নিশ্চিহ্ন হলো রাজনগরের লীলা নাগের পৈত্রিক ভিটা নিশ্চিহ্ন হলো রাজনগরের লীলা নাগের পৈত্রিক ভিটা – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নাগেশ্বরীতে বিএনপির আহবায়কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ নিটার ক্যাম্পাসে সমকামীতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সরব অবস্থান  দিনে ‘অচল’ ড্রেজার রাতে সচল আত্রাইয়ে চুরি ও মাদক মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ৫ সংবাদ সম্মেলনে ওসমানীনগর বিএনপি : একটি মহলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ছাতকে ‘জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ’ ও আলোচনা সভা কুলাউড়ায় ফ্যাসিস্টযুক্ত বিএনপির কমিটি বাতিল কমলগঞ্জে শিক্ষিক খুনের ২ মাস : প্রধান আসামী অধরা : মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে ভিডিও বার্তায় বড়লেখায় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যানকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম : হামলাকারি গ্রেফতার জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কন্ঠে শপথ নিলেন কুলাউড়াবাসী

নিশ্চিহ্ন হলো রাজনগরের লীলা নাগের পৈত্রিক ভিটা

  • শনিবার, ১২ জুন, ২০২১

রাজনগর প্রতিনিধি ::

উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিকন্যা, নারী জাগরণের পথিকৃত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী লীলা নাগ। মৌলভীবাজারের রাজনগরে তাঁর পৈত্রিক বাড়ি দখলে রাখা হয়েছে, বাড়িটি উদ্ধার করে স্মৃতি সংরক্ষণের দাবি এলাকাবাসীর।

লীলা নাগের পৈত্রিক বাড়ি রাজনগর উপজেলার পাঁচগাওয়ে পৌঁছানোর পর, সরেজমিন দেখা যায় আগের কোন স্মৃতিচিহ্ন অবশিষ্ট নেই বাড়িটিতে। সুনসান নীরবতা বাড়ির চারিদিকে। এরমধ্যে দাড়িয়ে পৌরাণিক সাক্ষী দিচ্ছে শতবর্ষী রেইনট্রি।

বাড়িতে থাকা প্রাচীন এবং দৃষ্টিনন্দন বাংলো আদলের ঘরটিও আর নেই। নেই কোন স্থাপনা, চিহ্ন। অথচ এক/দেড় মাস আগেও প্রাচীন এ ঘরটি দাঁড়িয়ে ছিলো। বাড়িতে গিয়ে বর্তমানে যিনি বাড়ি দখল করে রেখেছেন আব্দুল মুনিম চৌধুরীকে না পাওয়া গেলেও, তার মা শামসুন্নাহার চৌধুরী কে পাওয়া যায়। যিনি মানবতা বিরোধী অপরাধী আলাউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী, তিনি জানালেন বাড়িটি ঝড়ে পড়ে গেছে, ভাঙা অংশগুলো সরিয়ে রেখেছেন তারা। তিনি জানান ৭০ বছর থেকে এ বাড়িতে তারা রয়েছেন, এবং এ বাড়ি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা রয়েছে।

স্থানীয় সচেতন মহল লেখক-গবেষকরা জানান, মানবতা বিরোধী অপরাধ মামলার অন্যতম আসামী, ১৯৭১ সালে পাঁচগাঁও গণহত্যায় জড়িত প্রয়াত আলাউদ্দিনের পরিবার বর্তমানে লীলা নাগের পৈত্রিক বাড়িটি ভোগ দখল করে আসছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই ২০১৮ সালে পাঁচগাঁও গণহত্যার সাথে চার ব্যক্তির জড়িত এবং মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছে। আলাউদ্দিন চৌধুরী রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁওয়ে অপহরণ, বন্দী, নির্যাতন, হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে জড়িত ছিলেন। এই অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু এর আগেই তিনি অক্টোবর ২০১৩ সালে মারা যাওয়ার কারণে অভিযোগে তার নাম উল্লেখ করা হয়নি।

সরকারি নথি থেকে জানা যায় লীলা নাগের পৈত্রিক বাড়িতে মোট ভূমি ছিলো ৫.৯৭ একর। যার মধ্যে একটি পুরানো বাংলো এবং একটি পুকুর রয়েছে। নিকটস্থ কুঞ্জলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৩৮ সালে লীলা নাগের মা কুঞ্জলতা নাগ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। পাকিস্থান শাসনামলে তারা বাড়িতে থেকে চলে গেলে ১৯৬৭ সালে আসামের করিমগঞ্জ থেকে আলাউদ্দিন চৌধুরী এসে বাড়িটি দখলে নেন।

১৯৬৭ সালে মহকুমা প্রশাসকের কাছে বাড়িটি লিজের জন্য ৫০/১৯৬৭ নং আবেদনে আলাউদ্দিন চৌধুরী ও আকমল আলী আবেদন করেন। কিন্তু আলাউদ্দিন চৌধুরী আকমল আলীর বিরুদ্ধে আপত্তি করেন। এর প্রেক্ষিতে ১৯৭৯ সালে আলাউদ্দিন মোট ১২টি এসএ দাগে ৪.৩৯ একর ভূমি লিজ পান। এর পরের বছর থেকে আলাউদ্দিন সরকারকে লিজ মানি পরিশোধ না করায় ইজারা বাতিল করে সরকার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়।

১৯৮৮ সালে আলাউদ্দিন আদালতে একটি স্বত্ত মামলা করেন। মামলা নং ১৪৫/১৯৮৮। কিন্তু আদালত এটি খারিজ করেন। ১৯৯০ সালে তিনি আপিল করেন। আপিল নং ১০৮/১৯৯০। সেটিও খারিজ হয়। তারপর ২০০০ সালে আলাউদ্দিন উচ্চ আদালতের হাইকোর্ট বিভাগে সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করেন যার নং ২৭২৫/২০০০।

পরবর্তীতে সরকার এই মামলার অবস্থা জানতে চাইলে আলাউদ্দিন ০৪/০১/২০০৯ তারিখে একটি তথ্যপত্র প্রদর্শন করেন। যেখানে দেখা যায় মামলাটি হাইকোর্ট বিভাগে অপ্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের জুনে জেলা প্রশাসনের ৮৯০ নং স্মারকে সরকারি কৌসুলী (জিপির) কাছে মামলার অগ্রগতি জানতে চাওয়া হলে এর তথ্যভিত্তিক কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম ছাত্রী লীলা নাগ ১৯০০ সালের ২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন, ১১ জুন তার ৫১তম মৃত্যু বার্ষিকী।

লীলা নাগ ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে এম.এ করার জন্যে ভর্তি হন। তার হাত ধরেই ঢাবিতে নারী শিক্ষার সূচনা। ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংগ্রহশালায় লীলা নাগের ছবিসহ এই তথ্যটির উল্লেখ আছে। তবে শুধু এই একটি কারণেই নয়, লীলা নাগ পরিচিত তার ঘটনাবহুল সংগ্রামী জীবনের কারণে। তিনি একাধারে ছিলেন একজন সাংবাদিক, জনহিতৈষী ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় ব্যক্তিত্ব। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সহকারী হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। লীলা নাগের পিতা গিরীশচন্দ্র নাগ ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট। মা কুঞ্জলতা ছিলেন গৃহিনী। ১৯৩৯ সালে বিপ্লবী অনিল রায়কে বিয়ে করেন লীলা। বিয়ের পর তার নাম হয় লীলাবতী রায়।#

Curtzy-eyenewsmb

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews