শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি ::
প্রেমিকার মায়ের কথায় নিজের ভালোবাসার প্রমাণ দিতে কীটনাশক পানে দ্বিধা করেননি প্রেমিক জুনেদ। ভালোবাসার জন্য প্রাণ বিসর্জনের এ ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।
জানা গেছে, শহরের সুরভীপাড়া এলাকার সামসু মিয়ার ছেলে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জুনেদ রহমানের সঙ্গে উপজেলার মোহাজেরাবাদ গ্রামের হামিদ উল্লার কলেজপড়ুয়া মেয়ের ৪ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক। এ সম্পর্ক মেয়েটির পরিবার কখনো মেনে নেয়নি। গত কয়েক দিন আগে পারিবারিকভাবে জুনেদের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল- এমন খবর পেয়ে মেয়েটি জুনেদকে জানিয়ে দেয় অন্যত্র বিয়ে করলে সে বিষপানে আত্মহত্যা করবে। এ নিয়ে জুনেদ দিশেহারা হয়ে পড়ে। অন্যদিকে মেয়েটির পরিবারও তাকে মেনে নিতে রাজি নয়।
জুনেদের বন্ধু পায়েল ও সাজু জানান, এ নিয়ে মেয়েটি তার মাকে রাজি করাতে জুনেদকে তাদের বাসায় যাওয়ার জন্য বলেছিল। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে জুনেদ তাদের সঙ্গে নিয়ে মেয়েটির বাড়ি যায়। এ সময় বন্ধুদের বাড়ির বাইরে রেখে জুনেদ বাড়ির ভেতর প্রবেশ করেন। জুনেদ ভেতরে গিয়ে মেয়েটির মায়ের পা ধরে কাকুতি-মিনতি করে তাদের সম্পর্ক মেনে নিতে বলেন। এতে মেয়েটির মা কর্ণপাত না করে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। মেয়েটির মা জুনেদকে বলেন- তার মেয়েকে সত্যিকারের ভালোবাসে কিনা তা প্রমাণ দিতে।
কী করতে হবে- জুনেদ জানতে চাইলে মেয়েটির মা তাকে বিষপান করার আহ্বান জানায়। এতে জুনেদ ভালোবাসার মানুষকে পেতে তীব্র আবেগের বসে বাড়িতে রাখা কীটনাশকের বোতল খুলে পান করেন। এতে বিষক্রিয়া শুরু হলে জুনেদ দৌঁড়ে বাইরে এসে সবাইকে ঘটনাটি জানায়। এরপর তাকে দ্রুত শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল এবং পরে সিলেটের আল-রায়হান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুনেদ মারা যান।
দুপুরে লাশ শ্রীমঙ্গল থানায় নিয়ে আসা হলে শত শত মানুষ সেখানে ভিড় করেন। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের আহাজারিতে পুরো থানা চত্বরের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। জুনেদ রহমান শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে শনিবার বিকালে যোগাযোগ করা হলে জুনেদের প্রেমিকা সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার দিন বিকালে জুনেদ আমাদের বাসায় এসে দীর্ঘসময় মায়ের পা ধরে কান্নাকাটি করে। এ সময় সে আমাদের সম্পর্ক মেনে নিতে মাকে অনুরোধ করে। কিন্তু আমার মা তাকে জানায় তার বাবা-মা যেখানে বিয়ে ঠিক করেছে সেখানেই বিয়ে করতে। এতে মা রাজি না হলে সে চলে যায়। পরে বিষপানে আত্মহত্যার খবরটি তারা আজ জেনেছেন।
মেয়েটির মা সেলিনা বেগম বলেন, জুনেদ তাদের বাড়ি আসার সময় বাড়িতে পুরুষ মানুষ ছিল না। এ ঘটনায় আমরা থানায় একটি জিডিও করি।
এদিকে শনিবার বিকালে জুনেদের পরিবারের পক্ষে জুনেদের প্রেমিকা, তার বাবা ও মাকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে শ্রীমঙ্গল থানায়।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply