কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১ সম্মাননা পেয়েছেন মৌলভীবাজার জেলার তৃণমূল সাংবাদিকতার প্রাণপুরুষ আহমদ সিরাজ। এমন বিরল সম্মানে ভূষিত করায় বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী এই নিভৃতচারী মানুষটি আজ অভিভূত। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, প্রায় চল্লিশ বছর ধরে সাংবাদিকতা ও এই ঘরানার কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও একটি বৃহৎ পরিসরে জাতীয় অঙ্গন থেকে এমন সম্মাননার গৌরব লাভে সত্যিই চমকিত হয়েছি।
৩০ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে জাকঁজমক অনুষ্টানের মাধ্যমে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড সম্মাননা আনুষ্টানিক ভাবে ৬৪ জেলার গুনী সাংবাদিক ও ১১জন অনুসন্ধানী সাংবাদিককে এ সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র প্রবীন সাংবাদিক হিসাবে তিনি এ সম্মাননায় ভূষিত হন। অনুষ্টানে আহমদ সিরাজ কে ১ লাখ টাকার চেক, ক্রেষ্ট ও উত্তরীয় প্রদান করা হয়।
ত্যাগী নিভৃতচারীর কর্মমুখর জীবন আহমদ সিরাজ ১৯৫৬ সালের ১ মার্চ বর্তমান মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শ্রীনাথপু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা তমিলা খাতুন ও বাবা মৃত চান মিয়া চৌধুরী। ছোটবেলা থেকেই তাঁর প্রবল ঝোঁক ছিল বই পড়ায়। সেই থেকে নেশায় পায় লেখালেখি ও সাংবাদিকতা।
কলেজে ভর্তি হয়েই তিনি ‘শুকতারা’ নামে দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯৭৬ সালে সিলেটের মর্যাদাশীল যুগভেরী পত্রিকায় তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশ হয়। এছাড়া সিলেট সমাচার, সিলেট কন্ঠসহ একাধিক পত্রিকায় লিখতে থাকেন তিনি। বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনেও নিরন্তর লিখে চলেন। জাতীয় দৈনিক সংবাদ-এর নিজস্ব সংবাদদাতা হিসেবে ৫ বছর কাজ করেন আহমদ সিরাজ। এছাড়া দৈনিক প্রথম আলো,কালের কন্ঠ, সমকাল এবং এককালের স্বনামধন্য বাংলাবাজার পত্রিকায়ও ফিচার-নিবন্ধ ছাপা হয়েছে তাঁর। একসময় তিনি শিক্ষকতা এবং পরে কমলগঞ্জ সরকারী গণ মহাবিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার হিসেবে যোগ দিয়ে ২০১৬ সালে অবসর নেন।
তৃণমূল সাংবাদিকতার পাশাপাশি এই কর্মপাগল মানুষটি নানান সংগঠন গড়ে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দান, স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ১২টি ভাষার সমন্বিত ভাষা উৎসব উদযাপন করেছেন ২০১৮ সালে। আহমদ সিরাজ বইও লিখেছেন বেশ কয়েকটি। ‘দিলওয়ার’সহ একাধিক গ্রন্থ সম্পাদনার পাশাপাশি এশিয়াটিক সোসায়টির গবেষণাপত্র, বাংলা একাডেমীর লোকসংস্কৃতি সংগ্রাহক হিসেবে পান্ডুলিপি প্রণয়নসহ বহুমূখী সৃজনশীল ও মননশীল কাজ করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন নিভৃতচারী এই গুণী মানুষটি।
Leave a Reply