জুড়ী প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে এক ভাড়াটিয়া কর্তৃক দোকান কোঠা জোরপূর্বক দখলের পায়তারায় লিপ্ত হয়ে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে। অভিযোগকারি ভুক্তভোগী হলেন উপজেলা সদরের জাঙ্গিরাই গ্রামের বাসিন্দা, জাঙ্গিরাই দাখিল মাদ্রাসার সামনে অবস্হিত মজিদ মার্কেটের মালিক আব্দুল মজিদ।
আজ মঙ্গলবার (২১ শে সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা প্রেসক্লাবের অস্হায়ী কার্যালয়ে আব্দুল মজিদের পুত্র নাজির হোসেন লিখিত এক অভিযোগে বলেন, অত্যান্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম।আমি একজন প্রবাসী, আমার পরিবারের সকল সদস্য আইন মান্যকারী সহজ সরল মানুষ। পক্ষান্তরে আমার পৈতৃক সম্পত্তির উপর নির্মিত মজিদ মার্কেটে স্থানীয় বাসিন্দা জাঙ্গীরাই নিবাসী মৃত: জলকু মিয়ার পুত্র জুড়ী থানা পুলিশের খাতায় তালিকাভুক্ত দালাল আং জব্বার একটি দোকান কোঠা ভাড়া নিয়ে ফার্নিচার ব্যবসা শুরু করে। ৩-৪ বছর নিয়মিত ভাড়া দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া অবস্থায় হঠাৎ করে মাসিক ভাড়া দিতে গড়িমসি শুরু করে। আমরা ৬ ভাই। সবাই রেমিটেন্স যোদ্ধা। দীর্ঘদিন থেকে প্রবাসে থাকি। আমার বৃদ্ধ বাবা ভাড়াটিয়া জব্বারকে ভাড়া পরিশোধ করার জন্য বারবার তাগদা দিলেও সে কর্নপাত করেনা। আমরা নিরীহ মানুষ। সে এলাকার চিহ্নিত একজন বাটপার। সে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নিজেকে একজন ইউপি সদস্য (মেম্বার) পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটাতে চায়। সে একজন মিথ্যাবাদী, প্রতারক, অন্যের সম্পদ লুন্টনকারী ও মাদক সেবনকারী। সে আমার পিতার অনুমতি ছাড়া আমার পিতার নামের মজিদ মার্কেটের পিছনে জোর পূর্বক টিনসেড দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করে কারখানার নামে উঠতি বয়সী যুবকদের নিয়ে সেখানে দিনরাত মন, জুয়া ও ইয়াবা সেবন করে যাচ্ছে। ভয়ে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলেনা। আমার বৃদ্ধ বাবা বাধা দিলে সে মামলা দিয়ে উচিত শিক্ষা দিবে বলে হুমকি দেয়। আমরা বাড়ীতে না থাকায় তার ইচ্ছে মতো আমাদের মালিকানা দোকানে ফার্নিচার ব্যবসার আড়ালে এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও আব্দুল জব্বার আমাদের কে বার বার হুমকি দিচ্ছে। আমার ছোট ভাইয়ের কর্মস্থল কাতার গমন যে কোন মূল্যে ঠেকাবে বলে সে বলে বেড়াচ্ছে। একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসী হিসেবে আপনাদের মাধ্যমে এর প্রতিকার কামনা করি। গত ২৮মার্চ ২০২১ ইং তারিখে আমার সৌদি প্রবাসী দুই ভাই ছুটিতে দেশে আসেন। আসার পর থেকে ভাড়াটিয়া দোকানদার আং জব্বারকে ভাড়া পরিশোধ করে দোকান ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করিলে নতুন ভাবে সে হয়রানির নতুন ফন্দি পাতে। জব্বার একজন চতুর ও বাটপার লোক। সে আমার ভাইদ্বয় যাতে ছুটি থেকে বিদেশে যেতে না পারে, সে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে গত ৩রা সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং রাতের আধারে আমার পৈতৃক সম্মত্তি মজিদ মার্কেটের পিছনের কারখানা নামক মাদকের আড্ডা খানায় জব্বার তার সাঙ্গ পাঙ্গ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। পরদিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জব্বার তার কারখানা থেকে সকল মালামাল রাতে সরিয়ে নিয়ে আমাদের পরিবারকে হয়রানির উদ্দ্যেশে নিজেই আগুন ধরিয়েছে। পরদিন জব্বার জুড়ী থানায় গিয়ে আমার সৌদি প্রবাসী দুই ভাইকে আসামী করে মামলা করতে চাইলে পুলিশ ষড়যন্ত্রের বিষয়টি জানতে পেরে মামলা গ্রহণ করেন নাই। পরে সে আমার দুই ভাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকানোর অসৎ উদ্দ্যেশ্যে গত ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২১ইং তারিখ সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, মৌলভীবাজার বরাবর একখানা অভিযোগ দায়ের করে (যার নং ৭৮/২০২১ইং)। সে মামলার এজাহারে ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমাদের পারিবারিক বিরোধের জেরে আগুনের ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছে। আমাদের পরিবারের মধ্যে কোন বিরোধ নাই। আমরা সকল ভাই বোন আমাদের পিতার কথামতো চলাফেরা করি।
