ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান ফুলবাড়ীতে বিজিবি’র অভিযানে মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার সহকারি শিক্ষকদের সাটডাউন- বড়লেখায় কক্ষের তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ালেন অভিভাবকরা কুলাউড়ার মুরইছড়া  সীমান্তে  ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফের গুলিতে  যুবক নিহত কুলাউড়ায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের বার্ষিক টাউন হল মিটিং কর্মক্ষেত্রের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলতে হবে- ইউএনও মহিউদ্দিন বড়লেখায় প্রধান শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা প্রাক্তন ছাত্র গ্রেফতার

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

  • বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০

Manual7 Ad Code

এইবেলা, নিজস্ব প্রতিবেদক ::

Manual6 Ad Code

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ভাইস-চেয়রম্যান জাহিরুল ইসলাম মুরাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাযের করেছেন এলাকার এক স্থায়ী বাসিন্দা। মুরাদ ফেঞ্চুগঞ্জের ১ নং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে তার বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি-নারী কেলেঙ্কারি-প্রতারনার বিষয় উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে পৃথক দু’টি অভিযোগ জমা দেয়া হয়।

১ জুলাই স্থানীয় সরকার, পলøী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বরাবর করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবং বর্তমান উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মুরাদের সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সম্পদ আত্মসাৎ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন। তার এহেন কর্মকান্ডে সাধারণ এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। অন্যদিকে তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দুই ছেলে ইমাদুল ইসলাম ইমাদ এবং রাহাতুল ইসলাম ইনানও এখন বেপরোয়া। এছাড়া তার ভাগ্নি ভাবিয়া আলম নোভা বর্তমানে মামার শেল্টারে এলাকায় গড়ে তুলেছেন ব্ল্যাক মেলিং-এর একটি শক্তিশালী গ্যাং। ভাইস-চেয়ারম্যান মুরাদ তার অনিয়ম দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে ব্যবহার করেন দুই ছেলে ইমাদ, ইনান এবং ভাগ্নি নোভার নেতৃত্বে গড়ে উঠা চক্রকে।

Manual2 Ad Code

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে টিআর, কাবিখা, এলজিএসপি ইত্যাদি প্রজেক্টের সরকারি বরাদ্দের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেন জাহিরুল ইসলাম মুরাদ। একাদিক সময়ে ভূয়া প্রজেক্ট দেখিয়েও হাতিয়ে নেন সরকারি অর্থ। এমনকি কিছু কিছু প্রজেক্টে এমন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেন যেই নামে কোন মানুষই নেই ওই এলাকায়।

পারিবারিক সম্পদ আত্মসাতের জন্য তিন বার উত্তরাধিকার সনদ পর্যন্ত জালিয়াতির অভিযোগ করা হয় এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। তার বাবা হাবিবুর রহমানের তিন ছেলে ও চার মেয়ে । কিন্তু মুরাদ চেয়ারম্যান নিজে দায়িত্বে থাকা কালে একটিতে শুধু নিজের নাম দিয়ে সার্টিফিকেট বের করেন ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর। পরিবারের সদস্যদের তোপের মুখে পড়ে সেটি তিনি বহাল রাখতে পারেননি। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর নিজের প্রভাব খাটিয়ে প্রবাসে থাকা দুই ভাই আমেরিকা বসবাসকারী জিয়াউল ইসলাম বাবুল এবং ইংল্যান্ডে বসবাসরত জাহিদুল ইসলাম হেলাল ও বোন লুৎফা খানমের নাম বাদ দিয়ে আরেকটি ভূয়া সার্টিফিকেট বের করেন ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ। যেখানে নিজের নামসহ দেশে বসবাসরত তিন বোন মুক্তা খানম, শেফা খানম ও ফৌজিয়া খানমের নাম ছিল। কিন্তু প্রবাসে থাকা বাদ পড়া ভাইবোনরা বিষয়টি জানতে পেরে ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করলে পরে সেই ভূয়া সার্টিফিকেট বাতিল করে সবার নাম দিয়ে নতুন করে উত্তরাধিকারী সার্টিফিকেট দেয়া হয় ২০১৯ সালেরই ১১ নভেম্বর। নতুন সনদ দেয়ার আগে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. বদরুদ্দোজা ২৫ মার্চ প্রদান করা ভূয়া সার্টিফিকেট বাতিল করেন। যেখানে চেয়ারম্যান লিখেছিলেন তাদেরকে ভুল তথ্য দিয়ে উত্তরাধিকারী সার্টিফিকেট নেয়া হয়েছিল। পরে তদন্ত করে ভুল প্রমানিত হওয়ায় আগের সার্টিফিকেট বাতিল করে নতুন করে সঠিক তথ্য দিয়ে নির্ভুলভাবে সার্টিফিকেট দেয়া হয়। এ রকম ভুল তথ্য দিয়ে সার্টিফিকেট নেয়াকে তিনি আইনের পরিপন্থি বলেও চিঠিতে উল্লেখ  করেন। ভূয়া সনদ বাতিল করা হলেও এর মাঝে মুরাদ চেয়ারম্যান একক উত্তরাধিকারী দেখিয়ে বেশ কিছু পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারি এবং নৈতিক চরিত্র স্খলনের অভিযোগও করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, নিজ মালিকানাধীন দাগ নং-৩৫২৪, খতিয়ান নং-১৫৩০, বিএস-৩৫২৪ এই জায়গা প্রথমে বিক্রি করেন উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের মো: তনু মিয়ার স্ত্রী সাতিয়া বেগমের কাছে (দলিল নং-৫০৮/২০১৯.৮/৫/১৯)। পরে আবার এই একই জায়গা জালিয়াতির মাধ্যমে (দলিল নং-৯৮৬/২০১৯/১৬/১০/১৯/) নাম্বারে একটি দলিলের মাধ্যমে কুতুবপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে মিঠন মিয়ার কাছে বিক্রি করেন মুরাদ চেয়ারম্যান। একই দাগ খতিয়ানে একই জমির প্রথম বারের বিক্রেতা মুরাদ চেয়ারম্যান, দ্বিতীয়বার জালিয়াতির মাধ্যমেও বিক্রেতা তিনি। এমনকি এলাকার অনেকের বিভিন্ন তদবিরের কাজ করে দেবার নাম করেও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেন। কাজ না হলে এইসব টাকা ফেরত পাবার জন্য তার কাছে বারবার ধর্না দিয়েও ব্যর্থ হোন লোকগুলো।

উল্লেখ্য, জাহিরুল ইসলাম মুরাদ ২০০৩ সালে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ১ নং ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নির্বাচন না করে আদালতে মামলা করে দায়িত্ব পালন করে যান ২০১৮ সাল পর্যন্ত। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা তিনটি ইউনিয়ন গঠিত হলেও পরে নতুন করে আরো দুই ইউনিয়নকে সংযুক্ত করা হয়। আর এতে সীমানা নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে করা হয় মামলা। ২০১১ সালে জাহিরুল ইসলাম মুরাদই উদ্যোগী হয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন উত্তর ইসলামপুরের জামাল মিয়াকে দিয়ে। মামলার যাবতীয় খরচও তিন বহন করেন। পরে সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা ভূয়া বলে খারিজ করে দেয় ২০১৮ সালে। এরপর ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি চেষ্টা করেছিলেন স্থগিত আদেশ নিয়ে আসতে। আদালতে সফল হতে না পারার পর ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে তিনি পরাজিত হোন। পরে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়ী হন। রাজনৈতিকভাবে তিনি বিএনপির মতাদর্শের হলেও নিজের অপকর্ম ডাকতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বর্তমানে তিনি ক্ষমতাসীন দলের সাথে তাল মিলিয়ে চলছেন ।

Manual4 Ad Code

মুরাদ চেয়ারম্যানের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তার দুই ছেলে ইমাদুল ইসলাম ইমাদ এবং রাহাতুল ইসলাম ইনানও এখন বেপরোয়া। এছাড়া তার ভাগ্নি ভাবিয়া আলম নোভা বর্তমানে মামার শেল্টারে এলাকায় গড়ে তুলেছে ব্ল্যাক মেলিং-এর একটি নোংরা গ্যাং। মুরাদ চেয়ারম্যানের অপকর্মের প্রতিবাদ করলে দুই ছেলে সন্ত্রাসী গ্রুপ দিয়ে তাদের উপর হামলা করা হয়। এছাড়া চাঁদাবাজি এই দুই ছেলে নিয়মিত পেশা। এলাকার সাধারণ মানুষকে হযরানি, মারধোর, জমি দখল সবই চালায় এই দুই ভাই, এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।

এ ব্যাপারে দুদকের পরিচালক ( জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্রাচার্য্য বলেন, ‘এ রকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ব্যাপারে সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Manual4 Ad Code

এ বিষয়ে মুরাদ চেয়ারম্যানের ছেলে ইমাদুল ইসলাম ইমাদকে ফোন করলে তিনি ÿেপে উঠেন। নানান অশøীল গালি দিয়ে বলেন, ‘আমরা সাংবাদিক পুষি। তোর মত কত সাংবাদিক চালাই আমরা। তুই কোথাকার সাংবাদিক, দেখে নিব।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিরুল ইসলাম মুরাদ বলেন, ‘এগুলো সব মিথ্যা অভিযোগ। আমার নিজের পৈতৃক সম্পদ আমি কেন আত্মসাত করবো। ভাই বোনরা আমাকে সম্পদ দেখভালের দায়িত্ব দেয়ায় নিজের নামে উত্তরাধিকার সনদ নিয়ে রেখোিছলাম।’ তবে ভাই বোনদের বাদ দিয়ে নিজের নামে একা উত্তরাধিকার সনদ নেয়া কি সনদ জালিয়াতির পর্যায়ে পড়ে না এবং এই কাজ বেআইনী ও অপরাধমূলক কি না এমন প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি। সরকারি কাজে বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে প্রশ্ন করলে একপর্যয়ে তিনি প্রতিবেদককে দেখা নেয়ার হুমকি দিয়ে ফোন রেখে দেন।#

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!