজের দরপত্রের সর্বনি¤œ দরপত্র দাতা হিসেবে ২৬ জানুয়ারী প্রায় ২৭ লাখ টাকার কাজের চুক্তি স্বাক্ষর করেন বড়লেখার ঠিকাদার জিয়াউর রহমান জুয়েল। গত ২৮ জানুয়ারী তিনি কার্যাদেশ পান। কাজের গুনগত মান নিশ্চিত করে নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি কাজ সম্পন্ন করেন। কাজ চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে বিটিআরআই’র কাজ সংশ্লিষ্ট ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। কাজের বিল প্রদানের জন্য তারা ৬ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এক পর্যায়ে সহকারী প্রকৌশলী নয়ন আহমদ, মূখ্য বিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেন, তথ্য ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানী সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ফ্যাক্টরী করণিক শফিক আহমদ জোরপূর্বক ১ লাখ টাকা আদায় করেন। আরো ৫ লাখ টাকা না দিলে পুরো বিল দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। ২০ জুন বিল প্রদানের কথা বলে অফিসে নিয়ে ভয়-ভীতি ও মানসিক হয়রানি করে ম্যাজারমেন্ট বুকে স¦াক্ষর আদায়ের চেষ্টা করেন সহকারী প্রকৌশলী নয়ন। প্রাপ্য বিল ২৬ লাখ ৭৮ হাজার ৭৮১ টাকার পরিবর্তে ১৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৫ টাকার বিল দেয়া হয়। বিলের আকাশ-পাতাল এ তারতম্য এবং মনগড়া ম্যাজারমেন্ট দেখে তিনি বিল গ্রহণে অসম্মতি জানান। তখন নয়নসহ ৪ জন এ টাকা না নিলে পরে একটি টাকাও দেয়া হবে না বলে ভয় দেখান। অবশেষে ব্যাংক ঋণের কথা চিন্তা করে বাধ্য হয়ে তিনি বিল গ্রহণ করেন।
ঠিকাদার জিয়াউর রহমান জুয়েল জানান, শতভাগ মানসম্পন্ন কাজ করার পরও জোরপূর্বক ওরা ১ লাখ টাকা আদায় করেছে। তাদের চাহিত আরো ৫ লাখ টাকা ঘুষ না দেয়ায় অনৈতিকভাবে কাজের ইচ্ছাকৃত ভুল পরিমাপ ধরে বিল তৈরি করে ওরা সংস্কার কাজের বিলের ১০ লক্ষাধিক টাকা কর্তন করেছে। নিরুপায় হয়ে তিনি এসব দুর্নীতিবাজ, অসৎ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, চা বোর্ড চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার মহা-পরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এদিকে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করায় বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত মূখ্য বিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেন ভুক্তভোগী ঠিকাদার জিয়াউর রহমান জুয়েল ও তার অভিযোগের স্বাক্ষীদের হাত-পা গুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব ব্যাপারে জানতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিটিআরআই শ্রীমঙ্গলের সহকারী প্রকৌশলী নয়ন আহমদ (০১৫৫১৮১১০৮১), মূখ্য বিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেন (০১৭৪৯৫১৫৩০৫) ও সহকারী ফ্যাক্টরী করণিক শফিকের (০১৯১৮৫৫৫৭৫৫) সাথে যোগাযোগ করা হলে ব্যস্ততা দেখিয়ে তারা পরে কথা বলতে বলেন। এরপর একাধিকবার যোগাযোগ করলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply