নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: উত্তর জনপদের জেলা নওগাঁ। খাদ্যশস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত এ জেলা। গত কয়েক দিনের তীব্র শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে এখন ইরি-বোরো ধান রোপনের মহোৎসব। উত্তরের হিমেল হাওয়া, হাড়কাঁপানো প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করেই বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার কৃষকরা। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে বোরো ধানের চারা রোপনের কাজ। সঠিক সময়ে বোরো ধান রোপন করতে পেরে খুশি কৃষকেরা।
প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশায় বোরো বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে চারা রোপন করা পর্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটছে চাষিদের। ইতিমধ্যে নানা সমস্যার মধ্যেও বোরো চারা রোপনের জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন কৃষকরা। এখন গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপনের কাজ চলছে। কোনো জমিতে চলছে চাষ, বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে বীজ, চলছে রোপন সব মিলিয়ে মাঠে মাঠে জোরেশোরে চলছে বোরো ধান রোপনের কাজ।
কৃষকরা বলছেন, এক ফসল বিক্রি করে অন্য ফসল আবাদ করা হয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা পাইকারী হারে কৃষিজমিগুলো লিজ দিয়ে তৈরি করছেন মাছ চাষের পুকুর। এতে করে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তিন ফসলী কৃষি জমি।
উপজেলার তারাটিয়া ছোটডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুস ছামাদ প্রামানিক বলেন, গত বছর তিনি ১৬বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। এবার করছেন ১৪বিঘা জমিতে। প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশাকে উপেক্ষা করে প্রায় জমি তৈরির কাজ শেষের দিকে। আর
ক’দিনের মধ্যে চারাগাছ রোপন করা শুরু করবো।
ভবানীপুর গ্রামের কৃষক সুরত আলী বলেন, পৌষ মাসের শুরুতেই বোরো ধান রোপন করা শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে কৃষকরা মাঠে নামতে পারেননি। তাই চলতি মৌসুমে বোরো ধান রোপনে কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেলো। এতে করে ফলনও একটু ব্যাহত হতে পারে।
উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের তারাটিয়া ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান বলেন, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমরা উপজেলার কৃষকদের বোরো বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে জমিতে চারা রোপন করা পর্যন্ত সকল পরামর্শ প্রদান করে আসছি। আশা করছি আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার ইরি-বোরো চাষে কৃষক লাভবান হবে।
উপজেলার শলিয়া ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কেএম মাহাবুব বলেন, আবহাওয়া জনিত কারণে প্রতি বছর বীজতলা কম বেশী নষ্ট হলেও এ বছর শীত ও ঘন কুয়াশার মাঝেও বীজতলায় তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।
বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি মাঠে মাঠে চলছে এখন ইরি-বোরো ধান রোপনের মহোৎসব।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাপশ কুমার রায় বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বীজতলার তেমন একটা ক্ষতি না হওয়ায় উপজেলার কৃষকেরা অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছে।
তিনি আরোও জানান, উপজেলায় চলতি বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৮হাজার ৬ শত হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় শতকরা ৩০শতাংশ জমিতে বোরো ধান রোপন করা সম্পন্ন হয়েছে।
অতিদ্রুত পুরো উপজেলার প্রতিটা মাঠের জমিতে বোরো ধান রোপন করা সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদি। #
Leave a Reply