নিখোঁজ নেতার ত্যাগের উত্তরসূরি তাহসিনা রুশদীর লুনা – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান ফুলবাড়ীতে বিজিবি’র অভিযানে মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার সহকারি শিক্ষকদের সাটডাউন- বড়লেখায় কক্ষের তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ালেন অভিভাবকরা কুলাউড়ার মুরইছড়া  সীমান্তে  ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফের গুলিতে  যুবক নিহত কুলাউড়ায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের বার্ষিক টাউন হল মিটিং কর্মক্ষেত্রের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলতে হবে- ইউএনও মহিউদ্দিন বড়লেখায় প্রধান শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা প্রাক্তন ছাত্র গ্রেফতার

নিখোঁজ নেতার ত্যাগের উত্তরসূরি তাহসিনা রুশদীর লুনা

  • মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫

Manual6 Ad Code

আনোয়ার হো‌সেন র‌নি :: সিলেট-২ এই নামটা কেবল একটি নির্বাচনী আসনের পরিচয় নয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ত্যাগ, বেদনা ও সংগ্রামের এক অমর প্রতীক। এই মাটির জন্য নিখোঁজ হয়েছেন গণমানুষের প্রিয় নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী। তাঁর নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এই আসনটি শুধু রাজনীতির প্রতিযোগিতার মঞ্চ নয়—এটি হয়ে উঠেছে এক পরিবারের বেদনা, এক নেত্রীর সাহস এবং এক জাতির বিবেকের প্রতীক।

Manual8 Ad Code

এই আসনের প্রতিটি জনপদে, প্রতিটি চায়ের দোকানে, প্রতিটি গ্রামীণ মোড়ে এখনো উচ্চারিত হয় এক নাম—তাহসিনা রুশদীর লুনা। তিনি শুধু এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী নন, তিনি এক আন্দোলনের প্রতীক, এক সাহসী নারীর নাম, যিনি গুমের অন্ধকার ভেদ করে আলো জ্বালিয়েছেন দলের আশা ও ভালোবাসার প্রদীপে।

গুমের রাত ও অমানবিক সকাল ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিলের সেই কালো রাত—যে রাতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন করে যুক্ত হয় এক শব্দ: ‘ইলিয়াস গুম’। ঢাকার ধানমন্ডি থেকে নিখোঁজ হন এম ইলিয়াস আলী ও তাঁর ড্রাইভার আনসার। পরদিন সকালে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে শোক, ক্ষোভ ও হতবাক নীরবতা। সেই রাতের পর থেকে ইলিয়াস আলীর পরিবার আর আগের মতো থাকেনি। দল হতবুদ্ধি, কর্মীরা দিশেহারা, জনতা নীরব প্রতিবাদে ভরে তোলে সিলেট-২ এর প্রতিটি জনপদ। কিন্তু এই অমানবিক শোকের মাঝেও এক নারী ভেঙে পড়েননি। বরং দৃঢ়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সেই ভাঙা সময়ের মাঝখানে—তাহসিনা রুশদীর লুনা।

এক নারীর লড়াই—অন্ধকার ভেদ করে আলো জ্বালানো লুনা ইলিয়াস তখন এক সাধারণ নারী, সংসার, সন্তান ও পেশাগত দায়িত্বে ব্যস্ত। কিন্তু স্বামী গুমের পর তিনি হয়ে ওঠেন এক সংগ্রামী মুখ। যে নারী কখনো রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়াননি, তিনিই হয়ে উঠলেন দলীয় কর্মীদের অনুপ্রেরণা, নিপীড়িত মানুষের ভরসা, আর গুমবিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগের কণ্ঠস্বর।

তিনি বারবার বলেছেন—“ইলিয়াস আলীকে গুম করা গেছে, কিন্তু তাঁর আদর্শকে কখনো গুম করা যাবে না।”এই বিশ্বাসই তাঁকে ধরে রেখেছে। দমন-পীড়ন, মামলা, ভয়ভীতির মাঝেও তিনি থেমে যাননি। বরং প্রতিদিন আরও দৃঢ় হয়েছেন।

সিলেট-২ এর প্রতিটি ইউনিয়নে, প্রতিটি বাড়িতে তিনি পৌঁছেছেন—কখনো সহানুভূতি নিয়ে, কখনো প্রতিবাদের ভাষা হয়ে। রাজনীতিতে সুবিধাভোগ নয়, ত্যাগের অধ্যায় তাহসিনা রুশদীর লুনা চাইলে নিজের নিরাপদ জীবন বেছে নিতে পারতেন। চাকরি ছিল, সামাজিক অবস্থান ছিল, সন্তানদের দেখাশোনা ছিল তাঁর জীবনের কেন্দ্র। কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি বুঝেছিলেন—ইলিয়াস আলীর অসমাপ্ত লড়াই শেষ হয়নি, বরং শুরু হয়েছে নতুনভাবে। এই উপলব্ধি থেকেই তিনি রাজপথে নামেন। বিএনপির কঠিন সময়েও সিলেট-২ এর মাঠে ছিলেন দৃশ্যমান। দলীয় নেতাকর্মীরা যখন মামলায় জর্জরিত, আন্দোলন ব্যর্থতার হতাশায় ভুগছে—তখন লুনা হয়ে উঠেছেন আশার প্রতীক।

