এইবেলা, রাজনগর ::
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ময়নুল ইসলাম খানসহ উভয়পক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ অন্তত ১০৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে।
আহতদের রাজনগর হাসপাতাল, মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন। মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউল হক, ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলা আওয়ামীলীগের জনসভা ডাকা হয়েছে। এই জনসভা সফলের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতাকর্মীরা উপজেলা পরিষদের সামনে জড়ো হয়। অপরদিকে গত মঙ্গলবার রাজনগরে ওই জনসভাকে সফলের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের একটি মিছিল শেষে সমাবেশে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিপক্ষে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিষোধগার করা হয় দাবি করে বৃহস্পতিবার সকালে মিছিল করতে রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খানের কার্যালয়ে তার অনুসারীরা জড়ো হয়।
হঠাৎ করে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এসময় ২টি সিএনজি অটোরিক্স্রা ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। উভয় পক্ষে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে রাজনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ ১০৩ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ও ৪ রাউন্ড টিয়ার শেল ছুঁড়ে। উভয়পক্ষের নিক্ষিপ্ত ইটপাটকেল ও রাবার বুলেটে পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ময়নুল ইসলাম খান (৪৫), মামুন আহমদ (২০), শরিফ মিয়া (২৫), ইয়ামিন আহমদ (৩৩), রমজান মিয়া (৩৩), রিয়াদ আহমদ (২৩), তারেক মিয়া (২৫), জালাল আহমদ (৩২), লিকন মিয়া (২৮), সেজু আহমদ (২৮), ইউসুফ আহমেদ (২৬), ফাহিম আহমদ (২৪), সাইম মিয়া (২০), রাজন মিয়া (২৫), পার্থ দাস (৪০), পরকিছ মিয়া ( ৬০), রিপন মিয়া (২২), রিয়াদ মিয়া (২২), তারেক আহমদ, পুলিশের এসআই এরশাদ, কন্সটেবল পবিত্র ও সুব্রতসহ ।
রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন বখত্ বলেন, আগামী ১৬ তারিখ উপজেলা আওয়ামী লীগের জনসভা সফল করার লক্ষ্যে আমরা একত্রিত হয়েছিলাম। এসময় বিএনপি-জামায়াতের সহায়তায় উপজেলা চেয়ারম্যান আমাদের উপর হামলা চালান।
উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান খান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলন বখতের নেতৃত্বে মিছিল করে। এসময় আমার বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করে তারা। বিষয়টি জেনে আমার শুভাকাঙ্খিরা বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার সময় মিছিল আয়োজন করেছিল। এসময় মিলন বখতের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার সরকারি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। এতে তারেক নামে আমার একজন কর্মী ঘাড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউল হক বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ফাঁকা রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে। কারো পক্ষ নেয়নি।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছু রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল ছোঁড়া হয়েছে।#
Leave a Reply