এইবেলা, জুড়ী ::
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে লাঠিটিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ নিলাম প্রক্রিয়া ছাড়াই কেটে বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফয়জুর রহমানকে তার স্বীয় পদ থেকে অপসারণ করে চলমান কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
বুধবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ মোঈদ ফারুকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মন্তোষ কুমার দেবনাথ। এছাড়াও ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা চিঠি দিয়েছেন।
জানা যায়, উপজেলার লাঠিটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকটি গাছ নিলাম প্রক্রিয়া ছাড়াই কর্তন করে বিক্রি করা হয়। এ নিয়ে গত বছরের ৩ নভেম্বর গণমাধ্যমে সংবাদ ছাপা হয়। এর পর ঐদিনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান রুহুল ইসলাম এর নির্দেশে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মন্তোষ কুমার দেবনাথ ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিছবাহ উদ্দিনকে কেন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে ৮ নভেম্বরের মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য চিঠি দেন। পরবর্তীতে ৮ তারিখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাঁর লিখিত জবাব জমা করেন। প্রধান শিক্ষক তাঁর লিখিত জবাবে জানান তাঁর অজ্ঞাতে এরকম ঘটনা ঘটেছে। তাঁর জবাবের প্রেক্ষিতে গাছগুলো কর্তনের সঠিক তথ্য জানার লক্ষ্যে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ১০ নভেম্বর দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিতে ছিলেন উপজেলা রিসোর্স সেন্টার (ইউআরসি) এর ইন্সট্রাক্টর আবু রায়হান ও উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা রাজন কুমার সাহা। তদন্ত কমিটিকে ১৮নভেম্বরের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। ১২ তারিখে প্রকাশ্যে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে ঐ বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন তদন্ত দল। তদন্তে গাছ কেটে বিক্রির সাথে বিদ্যালয়ের এসএমসির সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক উভয়ের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
এসময় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তাদের দায় স্বীকার করেন। পরবর্তীতে তদন্ত দল তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে জমা দেন। শিক্ষা কর্মকর্তা পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শামসুর রহমান এর বরাবরে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিবেদনের আলোকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষক মিছবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে সিলেট বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপপরিচালক বরাবরে এবং বিদ্যালয়ের সভাপতি ফয়জুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির কাছে চিঠি দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত বুধবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভায় ঔ বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি ফয়জুর রহমানকে অবৈধভাবে গাছ কর্তনের দায়ে তাকে সভাপতি পদ থেকে অপসারণ করে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মন্তোষ কুমার দেবনাথ বলেন, নিলাম ছাড়া গাছ কর্তন করে বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় লাঠিটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতিকে স্বীয় পদ থেকে অপসারন করে চলমান কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুর রহমান বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পাঠানো প্রতিবেদনের আলোকে ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে।#
Leave a Reply