এইবেলা রিপোর্ট :
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের ভাঙ্গার পার গ্রামে বিদ্যুতায়িত হয়ে একই পরিবারের ৫ সদস্যের মৃত্যু ঘটেছে। টিনের চাল ঘেষা বিদ্যুৎ লাইন মুহূর্তেই শেষ করে দিল একটি পরিবার। একমাত্র বেচে থাকা শিশু সুনিয়া বেগম অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। হৃদয় বিদারক এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পেয়ে নিহতদের বাড়িতে ভিড় জমান হাজার হাজার মানুষ। এত মানুষের ভিড়েও যেন শুনসান এক নীরবতা বিরাজ করে সেই বাড়িতে। সবাই যেন স্তব্ধ হয়ে ছিলেন। অপরদিকে স্বজন ও প্রতিবেশীদের আহাজারিতে এলাকা ভারি হয়ে উঠে। বিকাল চারটায় গ্রামের জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নিহতদের জানাজা শেষে সার্বজনিন গোরস্তানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিবেশিদের সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সেহরির পর বজ্রপাতে বসতঘর ছুঁই ছুঁই পল্লীবিদ্যুতের ১১ হাজার ভল্টের মেইন লাইন ছিড়ে টিনের চালে পড়ে বিস্ফোরন ঘটে। প্রতিবন্ধী ফয়জুর রহমানের বসতঘরের বেড়াও টিন দিয়ে তৈরী। ঘরে আগুন জ্বলতে দেখে প্রতিবন্ধী ফয়জুর রহমান (৫২) দ্রুত দরজা খোলে বের হতে গিয়ে একে একে তিনি নিজে, স্ত্রী শিল্পী বেগম (৪৫), মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী ছামিয়া বেগম (১৫), সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছাবনিা বেগম (১৩) ও ছেলে ছায়েম আহমদ (৯) বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে। ছোট্ট মেয়ে সুনিয়া বেগম (৬) এই দৃশ্য দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ে। আর এতেই সে প্রাণে বেচে গেছে। তবে তারও শরীর ঝলসে গেছে। নিহত শিল্পী বেগমের মা আতাবুন বেগম জানান, ঘরে আগুন দেখে দরজা খোলে বের হতে গিয়ে সবাই আগুনে ঝলসে ও বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন। ভাগ্যক্রমে তার সব ছোট নাতনি সুনিয়া বেগম বেচে গেছে। তবে আগুনে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুয়েল আহমদ জানান, পল্লীবিদ্যুতের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই আজ তার ইউনিয়নের একটি পরিবারের ৫ সদস্যের মর্মান্তিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবন্ধী ফয়জুর রহমানের বসতঘরের টিনের চাল ছুঁই ছুঁই হাই ভোল্টেজের মেইন লাইন বছরের পর বছর ধরে টানানো রয়েছে। মৃত্যুর খবর শুনে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাদের দাফন কাপনের ব্যবস্থা করেন। এই দুঘর্টনার জন্য তিনি পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিকে দায়ী করে বলেন, এগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করলে এমন ঘটনা ঘটতো না।
পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির অবহেলার অবহেলার ব্যাপারে বড়লেখা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানা চৌধুরী জানান, ঝড়ে তার ছিঁড়ে গেছে। তাদের এই ঘর নির্মাণের সময় আমরা বাধা দিয়েছিলাম। কিন্তু নিহত পরিবারের ঘর বানানোর মতো অন্য কোনো জমি ছিল না। তা ছাড়া ঘরের আশেপাশে আমরা একটি খুঁটি স্থাপন করতে গেলেও এলাকাবাসীর বাধা দেন। আহত মেয়েটির চিকিৎসাসহ তাকে সার্বিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।
জুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে লাশগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply