বড়লেখা ও কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::
ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। সীমান্ত এলাকা থেকে একের পর এক বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে আটকের ঘটনায় দুই দেশের সীমান্ত অনেকটা অরক্ষিত থাকারই প্রমাণ দিচ্ছে। শনিবার ভারতের আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার হরিনগর এলাকায় লিটন ভৌমিজ নামক এক বাংলাদেশী যুবক ও করিমগঞ্জ জেলার নিলামবাজার এলাকা থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন শেফালী বিহারী নামক বাংলাদেশী যুবতীসহ ২ বাংলাদেশীকে আসামের সমাজকর্মীদের দ্বারা উদ্ধারের খবর প্রকাশ করেছে সেখানকার বিভিন্ন গণমাধ্যম । উদ্ধার যুবকের বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হলেও মানসিক ভারসাম্যহীন যুবতীর ঠিকানা এখনও নিশ্চিত হয়নি উদ্ধারকারীরা। উদ্ধার হওয়া অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা সমাজকর্মীদের বলেছে খেলার ছলে তারা কুলাউড়া ও শ্রীমঙ্গলের সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। ভারত কিংবা বাংলাদেশের কোনো সীমান্তরক্ষীর বাধার সম্মুখিন হয়নি বা কাউকে তারা দেখেনি।
ধারণা করা হচ্ছে এরা দুইজনই কুলাউড়া, বড়লেখা কিংবা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার যে কোন এক সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে।
ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকার রবিনহুড আর্মি নামক সংঘঠনের কর্মী দেবজ্যোতি দেব রায় জানান, সীমান্ত জেলা থেকে অবশ্য এদের ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী, আসাম পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেনি। কথাবার্তা এবং চলাফেরার মধ্যে অসামঞ্জস্য প্রত্যক্ষ করে এদের উদ্ধার করে একটি সামাজিক সংঘটনের কর্মীরা। কাছাড় জেলার হরিনগর থেকে যে ছেলেটি উদ্ধার হয়েছে তার নাম লিটন ভৌমিজ (২৮)। সে সিলেট জেলার তারাপুর চা বাগানের মৃত রাম ভৌমিজ ও রিনা ভৌমিজের ছেলে। সিলেট থেকে তার নাম ঠিকানা নিশ্চিত করেছেন তার ভাই মিলন ভৌমিজ। শনিবার দুপুরে সিলেট থেকে ভিডিও বার্তার লিটনের মা, ভাই এবং বোন জানিয়েছেন, বিগত ৫ বছর আগে মৌলভীবাজারের রাজনগর চা বাগানের রসানাতলা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় লিটন। এরপর এলাকার সবকটি চা বাগান এলাকায় খোঁজেও না পেয়ে থানায় জিডি করেন। কিন্তু দীর্ঘদিনে তার সন্ধান মেলেনি। হারানো ছেলেকে নিজের বুকে ফিরে পেতে ভারত বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্জি রেখেছেন লিটনের মা রিনা ভৌমিজ।
অপরদিকে শুক্রবার একই রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার নিলামবাজার থেকে উদ্ধার বাংলাদেশী যুবতী শেফালি বিহারী (২০) কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। শেফালি জানিয়েছে, তার বাড়ি শ্রীমঙ্গলের গাজীপুর চা বাগানে। তার বাবার নাম শ্যামল বিহারী এবং মায়ের নাম লক্ষী বিহারী। তবে উদ্ধারকারী সমাজকর্মীরা এখনও তার বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হতে পারেনি।
এ ব্যাপারে অপর এক সমাজকর্মী জানান, উদ্ধার দুইজন বাংলাদেশী নাগরিকই মানসিক বিপর্যস্ত। উভয়ের বিষয়ে আসামের দুই জেলার প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি আশাবাদী, দুইজন মানসিক রোগীর জন্য নিশ্চয় প্রশাসন বিহিত ব্যবস্থা নিবে। ততক্ষণ পর্যন্ত এরা তাদের রবিনহুড আর্মির পক্ষ থেকে কোন এক শেল্টার হোমে রাখার ব্যবস্থা করবে।#
Leave a Reply