Manual1 Ad Code

তিনি কেবল রাজনৈতিক কর্মী নন, একজন “মমতাময়ী নেত্রী” যিনি সবার পাশে থেকে তাঁদের কষ্ট ভাগ করে নিয়েছেন।

Manual8 Ad Code

ইলিয়াস সৈনিকদের প্রেরণার উৎস বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরের প্রতিটি গ্রামে এখনো সকালের চায়ের কাপে উচ্চারিত হয়—“লুনা আপা আসছেন!”এই খবরেই প্রাণ ফিরে পান অনেক নেতা-কর্মী।তাঁর উপস্থিতি মানে সাহস, আশ্রয় ও ভালোবাসা। তিনি কাঁধে হাত রেখে বলে—“আমরা হার মানব না।”তাঁর চোখের অশ্রু হয়ে ওঠে অনুপ্রেরণার প্রতীক। সেই অশ্রু যেন বলে—

“ইলিয়াস আলী ফিরে আসবেন না হয়তো, কিন্তু তাঁর আদর্শ বেঁচে থাকবে প্রতিটি ইলিয়াস সৈনিকের ভেতর।” তারেক রহমানের প্রতি আস্থা: নেতৃত্বে আস্থার প্রতীক তাহসিনা রুশদীর লুনার রাজনৈতিক যাত্রা একা নয়। তাঁর নেতৃত্বের ভিত্তি তারুণ্যের নেতা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি গভীর আস্থা ও বিশ্বাস।

তিনি বারবার বলেছেন—“তারেক রহমান সাহেবই আমাদের দিকনির্দেশনা, আমাদের ভবিষ্যৎ।” এই বিশ্বাস তাঁকে রাজনীতিতে স্থিতিশীল করেছে।

তিনি কখনো দ্বিধাগ্রস্ত হননি, বরং তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেছেন নেতৃত্বের নতুন দৃষ্টান্ত—
একজন নারীও কিভাবে দৃঢ়তা, শোক ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে রাজনীতির চূড়ান্ত মানবিক রূপ ধারণ করতে পারেন।

“ঘুঘুদের” বিরুদ্ধে লুনার বার্তা সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট-২ আসন ঘিরে নানা প্রকার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী গোষ্ঠীর তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেউ কেউ হঠাৎ করেই নিজেদের ‘প্রার্থী’ ঘোষণা করে মাঠে নেমেছেন। এই প্রেক্ষাপটে লুনা ম্যাডাম বলেছেন—“আমাদের চারদিকে ঘুঘু বিরাজমান।”

এই বাক্যটি এখন সিলেট-২ এর মানুষের মুখে মুখে। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন—যাঁরা ত্যাগ না করে সুযোগের রাজনীতি করেন, তাঁরা আসলে এই আসনের আত্মাকে বোঝেন না। তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা—“স্যুট-টাই পরা ঘুঘুদের সিলেট-২ এ চাই না।”

এই কথা শুধু রাজনৈতিক বার্তা নয়, এটি এক প্রকার জনগণের আহ্বান—এই আসন যেন মৌসুমী পাখিদের হাতে না যায়, বরং ফিরে পায় তার প্রকৃত উত্তরাধিকার, ইলিয়াস আলীর স্বপ্নের ধারাবাহিকতা। মজলুম ইলিয়াস পরিবারের প্রতি দলের দায়িত্ব তাহসিনা রুশদীর লুনা কখনো নিজের জন্য কিছু চাননি। কিন্তু এই আসনের মানুষ চান—দল যেন এই পরিবারের পাশে দাঁড়ায়।

তাঁরা বিশ্বাস করেন, বিএনপির ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে যারা ত্যাগ করেছেন, তাঁদের সম্মান রক্ষা করাই দলের নৈতিক দায়িত্ব। এজন্যই সিলেট-২ এর কর্মীরা এক সুরে বলছেন—তারেক রহমান স্যার, আপনি অভিভাবক হোন মজলুম ইলিয়াস পরিবারের।”এই দাবি শুধু রাজনৈতিক নয়—এটি আবেগ, দায়িত্ব ও শ্রদ্ধার মিশেল। ইলিয়াস আলীর অসমাপ্ত সংগ্রামের উত্তরসূরি তাহসিনা রুশদীর লুনা নিজেই এখন এক প্রতীক। তিনি শুধু ইলিয়াস আলীর স্ত্রী নন—তিনি তাঁর আদর্শের উত্তরসূরি।

ইলিয়াস আলী যেমন গণমানুষের কণ্ঠস্বর ছিলেন, লুনা আজ সেই কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনি হয়ে উঠেছেন। তিনি দেখিয়েছেন—নারী মানেই দুর্বলতা নয়। নারীও রাজনীতির মাঠে নেতৃত্ব দিতে পারে, ত্যাগ করতে পারে, অনুপ্রেরণা হতে পারে।

মানুষের ভালোবাসায় ঘেরা এক নেত্রী বিশ্বনাথ-ওসমানীনগরের মানুষ তাঁকে শুধু রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে নয়, “আপা” বলে ডাকে। বন্যা, দারিদ্র্য কিংবা রাজনৈতিক দুঃসময়ে তিনি তাঁদের পাশে থেকেছেন। তিনি শুধু মঞ্চের বক্তা নন—তিনি মাঠের কর্মী, মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়া এক নাম। তাঁর বাড়ির দরজা সবসময় খোলা থাকে নেতাকর্মীদের জন্য। কেউ বিপদে পড়লে ফোন করেন—তিনি শোনেন, সাহায্য করেন, সাহস দেন।

এই কারণেই তাঁকে বলা হয়—“লুনা আপা মানে আশ্রয়।”রাজনীতি নয়, এক মানবিক আন্দোলনতাহসিনা রুশদীর লুনার রাজনীতি মূলত মানবিকতার রাজনীতি। তিনি শত্রু-মিত্র বিবেচনা না করে মানুষের কষ্টের পাশে দাঁড়াতে চান।

গুম, নির্যাতন, বঞ্চনা—সব কিছুর মধ্যেও তিনি আশা দেখেন, প্রেরণা দেন। তাঁর মুখে প্রায়ই শোনা যায়—“আমি রাজনীতিতে এসেছি প্রতিশোধ নিতে নয়, ইলিয়াস আলীর স্বপ্ন পূরণ করতে।”

এই এক লাইনেই লুকিয়ে আছে তাঁর সমগ্র জীবনদর্শন। ইলিয়াস সৈনিকদের শপথ
আজ সিলেট-২ এর প্রতিটি প্রজন্মের ইলিয়াস সৈনিকরা বলছেন—“আমরা ইলিয়াস সৈনিক, আমরা লড়ব, আমরা জিতব।”তাঁদের এই শপথ কেবল নির্বাচনের জয় নয়, এটি এক নৈতিক লড়াই—গুমবিরোধী আন্দোলনের জয়, ন্যায়বিচারের জয়, ভালোবাসার জয়। তাঁরা বিশ্বাস করেন, একদিন ইলিয়াস আলীর সত্য ফিরে আসবে, তাঁর পরিবারের ত্যাগ বৃথা যাবে না। আর সেই পথে নেতৃত্ব দেবেন তাহসিনা রুশদীর লুনা—যিনি প্রমাণ করেছেন, অন্ধকার যতই গভীর হোক, আলোর মশাল কখনো নিভে যায় না।

শেষ কথা: এক প্রতীকের নাম লুনা ইলিয়াস

আজ সিলেট-২ এর মানুষ জানে—এই আসন শুধু একটি রাজনৈতিক আসন নয়, এটি নিখোঁজ নেতাদের ত্যাগের প্রতীক। এটি এক পরিবারের অশ্রুর প্রতীক, এক নারীর সাহসের প্রতীক, এক জাতির বিবেকের প্রতীক। তাহসিনা রুশদীর লুনা সেই প্রতীকী শক্তিরই প্রতিফলন—যেখানে শোকের ভেতর জন্ম নেয় সাহস, হারানোর ভেতর জন্ম নেয় নতুন আশার আলো। তাঁর চোখে লুকানো অশ্রু আজও মনে করিয়ে দেয়—“ইলিয়াস আলীকে গুম করা যেতে পারে, কিন্তু তাঁর আদর্শকে নয়।”

Manual2 Ad Code

সিলেট-২ এখন শুধু রাজনীতির মঞ্চ নয়, এটি এক আন্দোলনের নাম। তাহসিনা রুশদীর লুনা সেই আন্দোলনের মুখ, হৃদয়ের ভেতরে জ্বলা আগুনের মশাল।তিনি আছেন—আশার প্রতীক হয়ে, ত্যাগের প্রতীক হয়ে। আর ইলিয়াস সৈনিকরা লড়ছে, জিতবেই—এই বিশ্বাসে।##

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!