স্টাফ রিপোর্টার ::
কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে চোরা কারবারীদের হামলায় চেরাগ আলী (৩২) নামক এক যুবক মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। স্থানীয় বিজিবির কাছে মাদক ও গরু পাচারের খবর দেয়ায় রোববার তার উপর এই হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় আহত চেরাগ আলীর ভগ্নিপতি (বোন জামাই) জামাল মিয়া বাদি হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া বর্ডার দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় একটি চোরাকারবারী চক্র গরু ও মাদকসহ বিভিন্ন ভারতীয় মালামাল পাচার করে আসছে। আর এই চোরা কারবারিদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বিজিবিকে সহায়তা করতেন কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্টিউলি গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে চেরাগ আলী। তথ্য মোতাবেক সেই চক্রের সদস্যদের অনেকসময় আটকও করেছেন মুরইছড়া ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। যারফলে স্থানীয় চোরা কারবারিদের সাথে চেরাগ আলীর বিরোধের সৃষ্টি হয়।
গত ১৩ ডিসেম্বর সকালে মুরইছড়া বাজারের অগ্রণী ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফিরছিলেন চেরাগ আলী। এসময় তুতবাড়ী বাজারের উত্তর পাশে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা পূর্ব টাট্টিউলি গ্রামের মঞ্জু মিয়া (২৭), আজাদ মিয়া (২৮), আব্দুস ছালাম (৫০), সুমন মিয়া (২৫), আলী হোসেন (৩৩) এবং আসাদ মিয়া (২৮) দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে চেরাগ আলীর উপর হামলা চালান। তাদের হাতে থাকা লোহার রড, দা ও বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিঠিয়ে চেরাগ আলীকে গুরুতর জখম করে ব্যাংক থেকে উত্তোলিত টাকা ও দামী মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। এসময় চেরাগ আলীর আর্তচিৎকারে বাজার ও আশপাশ বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা দ্রুতই পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজনসহ চেরাগ আলীর আত্মীয়-স্বজনরা তাকে উদ্ধার কুলাউড়া হাসপাতালে নিয়ে আসলে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় আহত চেরাগ আলীর ভগ্নিপতি (বোন জামাই) জামাল মিয়া বাদি হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিকে চোরা কারবারীদের হামলায় চেরাগ আলী এখনও হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
এব্যাপারে কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ রহমান আতিক জানান, একটি গরু ধরানো নিয়ে চেরাগ আলীর উপর হামলা চালানো হয়েছে। তবে, হামলাটি মারাত্বক হয়েছে, যা কারোরই কাম্য নয়। স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্যের মাধ্যমে তার চিকিৎসা চালানো হচ্ছে। চেরাগ আলী সুস্থ হয়ে আসলে দুই পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে শেষ করা হবে।
মুরইছড়া বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার আবদুল কাইয়ূম জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি। শুনেছি চেরাগ আলী আগে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বিজিবিকে সহায়তা করতেন। হয়তো পূর্বের শত্রুতা নিয়েই চোরা কারবারির কেউ তার উপর হামলা চালিয়েছে।
এব্যাপারে কুলাউড়া থানার এসআই (তদন্তকারী কর্মকর্তা) আব্দুর রহিম জানান, আহত চেরাগ আলীর বোন জামাই একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।#
Leave a Reply