জুড়ীর লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনেরে ভেতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ :টার্গেট হাজার কোটি টাকা মূল্যের সেগুন বাগান জুড়ীর লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনেরে ভেতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ :টার্গেট হাজার কোটি টাকা মূল্যের সেগুন বাগান – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শ্রীমঙ্গল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র জনবল সংকট ও তহবিলের ঘাটতির কারণে স্বাস্থ্য সেবা ও এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ব্যাহত হচ্ছে আত্রাইয়ে মহাসড়কে ঝরল এক এনজিও কর্মীর প্রাণ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আত্রাইয়ে তিন পদে ১৬ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল কুলাউড়ায় দুই নেত্রীর লড়াইয়ে কে হাসবেন শেষ হাসি? প্রকপ্ল পরিদর্শণে কুলাউড়ায় ইউনিসেফ ওয়াশ ন্যাশনাল কনসালটেন্ট কমলগঞ্জে কৃষকদের মধ্যে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন ও গাছের চারা বিতরণ লন্ডনে বড়লেখা ফাউন্ডেশন ইউ.কে নেতৃবৃন্দের সাথে ব্যবসায়ি সাইদুল ইসলামের মতবিনিময় জুড়ীতে স্থলবন্দর চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের এলাকা পরিদর্শন বড়লেখা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নিয়াজ উদ্দীন কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান কুলাউড়ায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ৩ জনকে জরিমানা

জুড়ীর লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনেরে ভেতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ :টার্গেট হাজার কোটি টাকা মূল্যের সেগুন বাগান

  • রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২২

আজিজুল ইসলাম  :: বনবিভাগের বাঁধা ৩ দফা বাঁধা উপেক্ষা করে সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি)। ২১এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকে রাস্তা পাকাকরণের কাজ শুরু হয়েছে। এনিয়ে দু’বিভাগের মধ্যে চলছে দ্বন্দ্ব। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলায় সংরক্ষিত সেগুনটিলার মধ্য দিয়ে রাস্তা নির্মাণ নিয়ে এলজিইডি ও বনবিভাগ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।

বন বিভাগের দাবি, রাস্তাাটি নির্মাণ করা হলে বনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি পাচার হয়ে যাবে হাজার কোটি টাকা মূল্যের সেগুন গাছ। স্থানীয় সরকার বিভাগ বলছে আমরা উপরের নির্দেশ পেয়েছি কাজ বাস্তবায়নের।

এলজিইডি ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লাঠিটিলা এলাকায় লাঠিছড়া থেকে লালছড়া হয়ে রুপাছড়া পর্যন্ত কাঁচা সড়কের শুরু থেকে এক কিলোমিটার জায়গা পাকাকরণ কাজের জন্য এলজিইডি দরপত্র আহ্বান করে। প্রায় ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্যারাডাইস কনস্ট্রাকশন নামের স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। ২ এপ্রিল থেকে কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা সম্পন্ন হওয়ার কথা। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের জন্য সড়কের পাশে ইট স্তুপ করতে শুরু করলে বন বিভাগের লোকজন খোঁজ নিয়ে রাস্তাায় কাজের বিষয়টি জানতে পারে।
বন বিভাগের স্থানীয় লাঠিটিলা বিটের ফরেস্টার সালাহ উদ্দিন এ ব্যাপারে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ও সর্বশেষ গত ১০ এপ্রিল এলজিইডি জুড়ী উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলীর কাছে পৃথক দৃ’টি চিঠি দেন। এছাড়া জুড়ী রেঞ্জের বন কর্মর্কার্তা মো. আলাউদ্দিন কাজ বন্ধ করার চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি বনভুমির মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তের কপিও সংযুক্ত করেন। তারা রাস্তাটির কাজের দরপত্র আহ্বানের আগে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো পরামর্শ বা অনুমতি নেয়া হয়নি বলে উল্লেখ করেন।

বন বিভাগ জানায়, লাঠিটিলা বনের আয়তন ৫ হাজার ৬৩০ দশমিক ৪০ একর। সেখানে প্রাকৃতিক বন, সৃজিত বিভিন্ন ধরনের বনজ গাছের বাগান, বিশেষ করে সেগুন বাগান, বাঁশমহাল ও বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রাণী আছে। লাঠিটিলা সেগুন বাগানে ৭০ থেকে ৮০ হাজারেরও বেশি পরিপক্ক সেগুন গাছ রয়েছে। যার প্রতিটির বাজার মূল্য কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা। ফলে লাঠিটিলার শুধু সেগুন বাগানের মূল্য দাঁড়াবে কয়েক হাজার কোটি টাকা।

স্থানীয় লোকজনের মতে, রাস্তা পাকাকরণের নেপথ্যে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের একটি প্রভাবশালী মহল। সেগুন বাগানের এই হাজার কোটি টাকার সেগুনই এই রাস্তা পাকাকরণের মুল টার্গেট। রাস্তা পাকা হলে রাতে আধারে গাড়ীতে করে গাছ পাচার করা সহজ হবে। স্থানীয় লোকজনের চলাচলের অযুহাতে রাস্তাটি পাকা করা হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় লোকজন এই পরিবেশেই অভ্যস্থ। এই রাস্তা পাকার চেয়ে কাচা রাস্তায় চলাচল করা সহজ বলে জানান।

বন বিভাগ জানায়, বনভূমির মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের আগে বন বিভাগের মাধ্যমে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নেয়ার কথা বলা হয়। এ ছাড়া সব উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রাখতে বলা হয়। পরে সভার কার্যবিবরণীর বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের চিঠি দেয়া হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্যারাডাইস কনস্ট্রাকশনের মালিক সাইদুল ইসলাম ২১ এপ্রিল থেকে রাস্তার কাজ শরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বনবিভাগের বাঁধার কারণে কাজ বন্ধ ছিলো। তিনি কাজ করার নির্দেশ পেয়ে কাজ শুরু করেছেন।

বন বিভাগের জুড়ীর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে রাস্তার কাজের ব্যাপারে তাঁদের কাছ থেকে আগে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। এ ছাড়া রাস্তাটি হলে ওই এলাকার পুরোনো ও পরিপক্ক সেগুন বাগান রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। কাঠ চোরাকারবারিদের তৎপরতা বেড়ে যাবে। এ কারণে তাঁরা কাজ বন্ধ রাখতে চিঠি দিয়েছেন। কাজও বন্ধ ছিলো। কিভাবে আবার কাজ শুরু হচ্ছে এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তবে কাজ বন্ধ রাথার জন্য আবারও চিঠি দেবেন।

তবে এলজিইডির জুড়ী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল মতিন জানান, রাস্তাটি যে বন এলাকায় পড়েছে, সেটি তাঁরা আগে জানতেন না। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী স্থানীয় মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলা) আসনের সাংসদ মো. শাহাব উদ্দিনের অনানুষ্ঠানিক চিঠির (ডিও লেটার) পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তাটির কাজের উদ্যোগ নেয়া হয়।

বনবিভাগের আপত্তির ব্যাপারে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশ পেয়েই কাজ শুরু করা হয়েছে।

এলজিইডি মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আজিম উদ্দিন জানান, তিনি এলাকায় যাননি। মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশেই কাজ শুরু হয়েছে। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়েছে কি-না? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আপনি মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলতে পারেন। তবে পরিবেশকে অক্ষুন্ন রেখে কাজ বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান।#

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews