কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:: করোনাকালীন দ্বিতীয় দফায় সাংবাদিকদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্রদান ও সাংবাদিক তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মৌলভীবাজার জেলা পর্যায়ে একই ব্যক্তি দুই পত্রিকার নামে দু’বারা ও একই পত্রিকায় জেলা প্রতিনিধি ৩ জনের নাম লিখিয়ে ১০ হাজার হারে টাকা প্রাপ্ত হয়েছেন। এতে মফস্বল পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় জেলায় ৪৯ জন গণমাধ্যম কর্মীকে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার চেক প্রদান করেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তার তালিকায় জেলার কতিপয় সিনিয়র সাংবাদিক নেতাদের সিন্ডিকেটে নিজ নিজ প্রতিষ্টানের পছন্দের সাংবাদিকদের নাম দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে করোনাকালীন প্রকৃত অনেক সাংবাদিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করলেও তাদের নামের কোন তালিকা নেই। পেশাদার সাংবাদিক নয় এমন লোকও তালিকায় রয়েছে।
অন্যদিকে মৌলভীবাজারে অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত বাংলার দিন ও মৌলভীবাজার বার্তার সম্পাদক বকশি ইকবাল আহমদ এর দুই পত্রিকার নামে ৮ জনকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এদের অনেকেই সাংবাদিক হিসাবে কোন পরিচিতি নেই। পত্রিকা দু’টির স্টাফ রিপোর্টর, প্রধান প্রতিবেদক এসব নানা পদ ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার টাকা প্রাপ্ত হয়েছেন। দৈনিক মৌমাছির কন্ঠ পত্রিকায়ও যারা প্রকৃত সাংবাদিকতায় নেই এমন ৩ জনের নামে টাকা প্রদান করা হয়েছে। সাপ্তাহিক পাতাকুঁড়ির দেশ পত্রিকারও অনুরূপ ২জনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। সাংবাদিক তালিকায় এসব ব্যক্তিদের মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব, মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব, জেলা সাংবাদিক ফোরামের নেতারা সুপারিশ করেন। এসব অনিয়ম বিষয়ে সোসাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা ও মফস্বল সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল মছব্বির বলেন, বিগত ৩১ বছর ধরে মফস্বলে সাংবাদিকতা করে আসলেও প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা পাইনি। জেলা পর্যায়ে অখ্যাত প্রতিনিধিদের নাম দিয়ে সিন্ডিকেট করে টাকা নিয়েছেন, এটি খুবই দু:খজনক। কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক সমিতি কমলগঞ্জ ইউনিটের সভাপতি নূরুল মোহাইমীন মিল্টন বলেন, তালিকায় অনিয়ম এবং প্রকৃত সাংবাদিকতায় নেই এমন ব্যক্তিরাও প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন। অথচ যারা করোনাকালেও মাঠেঘাটে কর্মরত ছিলেন তাদের নাম নেই। এতে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক এই সহায়তা ম্লান হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত হয়েও আবেদন করার পরও কমলগঞ্জের সাংবাদিক আলমগীর হোসেন আজো আর্থিক সহায়তা পাননি। এটি মোটেও ঠিক হয়নি।
মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্ত সাংবাদিকদের বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের কোন সদস্য ছাড়া আমরা কাউকে সুপারিশ করিনি। জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি বকশি ইকবাল আহমদ বলেন, আমি আমার পত্রিকা ও সংগঠন থেকে কয়েকজনকে সুপারিশ করেছি।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা তথ্য কর্মকর্তা ও আর্থিক সহায়তা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি কিভাবে হয়েছে আমার জানা নয়। সম্পূর্ণ বিষয়টি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে করা হয়েছে।
অভিযোগ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, যাচাই বাছাইয়ের বিষয়টি প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক সংগঠনের দেখার কথা। স্ব স্ব সংগঠনের সুপারিশের প্রেক্ষিতে আবেদন পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টের উপপরিচালক (প্রশাসনও অর্থ) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কবির বলেন, জেলা প্রশাসক ও প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সুপারিশ থাকায় আমরা অনুদানের চেক প্রদান করেছি।
জেএইচজে / এইবেলা
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply