এইবেলা, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের মনসুর গ্রামে মসজিদ ও মাদরাসার নামে ওয়াকফকৃত প্রায় ৩ একর ৭৭ শতাংশ সম্পতি হঠাৎ ৭৮ বছর পর অবৈধ দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে গ্রামবাসীর বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে ।
২৮ জুন (শুক্রবার) জুম্মার নামাজের পর মুসল্লিরা মনসুর মোহাম্মদিয়া সিনিয়র মাদরাসার সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কমসূচি পালন করে ।
এ সময় গ্রামের সাধারণ মানুষ ও মসজিদের মুসল্লীরা মানববন্ধনে যোগ দেয় ।
মাদরাসার গভর্নিং বডির সদস্য ও মসজিদ কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমানের পরিচালনায় বক্তব্যে দেন মাদরাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি সাতির মিয়া, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জহির, সহ-সভাপতি হারুন মিয়া, মাদরাসার গভর্নিং বডির সদস্য আব্দুল মোহিত বাবলুসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ।
গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি সাতির মিয়া অবৈধ দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ভুমি দস্যু আকদ্দছ আলীর মূলবাড়ী জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের বটুলি গ্রামে। সে আমাদের মসজিদ ও মাদরাসার নামে ওয়াকফকৃত প্রায় ৩ একর ৭৭ শতাংশ সম্পতি অবৈধ দখলের চেষ্টায় লিপ্ত । ১৯৪৬ সালে কটু মিয়া, মজর উদ্দিন, আবজা বিবি এই তিন জন তাদের ইহকালীন ও পরকালীন কল্যান মুক্তির জন্য দলিলমুলে ওয়াকফে লিল্লাহ করে যান। দলিলে উল্লেখ করা হয়, এই দলিল পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন ও সংযোজন করা যাবে না। এই সম্পতির মালিকানা কখনো কেউ দাবী করতে পারবে না। অথচ আজ ভুমি দস্যু আকদ্দছ আলী এই সম্পতি তার মৌরশী সত্ব দাবী করছে ।
তিনি আরও বলেন- আমাদের এলাকার শান্তি শৃংঙ্খলা বিনষ্ট করে যাচ্ছে। এলাকার শান্তিপ্রিয় লোকদের ভয়ভীতি ও মামলার ভয় দেখাচ্ছে। এটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকার লোকজনদের ভয়ভীতি দেখায়। এ ব্যাপারে আমাদের সংসদ সদস্যকে আমরা তার বিষয় অবগত করেছি ।
মসজিদ কমিটির সহ সভাপতি হারুন মিয়া তার বক্তব্যে বলেন, গত ২৪ এপ্রিল আখদ্দছ আলী ওয়াকফকৃত সম্পতির মোতওয়াল্লী দাবী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৮৪/২০২৪ । সেই মামলায় সে নিজেকে মিথ্যা মোতওয়াল্লী দাবি করেছে। এখন আবার সে মৌরশী স্বত দাবী করে কিভাবে?
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জহির বলেন, মসজিদ মাদরাসার কমিটির লোকেরা সহকারী পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে মুছলেকা দিয়েছে এমন মিথ্যা গুজব এলাকায় ছড়িয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। সে সরকারের বিরুদ্ধেও অপ্রচার চালিয়ে বলছে, ওয়াকফকৃত তৎকালীন আমাদের মক্তব সরকার নাকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মক্তব বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ কোন সরকার আজ পযর্ন্ত কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে নি। ওয়াকফকৃত সেই মক্তব আজ সরকারী মাদরাসায় রূপান্তরিত হয়েছে। সেই মাদরাসা গভর্নিং বডি দ্বারা পরিচালিত, বডির সভাপতি এডিসি (অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক) ।
এছাড়াও বক্তরা বলেন, ভুমিদস্যূ আখদ্দছ আলী বিভিন্ন বক্তব্যে নিজে স্বীকার করেছে তার বাবার বাড়ী জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নে । এবং তার মায়ের বাড়ী মসজিদ মাদরাসা ভূমি থেকে ১ কিলোমিটার দক্ষিন পূর্বে । অথচ সে যে ওয়াকফকৃত বাড়ীতে অবস্থান করছে, যা মসজিদ মাদরাসা ভুমি থেকে অনুমান মাত্র ৫শ গজ পশ্চিম উত্তরে অবস্থিত । সেখানে সে হাইকোর্টের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ওয়াকফকৃত সম্পত্তিতে নতুন বাড়ী ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে জবরদখলর করে আছে । ওয়াকফকৃত বাড়ীসহ প্রায় ৩ একর ৭৭ শতাংশ সম্পতি উদ্ধারের স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের উধর্তন কতৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।#
Leave a Reply