ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি ::
সিলেট থেকে স্বপ্নের দেশ যুক্তরাজ্যে (লন্ডন) পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ আহসানুল করিম খন্দকার এখন জেল হাজতে। গত ২৭ জুন সিলেট বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চাইতে গেলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। তার পৈত্রিক নিবাস কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
মামলা ও বাদী সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের শিবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আহসানুল করিম খন্দকারের বিরুদ্ধে বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ আফতাব উদ্দিনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মামলায় (নং- ৩১৭/২০২৪) আহসানুল করিমের ছেলের নামও উঠে এসেছে। তার বিরুদ্ধেও আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
জানা যায়, পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে আহসানুল করিম বাদী আফতাব উদ্দিনের পুত্রবধূকে ইংল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পাঠানোর প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে গত ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে শিবগঞ্জ এলাকার তার বাসায় সাক্ষীদের উপস্থিতিতে একটি চুক্তিনামা সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ৪৫ দিনের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া শেষ করার শর্তে বাদী তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে মোট তিনটি চেকের মাধ্যমে উল্লিখিত পরিমাণ অর্থ প্রদান করেন।
পরবর্তীতে আহসানুল করিম “KURSK LIMITED” নামে একটি প্রতিষ্ঠানের একটি COS (Certificate of Sponsorship) লেটার প্রদান করেন, যেটি যাচাই করে ভুয়া বলে সন্দেহ তৈরি হয়। অভিযোগে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সঠিক নয়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে আহসানুল করিম অভিযোগের বিষয়ে সমঝোতার আশ্বাস দেন এবং টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পূবালী ও সাউথইস্ট ব্যাংকের তিনটি চেক প্রদান করেন।
তবে ২০২৪ সালের ২৬ জুন বাদী ওই চেকগুলো ব্যাংকে উপস্থাপন করলে তা অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে ডিজঅনার (বাউন্স) হয়। এরপর আহসানুল করিম পূর্বের লেনদেন অস্বীকার করেন এবং বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন।
আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্তে নামে এবং তদন্তে চুক্তিপত্র, চেক, ব্যাংক বিবরণী ও স্বাক্ষীদের জবানবন্দি সংগ্রহ করে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই (পিবিআই) আবু হানিফ ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর রিপোর্ট দাখিল করেন। রিপোর্টে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।
এ মামলায় আহসানুল করিম খন্দকার ছেলের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও তদন্তে উঠে এসেছে। তবে মামলার কার্যক্রম চলমান থাকায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো মন্তব্য করেননি সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে মামলার বাদী আফতাব উদ্দিন বলেন, আমার ছেলে লন্ডনে থাকেন। পুত্রবধূকে সেখানে পাঠানোর আশায় বিবাদীর সঙ্গে চুক্তি করি। চুক্তি অনুযায়ী অনেক টাকা পরিশোধ করলেও দীর্ঘদিনেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। পরে আইনি আশ্রয় নিতে বাধ্য হই। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের পরিচিত হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে আমি মনে করি। আমি বিশ্বাস করি, আদালত আমাকে ন্যায়বিচার দেবেন।
Leave a Reply