মোঃ বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
রাষ্ট্রের নীরবতা আর বিচারহীনতার দেয়ালে আঘাত করে কুড়িগ্রামে এক বিয়ের গেটেই উচ্চারিত হলো প্রশ্ন—হাদী হত্যার বিচার কবে? আনন্দের বিয়ের আসরকে সাক্ষী রেখে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াল বর পক্ষ। উৎসবের মুহূর্তে এই প্রতিবাদ যেন বিচারহীনতার মুখে ছুড়ে দেওয়া এক নির্ভীক চ্যালেঞ্জ।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) গ্লোবাল টেলিভিশনের রিপোর্টার জাকির হোসেন ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাটেশ্বরী এলাকার মেয়ে নুসরাত জাহান নীলা’র বিয়েতে দেখা যায় ব্যতিক্রমী দৃশ্য। বিয়ের গেইটে নেই চেনা চেঁচামেচি কিংবা দরকষাকষি। বরযাত্রীদের হাতে উঁচু করে ধরা প্ল্যাকার্ডে স্পষ্ট ঘোষণা—‘হাদী হত্যার বিচার চাই’, ‘জাস্টিস ফর হাদী’। এই নীরব দৃঢ়তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রশংসার জোয়ার ওঠে।
বরযাত্রী কল্লোল রায় বলেন, “হাদী কোনো ব্যক্তি মাত্র নয়—তিনি বাংলাদেশের বিবেক। তার হত্যার বিচার না হলে এ দেশে সত্য বলার সাহস ক্রমেই হত্যা করা হবে। আমরা এই বার্তাই দিতে চেয়েছি—চুপ থাকা মানে অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়া।”
কৃষক নেতা জুয়েল বলেন, “বিয়ের মতো আনন্দঘন মুহূর্তকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সাহসী প্রতিবাদ। এটা কেবল ইউনিক নয়, এটা প্রয়োজনীয়।”
বর জাকির হোসেন বলেন, “চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থান মানুষকে যে চেতনা দিয়েছে, হাদী ছিলেন সেই চেতনার অগ্রসৈনিক। তিনি বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর ছিলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন বলেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। বিচারকাজে অগ্রগতি নেই—এই বিচারহীনতার বিরুদ্ধে আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনে প্রতিবাদ জানানোই ছিল নৈতিক দায়িত্ব। ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে হাদী হত্যার বিচার চাই।”
বিয়ের গেট থেকে ওঠা এই প্রতিবাদ স্পষ্ট করে দিয়েছে—রাষ্ট্র যদি ন্যায়বিচার দিতে ব্যর্থ হয়, তবে জনগণ তাদের প্রতিটি আনন্দ, প্রতিটি মুহূর্ত থেকেই প্রশ্ন তুলবে। হাদী হত্যার বিচার শুধু দাবি নয়, এটি এখন জাতীয় দায়।#
since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in
Leave a Reply