নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি ::
সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলা সবুজ প্রকৃতির আমাদের এ বাংলাদেশের উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ৮ ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠের বুকে এখন সবুজের সমারোহ। দিগন্তজুড়ে যেদিকে তাকাই শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজের সমারোহে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।
ইরি-বোরো চাষের শেষ মুহূর্তে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। উপজেলার প্রতিটি মাঠ এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারে ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ১৮ হাজার ৮শত ৮৫ হেক্ট জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তার অধিক জমিতে ইরি-বোরো চাষ করা হয়েছ। গত বছর শ্রমিক সংকটের কারণে এবারো ইরি-বোরো চাষ নিয়ে অনেকেই দ্বিধাগ্রস্তের শিকার হন।
তথ্যমতে, এবারে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ইরি-বোরো চাষ করা হয়েছে। আত্রাই এলাকা বন্যাদুর্গত এলাকা হিসেবে এ অঞ্চলের কৃষকরা এবার বোরো চাষকে সৌভাগ্য হিসেবে মনে করছেন। এদিকে উপজেলার ডিলারদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল ও সার পাওয়ায় কৃষকরা অনেকটা আশ্বস্ত হয়েছেন। নওগাঁ জেলার খাদ্য উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে আত্রাই উপজেলা।
এ ব্যাপারে উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক মো. আজাদ সরদার বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার আমরা অধিকহারে বোরো ধান চাষ করেছি। আশা করছি, এবার বোরো ধানে বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলার নওদুলি গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, ধান গাছে সময়মতো পানি পাওয়ায় এখন গাছ সবুজ বর্ণ ধারণ করেছে। চারিদিকে যেন সবুজের সমারোহ। যেদিকে তাকাই দৃষ্টি যেন জুড়িয়ে যায়। এবার বড় ধরনের ঝড় বা শীলা বৃষ্টি না হলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে আমরা অনেক উপকৃত হব এবং বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব বলে মনে করছি।
উপজেলার রসুলপুর গ্রামের ফাদিল হোসেন বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর আমি বেশি জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমাকে ধান চাষে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে আসছেন। সঠিক পরিচর্যা, আবহাওয়া ভালো থাকায় ও কীটপতঙ্গের আক্রমণ না হওয়ায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।
উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কেরামত আলী বলেন, ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন এবং কৃষকরা যেন বোরো চাষে কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের উপস্থিতি এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষি বিদ কে এম কাউছার হোসেন বলেন, অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সচেষ্ট হতে আমরা সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার আত্রাই এলাকার কোথাও মাজড়া পোকার আক্রমণ নেই। ফলে আমরা আশা করছি, এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। #
Leave a Reply