আসল ঘটনা হলো, সে থানার তালিকা ভুক্ত একজন দালাল ও বাটপার। পুলিশ তার চরিত্র সর্ম্পকে আগে থেকেই অবগত থাকায় তার মামলা গ্রহণ করে নাই।
তিনি বলেন,আমরা নিরুপায় হয়ে আপনাদের শরনাপন্ন হলাম। আমাদের পরিবারকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করে ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন লোকজনের নিকট আপোষ মিমাংশা করার প্রস্তাব দিয়ে বড় অংকের চাঁদা দাবী করছে। তার অভ্যাস সম্পর্কে এলাকার সর্বস্থরের মানুষের জানা আছে, তার অপকর্মের শেষ নাই। তার অপকর্মে অতিষ্ট হয়ে বিভিন্ন মানুষ হয়রানির স্বীকার হয়েছে। গত ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং অনুষ্ঠিত উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বাটপার জব্বারের বিরুদ্ধে কমিটির সদস্যগণ আমাদের পৈতৃক সম্মত্তি দখল করে মিথ্যা মামলা ও ভাড়া না দিয়ে জোর পূর্বক দোকানে অবস্থান করার বিষয় নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। গত ১৫/০৮/২০২১ইং তারিখে আমাদের জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের ও মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তার অপকর্ম নিয়ে সদস্যগণ আলোচনা করেন।আমাদের ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্যের নাম আব্দুল জব্বার।নামের সাথে মিল থাকায় দালাল জব্বার নিজেকে একজন ইউপি সদস্য দাবী করে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করে আসছে। এধরণের ও একটি অভিযোগ পাওয়া যায়।
নিজের কোটি টাকার সম্পদ নিজে কেউ আগুন দিতে পারে? সবকিছুতে ষড়যন্ত্র। ঘটনার পরদিন ৪ঠা সেপ্টেম্বর জাতীয় এক দৈনিক পত্রিকায় “জব্বারের ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন ভেস্তে গেল আগুনে” শীর্ষক একটি মাত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। জনৈক জুড়ী প্রতিনিধিকে আগে থেকেই ম্যানেজ করে একটি মাত্র সংবাদ ফলাও করে প্রকাশ করানো হয়। এতে তার মোহাম্মদীয়া ফার্নিচার নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুনে পুড়িয়ে যাওয়ার সাথে আমাদের পারিবারিক বিরোধের কথা লিখা হয়েছে। এছাড়া সে গত ২০১৯ সালে ও একবার আগুন দিয়ে নিজে ষড়যন্ত্র শুরু করে। আমরা দোকানের মালিক পক্ষ যদি এহেন কাজে জড়িত থাকি। তাহলে সে আমাদের ভাড়াটিয়া তাকে বারবার অনুরোধ করার পরও কেনো দোকান কোঠা ছেড়ে যেতে চায়না। মূলত তার অসৎ উদ্দ্যেশে সে আমাদের দোকান ভিটে জোরপূর্বক দখল করতে চায়। একজন সাংবাদিক হিসেবে যেকোন ঘটনার পিছনের রহস্য জানার দরকার আছে বলে আমি মনে করি।। থানার পুলিশের তালিকাভূক্ত একজন দালালের দোকানে আগুন রহস্য না জেনে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ করায় তার নিন্দা জানাই। আমার ছোট আরেক ভাই ঘটনার পরে আমার বৃদ্ধ বাবার দুঃশ্চিন্তা দূর করতে অনেক কষ্ঠ করে দ্রুত দেশে আসে। তাকে ও হুমকি ভয় ভীতি দেখাচ্ছে।আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি। যাতে দ্রুত দালাল জব্বারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে আমাদের পরিবারের সকল শান্তিতে থাকতে পারি।
এ সময় উপস্হিত ছিলেন মজিদ মার্কেটের মালিক মোঃ আব্দুল মজিদ,বিশিষ্ট সমাজসেবক সাইফ উদ্দিন মানিক(খুশমান),আব্দুল মজিদের পুত্র প্রবাসী হাবিবুর রহমান, মুরব্বি মোঃ আব্দুল কাদির ও আব্দুর রব প্রমূখ।
Leave a Reply