বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের বৃহস্পতিবারের সাটডাউন কর্মসূচিতে প্রাথমিকের তৃতীয় দিনের বার্ষিক পরীক্ষা নিতে পারেননি প্রধান শিক্ষকরা। সকালেই সহকারি শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষককে পরীক্ষা নিতে কঠোরভাবে বাধা দেন। সকালের শিফটের (১ম ও ২য় শ্রেণি) পরীক্ষার্থীদের স্কুল ফটক থেকেই আন্দোলনকারি সহকারি শিক্ষকরা ফিরিয়ে দিয়ে কক্ষে তালা মেরে উপজেলা চত্তরে গিয়ে সমাবেশ করেন। উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাতেগুণা ২/৩ টি ব্যতিত বাকি সবগুলোতে পরীক্ষা নিতে দেয়নি সহকারি শিক্ষকরা।
ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার বিকেলের শিফটের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পরীক্ষা কক্ষে তালা দেখে বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেন। অভিভাবকরা কক্ষের তালা ভেঙ্গে তাদের ছেলে-মেয়েকে ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়িরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে প্রশাসন ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় ৬টি কক্ষে পরীক্ষা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক বদর উদ্দিন।
সরেজমিনে বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) পুরবী রাণী সিংহ-সহ সহকারি শিক্ষকরা সকালের শিফটের পরীক্ষা দিতে আসা ১ম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে না জানিয়ে বিদায় দিচ্ছেন। এই স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩০০ জন। সকাল সাড়ে দশটার দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য সহকারি শিক্ষকরা স্কুল তালা দিয়ে উপজেলা চত্তরে সমাবেশে যাচ্ছেন। সিংহগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল হোসেন জানান, প্রাক্তন ছাত্র ও অফিস সহায়ককে নিয়ে মঙ্গলবার ও বুধবার পরীক্ষা নিয়েছেন। আজকেও (বৃহস্পতিবার) যেভাবে হউক পরীক্ষা নিতেন। কিন্তু সহকারি শিক্ষকরা পরীক্ষা নিতে কড়াভাবে বাধা দিয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদেরও ফটক থেকে ফিরিয়ে দিয়ে তারা (সহকারি শিক্ষকরা) সমাবেশে চলে গেছেন। ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদর উদ্দিন জানান, সহকারি শিক্ষকরা সকালের শিফটের পরীক্ষা নিতে দেননি। স্কুলের পরীক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩শ’ এবং সহকারি শিক্ষক ১২ জন। তারা পরীক্ষার হলে তালা দিয়ে সমাবেশে চলে যান। বিকেলের শিফটের পরীক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকরা আসা শুরু করেছেন। পরীক্ষার হলগুলো তালা দেওয়া, কিভাবে পরীক্ষা নিবেন বলতেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উত্তেজিত হয়ে উঠেন। তারা স্কুলে বিক্ষোভ করেন এবং তালা ভেঙ্গে বাচ্চাদের ভেতরে নিয়ে বসান। পরীক্ষা নিতে চাপ প্রয়োগ করেন। তিনি অফিস সহায়ক, অভিভাবক ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ৬টি হলে পরীক্ষা নিয়েছেন।

এদিকে উপজেলার ১৫১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকদের তৃতীয় দিনের বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধা দেন। পরীক্ষার হলে তালা দিয়ে তারা উপজেলা পরিষদের সম্মুখে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় শিক্ষক নেতা মীর মুহিবুর রহমান, বড়লেখা প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম, সহসভাপতি সোহেল আহমদ চৌধুরী, ফরিদ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত নাথ, সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত পাল, ইমদাদুল হক, আলমগীর হোসেন, সাহেরা বেগম প্রমুখ।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) জোবায়ের আলম জানান, উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবারের বার্ষিক পরীক্ষা নিতে দেয়নি আন্দোলনকারি সহকারি শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব পালনে নানাভাবে বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টি, পরীক্ষার হলে তালা, পরীক্ষার্থীদের স্কুল গেট থেকে ফিরিয়ে দেওয়া এমনকি কিছু প্রধান শিক্ষককে হুমকি-ধমকি দেওয়ারও অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়গুলো উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply