রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার সাব-রেজিস্টার অফিস দুরবর্তী স্থানে স্থানান্তরের প্রতিবাদে দলিল লেখক ও ব্যবসায়ীদের ডাকে ছয় ঘন্টার (সকাল ৯ থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত) ধর্মঘট শান্তিপুর্নভাবে পালিত হয়েছে।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকেই রাজনগরের সর্বস্তরের ব্যবসায়ি দোকানপাট বন্ধ রেখে ও দলিল লেখক এবং সাধারণ লোকজনদের সাথে নিয়ে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন।
ধর্মঘট পালনকারিরা জানিয়েছেন, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে রাজনগর কলেজ পয়েন্ট এলাকায় ভাড়া বাড়িতে সাব রেজিষ্টার অফিস স্থানান্তরের বিষয়টি জানার পর থেকে তারা আন্দোলন শুরু করেছেন। ২০ দিন ধরে দলিল লেখকরা কলম বিরতি অব্যাহত রেখেছেন। উপজেলা সদরে ভাড়া নিয়ে অফিস পরিচালনা করার উপযোগি অনেক বাড়িও রয়েছে। তারা দাবি জানান, রাজনগর সদর থেকে সাব-রেজিষ্টার অফিস স্থানান্তর করলে রাজনগর শহরে দীর্ঘ দিনের জমে উঠা ব্যবসা বাণিজ্যর ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
সকাল ৯টা থেকে গুরুত্বপুর্ণ সড়কে বিক্ষোভকারিরা নানাভাবে ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করে রাখে। এ সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাও রাস্তায় উপস্থিত ছিলেন। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মঘট পালিত হয়। ধর্মঘট চলাকালে শহরজুড়ে খন্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে রাজনগরের সাথে সিলেট ও মৌলভীবাজারের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। যান চলাচল বন্ধ থাকায় জরুরী প্রয়োজনে লোকজন কষ্ট করে পায়ে হেটে চলাচল করেন। ঘর্মঘট চলাকালে রাজনগর উপজেলা শহরের সব ধরনের দোকানপাট সম্পুর্নভাবে বন্ধ থাকে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা কোনভাবেই রাজনগর উপজেলা পরিষদ ভবন থেকে সাব-রেজিস্টার অফিস স্থানান্তরিত হতে দেবেন না। রাজনগর উপজেলা সদরের প্রবীন ব্যবসায়ি ছাদিকুর রহমান বলেন, এমনিতেই রাজনগর উপজেলা সদর অবহেলীত এক জনপদ। যদি উপজেলা সদর থেকে সাব-রেজিষ্টার অফিস সরিয়ে নেয়া হয় তাহলে ব্যবসায় মান্ধাভাব আসবে। এতে ক্ষতির সম্মুখিন হবে।
রাজনগর বাজারের ব্যবসায়ী জাবেদ আহমদ জানান, তারা দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরেই এখানে ব্যবসাবাণিজ্য চালিয়ে আসছেন। হঠাৎ করে এখান থেকে সাব-রেজিস্টার অফিস সরিয়ে নিলে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হবে। কাজেই তাদের এ দাবি না মানলে প্রয়োজনে তারা কঠোর বৃহত্তর আন্দোলন সংগ্রামের হুমকি দিয়েছেন।
জেলা রেজিষ্ট্রার এস এম সোহেল রানা মিলন জানান, আন্দোলনকারীরা বাস্তবতা না বুঝে আন্দোলন করছেন। বর্তমান অফিসটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় এবং রক্ষিত নথিপত্র নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় অফিস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত দিয়েছে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ। তবে এ বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আন্দোলনকারীদের নিয়ে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি আলোচনায় বসার চিন্তা ভাবনা চলছে। তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।#
Leave a Reply