এইবেলা, ডেস্ক ::
যৌনকর্মী, মাদক ও মদের এক স্বর্গরাজ্য। দিন-রাত চলে পাপাচার। যৌনাচার-মাদক এ দ্বীপে ‘বৈধ’। আফ্রিকার কুখ্যাত অপরাধী, মাদক পাচারকারিদের গা-ঢাকা দেয়ার শীর্ষস্থান এটি। কেনিয়ার লেক ভিক্টোরিয়ায় ভাসছে কুখ্যাত এক দ্বীপ। নাম রেম্বা।
রেম্বা দ্বীপের টিনের চালের ঘরগুলো দিনে দু’বার ভাড়া দেয়া হয়। ক্ষুদ্র দ্বীপটি যেন আরেক ছোট্ট আফ্রিকা। আফ্রিকার সব দেশের মানুষই সেখানে আছে।
লেক ভিক্টোরিয়া আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম এবং পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম হ্রদ। কেনিয়া, তানজানিয়া এবং উগান্ডার মধ্যবর্তী একটি সুউচ্চ মালভূমির ওপর অবস্থিত এ হ্রদের দৈর্ঘ্য ৩৫৯ কিলোমিটার ও প্রস্থে ৩৩৭ কিলোমিটার। আয়তনে হ্রদটি প্রায় ৬০ হাজার বর্গকিলোমিটার।
লেক ভিক্টোরিয়ায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে প্রায় তিন হাজার দ্বীপ। হাজারো দ্বীপের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে রেম্বা। দ্বীপের চারদিকে আবর্জনার স্তূপ।
দ্বীপটির চারপাশে মলমূত্র থেকে শুরু করে ব্যবহৃত স্যানিটারি প্যাড, কনডম, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ ও সুঁচ পড়ে থাকে। সেই সঙ্গে মাছ পচা গন্ধ তো রয়েছেই। এই পরিবেশেই বাস করছে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
এইটুকু দ্বীপে গায়ে গায়ে ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আছে করোগেটেড টিনের চালাঘর। ঘরগুলো প্রতিদিন দু’বার ভাড়া দেয়া হয়। দিনে একজন, রাতে আরেকজন ভাড়া নেয়।
যারা রাতে মাছ ধরেন, দিনে ঘর ভাড়া নেন। কেউ দিনে মাছ ধরলে ঘর ভাড়া নেন রাতের জন্যই। ভাড়া এক হাজার ২০০ থেকে ৬ হাজার টাকা।
এ বাড়িগুলোকে বলে উসিসেমে। কিছু বাড়ি যৌনকর্মীরা ভাড়া নিয়ে রাখেন। প্রতিদিন ভোরে এই দ্বীপ থেকে ২০০ মানুষ বের হয় আর ৪৯০ জন নতুন মানুষ ঢোকেন।
২০ হাজার মানুষের জন্য দ্বীপে আছে মাত্র চারটি পাবলিক টয়লেট। মাটির ভেতরে করা গর্ত আর চারদিকে বেড়া এটাই টয়লেট। দ্বীপে কয়েকটি ওষুধের দোকান রয়েছে।
দোকানগুলো চালায় হাতুরে ডাক্তাররা। ভুল ওষুধে শিশুর মৃত্যু সেখানকার নৈমিত্তিক ঘটনা। বেশিরভাগ দোকানই মাদকজাতীয় ট্যাবলেট, অন্যান্য ওষুধ ও কনডমে ঠাসা।
দ্বীপে রয়েছে মাছের আড়ত, একটি গির্জা, একটি মসজিদ, জুয়ার অসংখ্য কাউন্টার, মদ ও ড্রাগের পাব, সেলুন, ওষুধের দোকান, খাবার হোটেল ও হাজার তিনেক যৌনকর্মী। চলে জুয়া খেলার প্রতিযোগিতা। লোকে এখানে যেমন আমীর হয়, তেমনি ফকিরও হয়। এখানে দেহব্যবসা বেআইনি নয়।
সারাদিন মাছ শিকার করে লেকের চারদিক থেকে এসে ভিড়ে মাছভর্তি নৌকা। সেই মাছগুলো রেম্বা দ্বীপের আড়তে বিক্রি করে মৎস্যজীবীরা। মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে যৌনাচার বা ড্রাগ-মদে উড়িয়ে পরদিন আবার নৌকা নিয়ে জলে নামেন হাজারও মৎস্যজীবী।
একজন যৌনকর্মী দিনে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করেন। দ্বীপে ব্যাংক নেই, তাই যৌনকর্মীরা নিজের কাছেই টাকা রাখেন। কখনও তা লুটও হয়। কয়েক সপ্তাহ পরপরই টাকাকড়ি নিয়ে উধাও হয়ে যায় অনেক যৌনকর্মী। সঙ্গে করে নিয়ে যায় যৌন রোগ।
রেম্বা দ্বীপের ওইসব টিনের ঘরে মেলে বিভিন্ন বয়সের যৌনকর্মী। জায়গা না থাকায় একই ঘরে ১০ থেকে ১২ জন যৌনকর্মী একইসঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হন। অন্যদিকে ঘরের বাইরে অপেক্ষায় থাকেন আরও খদ্দের।
যৌনকর্মীদের শিশুরা রাস্তায় খেলে বেড়ায় এবং অপরিচিত লোকদের হাতে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়, আর টিনের ঘরে যৌনশোষিত হয় তাদের মায়েরা। দ্বীপে আবার পুলিশও রয়েছে। তাদের সংখ্যা মাত্র নয়জন। কেনিয়ার মাসাইদের (দ্বীপের ক্ষমতাশীল সেনাবাহিনী) পয়সা দিয়ে পোষেণ প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা। অপরাধ করে আইনের হাত এড়িয়ে রেম্বাতে লুকিয়ে থাকেন এসব প্রভাবশালীরা।#
সুত্র- যু/২৩ জু/২০
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply