নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি ::
উত্তর জনপদের মৎস্য ও শষ্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে ইউটিউব দেখে মাশরুম চাষে উদ্বুদ্ধ হওয়া শাহাজাদী মাশরুম চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে।
এই জনপদে কেউ মাশরুম চাষে উদ্বুদ্ধ হলে তাঁকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে থাকেন, তিনি হাতেকলমে প্রাথমিক প্রশিক্ষণও দেন। গৃহবধূ শাহাজাদী নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ৩ নম্বর আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিংসাড়া গ্রামের মো.বাবলুর রহমানের স্ত্রী।
দীর্ঘ সময় স্বামীর চাকুরি সুবাদে শাহাজাদীকে থাকতে হয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। দুই বছর আগে গ্রামে স্থায়ী হয়েছেন শাহাজাদী। শুয়ে-বসে জীবিকা নির্বাহ করতে স্বামীর একক ইনকামের সাথে নিজে কিছু করার ভাবনা থেকে ২০২৩ সালে ইউটিউবে মাশরুম চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি মাশরুম চাষে। তাঁর স্বপ্ন একজন সফল মাশরুম চাষী হতে।
বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোন প্রশিক্ষণ থাকলে তা নেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়েই মাশরুম চাষ শুরু করন শাহাজাদী। আত্রাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় বর্তমানে তার ৬ ফুট বাই ৯ ফুট আয়তনের মাশরুম প্রজেক্ট রয়েছে যা প্রায় দেড় লাখ টাকার সম্পদে উন্নীত হয়েছে। তার প্রজেক্টে এখন ৪০০ টি স্পূণ রয়েছে। প্রতিদিন ৩-৪ কেজি মাশরুম উৎপাদন হয় তার
মাশরুম প্রজেক্টে। কেজি ৩ শত টাকায় বিক্রি করেন উৎপাদিত মাশরুম।
প্রচুর ক্রেতা চাহিদা থাকলেও উৎপাদন কম হওয়ায় ক্রেতাদের হাতে চাহিদানুযায়ী মাশরুম সরবরাহ করতে পারছেন না তিনি। সব খরচ বাদ দিয়ে এখন মাসে ৫-৭ হাজার টাকা এবং বছরে প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা আয় করেন শাহাজাদী। প্রাথমিক অবস্থায় খুব বেশি লাভ না হলেও ক্রমান্বয়ে তা বাড়তে থাকায় খুশি শাহাজাদী। তিনি এই আয়েও নিজেকে সফল মাশরুম চাষী মনে করেন। তিনি একাই সামলান মাশরুম চাষ সংক্রান্ত সব কাজ।
মাশরুম চাষী শাহাজাদী বলেন, গ্রামে এমন কাজকে অনেকে মেনে নেননি তারপরও আমি এগিয়ে গিয়েছি কারো কথায় কর্ণপাত না করে। ‘আমি ইউটিউবে মাশরুম চাষের নানা ভিডিও দেখে মাশরুম চাষে উদ্ধুদ্ধ হই। এরপর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও আত্রাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় মাশরুম চাষ শুরু করি। আমি এ পর্যন্ত সরকারি কোন অনুদান বা কোন ট্রেনিং করার সুযোগ পায়নি।
তবে আত্রাইয়ে নতুন কেউ মাশরুম চাষে উদ্ধুদ্ধ হলে আমি তাদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করবো,যাতে করে মাশরুমের যেই চাহিদা রয়েছে তা পূরণ হয়। আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমার সফলতার পেছনে সার্বিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি।
মাশরুম চাষ খুবই সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, ‘আত্রাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাশরুম উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকে। মাশরুম প্রকল্পের আওতায় উদ্যোক্তা শাহাজাদীকে আমরা একটি চাষ ঘর,একটি মাশরুম উৎপাদন ঘর, মাশরুম উৎপাদনের জন্য আনুসাঙ্গিক সব শিখিয়ে দিয়েছি।
মাশরুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমশক্তি উন্নত করে, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হৃদরোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এতে ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকে, যা শরীরের সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখে।
তিনি আরো বলেন, স্বল্প পুঁজিতে ভালো মুনাফা অর্জনের জন্য মাশরুম চাষের বিকল্প নেই। যদি কোন উদ্যোক্তা মাশরুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে চায় তাহলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করা হবে। #
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply