এইবেলা কমলগঞ্জ ::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক বর্তমান মেয়র মো: জুয়েল আহমদ নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি, জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি, তিনবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর মো: আনোয়ার হোসেন (নারিকেল গাছ) ও উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি ঠিকাদার মো: হেলাল মিয়া (জগ) বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী ঘরানার শক্তিশালী দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির একক প্রার্থী মো: আবুল হোসেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও দলের আভ্যন্তরীন কোন্দলে তিনি সুবিধাজনক অবস্থায় নেই।
আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে কমলগঞ্জ পৌরসভার ভোটগ্রহণ হবে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১০টি ভোটকেন্দ্রে ব্যালেটে ভোটগ্রহণ করা হবে। দ্বিতীয় শ্রেণির এই পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৫০৯ জন।
নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন মোট চারজন প্রার্থী। এর মধ্যে মো: জুয়েল আহমদ নৌকা, মো: আবুল হোসেন ধানের শীষ, মো: আনোয়ার হোসেন নারিকেল গাছ ও মো: হেলাল মিয়া জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো: জুয়েল আহমদ ২০১৫ সালের নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এ বছর আওয়ামীলীগে দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিপাকে পড়েছেন নৌকার প্রার্থী। অন্যদিকে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী নির্বাচনের মাঠে অনেকটা নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছেন। আর বিএনপির নেতাকর্মীরা আভ্যন্তরীন কোন্দলে জর্জরিত রয়েছেন।
জানা যায়, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি, জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি, তিনবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর মো: আনোয়ার হোসেন (নারিকেল গাছ) ও উপজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি ঠিকাদার মো: হেলাল মিয়া (জগ) দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা উভয়ে ভোটের মাঠে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ভেতরে ভেতরে দলের অনেক নেতাকর্মীও তাদের পিছনে রয়েছেন।
বিএনপির প্রার্থী মো: আবুল হোসেন বলেন, কমলগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। দলীয় ভেদাভেদ ভূলে সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ কাজ করলে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ বিজয় হবে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করছি। তিনবারের পৌর কাউন্সিলর ছিলাম। গত নির্বাচনেও আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এ বছর আমাকে মনোনয়ন দিবেন বলে আশ^াস দেওয়ায় গত বছর আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিনি। এবছর দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা চেয়েছেন বলেই মেয়র পদে নির্বাচন করছি।’
আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী ঠিকাদার মো: হেলাল মিয়া বলেন, পৌর এলাকার সর্বস্তরের জনগণের চাপে প্রার্থী হয়েছি। দলমত নির্বিশেষে ভোটাররা আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবেন বলে আমার বিশ^াস।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো: জুয়েল আহমদ বলেন, পৌরসভার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দলীয় মেয়র নির্বাচিত হয়ে পৌরবাসীকে কাঙ্খিত সেবা দিয়েছি। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে এবারও নৌকার পক্ষে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। অন্যদিকে যাঁরা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের বিষয়ে শিগগিরই দল সিদ্ধান্ত নেবে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্ণিং কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার জানান, ব্যালেটের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি কমলগঞ্জ পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছেন। নির্বাচনের পরিবেশও সুষ্ঠুু রয়েছে।#
Leave a Reply