এইবেলা, কুড়িগ্রাম ::
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ভেলুর খামার কেরামতিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসাটি ৩৪ বছর আগে এমপিওভুক্ত হলেও ২৫ বছর হতে বেতন বন্ধ থাকায় শিক্ষক কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা ক্ষেত্রে সফলতার স্বাক্ষর রেখে অসংখ্য শিক্ষার্থীদের জীবনে আলো ছড়িয়েছেন। ২০২০ সালে হাইকোট সকল বেতন স্থগিত আদেশ নিস্প্রতি করার জন্য রুল জারী করেন। তার পড়েও কোন সুরহা হয় নাই। মাদরাসাটিতে বর্তমানে প্রায় ২৮৫ শিক্ষার্থী রয়েছেন। এখানে ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ২ জন কর্মচারী রয়েছেন। ১৯৮৭ ইং সালে প্রতিষ্ঠার পর পরবর্তীতে ১৯৯৬ শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেতন বন্ধ করে দেয়ায় সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, ভেলুরখামার কেরামতিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসাটি এ অঞ্চলের ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে তিন ইউনিয়নের একমাত্র এমপিওভুক্ত একটি মহিলা মাদরাসা যা ১৯৮০ সালে প্রায় ২ একর ৬২ শতক জমির ওপর আবকাঠামো নির্মিত করে পাঠদান করে আসছে।
প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৬ সালে পাঠদানে অনুমতিপ্রাপ্ত হয়ে ১৯৮৬ সালে মাদরাসা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হয়। বর্তমানে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে চলছে এর শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষকের পাঠদানে ১৯৯৬ সালে দাখিল পরীক্ষায় শূন্য কোট হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রনালয় ১৯৯৬ সালেই বেতন ভাতাদি স্থগিত করেন।
পড়ে ২০০৯ সালে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের পরীক্ষা নিকটতম অন্য প্রতিষ্ঠানে দেয়ার অনুমতি দেন মিক্ষা মন্ত্রণালয় । এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সাল হতে দাখিল পাবলিক পরীক্ষায় অংশ করে ৮৫% ফলাফল করে আসছে। এছাড়াও এবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় নিজ মাদরাসা ও জেডিসি নিকটতম প্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফরাফল ভালো করে আসছে। ধারাবাহিক সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে মাদরাসা টি। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা আইসিটিসহ বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠ দিয়ে থাকেন।
এলাকাবাসী জানান, ভেলুরখামার কেরামতিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসা টি শিক্ষকদের এ পরিস্থিতিতে চাকরি জীবনের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করলেও সুখের দেখা পাননি বলে শিক্ষকরা জানিয়েছে। বর্তমানে তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এ প্রতিষ্ঠানের সুপার মোঃ মোস্তাফিজার রহমান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড সহ বহুবার প্রতিষ্ঠানের সমস্ত স্থগিত আদেশ প্রত্যহারে জন্য আবেদন করেন। তারই প্রেক্ষিতে, পর পর দু’বার প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে জমা দেওয়ার পরেও কোন সুরহা না পাওয়ায় মাদরাসার সুপার হাইকোটে একটি রিট মামলা দয়ের করেন। ২০২০ সালে হাইকোট সকল স্থগিত আাদেশ নিষ্পত্তি’র জন্য রুল জারী করেন। তার পরেও কোন সুরহা হয় নাই।
অত্র মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষিকা গন মোঃ নুরনবী, মোঃ রফিকুল মোঃ আতাউর রহমান, প্রতিমা রানী কল্পনা রানী বলেন, ২৫ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি। এই এলাকায় একমাত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় নারীরা শিক্ষিত হচ্ছে। আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় শত শত শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে বিভিন্ন সরকারী বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করছে অথচ শিক্ষকদের কপালে আজো জোটেনি বেতন ভাতাদি। তাই আমরা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সু দৃষ্টি কামনা করছি।
উক্ত মাদরাসার সভাপতি মোঃ আঃ হামিদ বলেন, মাদরাসাটির শিক্ষা পাঠদান সুন্দর শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার মান ভালো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোড় দাবী জানাচ্ছি শিক্ষকদের বেতন দেয়ার জন্য।
ভেলুর খামার কেরামতিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার মোঃ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কষ্ট করছেন। এ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের দ্রুত বেতন দেওয়ার জন্য আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করছি।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শামছুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কষ্ট করছেন। এ প্রতিষ্ঠানটির দ্রুত বেতন ভাতাদি দেয়া দরকার। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম ভালো।#
Leave a Reply