আব্দুর রব, বড়লেখা থেকে :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা সীমান্তের রাগনা-বটুলী স্থলবন্দর (ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট) দিয়ে ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারলেও দেড় যুগ ধরে বাংলাদেশিদের ভারত যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। স্থলবন্দরটি জনবল সংকট, অবকাঠামো ও অফিস ইকুইপম্যান্ট সমস্যায় জর্জরিত। জুড়ী, বড়লেখা, কুলাউড়া উপজেলাসহ জেলাবাসী রাগনা-বটুলী স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশিদের ভারতে যাতায়াত পুনরায় চালুসহ সকল সমস্যার দ্রুত সমাধান দাবী করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন জানান, মন্ত্রণালয়ের যে সেক্রেটারী ও মহাপরিচালক ইন্ডিয়া সাইট দেখেন তাদেরকে গুরুত্বের সাথে বিষয়টি দেখার জন্য তিনি নির্দেশ দিবেন।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জুড়ী রাগনা-বটুলী ইমিগ্রেশন স্থলবন্দরটির অবকাঠানো উন্নয়ন কাজ ও ২০০২ সালে কার্যক্রম শুরু হয়। এ স্থলবন্দর দিয়ে বন্ধু প্রতীম দেশ ভারতের সাথে বিভিন্ন পণ্যসহ মালামাল আমদানি রপ্তানী হতো। সে সময়ে দু’দেশের নাগরিকরাও পাসপোর্ট নিয়ে আসা যাওয়া করতেন। তবে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদি উলফারা বাংলাদেশিদের ভারতে যাওয়ার পথে হামলা চালাতো, অনেককেই তুলেও নিয়ে যেত। উলফাদের উৎপাতে কর্তৃপক্ষ এ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশিদের ভারত যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ভারতীয়দের আসা-যাওয়া বহাল থাকে। প্রায় ১১ বছর ধরে উলফাদের কোন উৎপাত নেই, তবুও চালু হয়নি বাংলাদেশিদের ভারত যাতায়াত সুবিধা। ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন থানায় এতদ অঞ্চলের লোকজনের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। বৈধ পন্থায় এ স্থলবন্দর দিয়ে যাতায়াত অত্যন্ত সুবিধাজনক। কিন্তু প্রায় দেড় যুগ ধরে যাতায়াত বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে এ অঞ্চলের লোকজন দুরবর্তী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যান। এতে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয়সহ মারাত্মক দুর্ভোগ পোয়াতে হয়। রাগনা-বটুলী শুল্ক স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে। ভারতীয় লোকজনও আসা-যাওয়া করছে। জুড়ী, বড়লেখা, কুলাউড়া তথা জেলাবাসির জোরালো দাবি, অবিলম্বে এ স্থলবন্দর দিয়ে এতদ অঞ্চলের লোকজনের ভারতে যাতায়াত সুবিধা চালু করা হউক।
বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জুড়ীর বাগনা-বটুলী স্থলবন্দর থেকে সরকার বছরে ১৩-১৪ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে। শুল্ক স্থলবন্দরের জন্য ৩৮ বিঘা জমি একোয়ার করা হলেও কার্যক্রমের অগ্রগতি ফাইলবন্দি। ২৭ কিলোমিটার ছোট এবং জরাজীর্ণ রাস্তার জন্য বন্দরের আমদানি রপ্তানিকৃত গাড়ি পণ্য নিয়ে যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। ১২ ফুট প্রশস্থ রাস্তা ১৮ ফুটে উন্নীত করে হাইওয়ে রাস্তায় রূপান্তরের কাজ আগামী ৩০ জুলাই সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৭৩ কোটি টাকা। বন্দর স্থাপনের প্রায় দুই যুগ অতিবাহিত হলেও রাস্তার কাজ ছাড়া দৃশ্যমান কোন উন্নতি নেই। অবহেলায় পড়ে আছে স্থলবন্দরের ছোট্ট অফিসটি। বৃষ্টি হলে অফিসে থাকা কাগজপত্র ভিজে নষ্ট হয়। আসবাবপত্র সংকটে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গাদাগাদি করে দায়িত্ব পালন করেন। জনবল সংকট, অবকাঠামো সমস্যা, অফিস ইকুইপম্যান্ট সমস্যাসহ নানবিধ সমস্যায় জর্জরিত রাগনা-বটুলী স্থলবন্দর।
জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বদরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এমএ মোঈদ ফারুক, ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ, গোয়ালবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন লেমন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশিদ সাজুসহ এলাকাবাসী রাগনা-বটুলী স্থলবন্দরের সকল সমস্যার দ্রুত সমাধান ও বাংলাদেশিদের ভারত যাতায়াতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6085
Leave a Reply