বড়লেখা প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় উপজেলার বেলাগাও গ্রামের সুমি আক্তার (২৪) নামে এক বিধবা যুবতীকে কুপিয়ে জখম করেছে সায়েল আহমদ ওরফে শাকিল (২২) নামক যুবক। সে উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর কুচাইরতল গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে। এঘটনায় ভুক্তভোগীর মামলায় শুক্রবার ভোরে পুলিশ অভিযুক্ত শাকিল ও তার ভগ্নিপতি লুৎফুর রহমানকে গ্রেফতার করে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও নির্যাতিতার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার সুমি আক্তারের স্বামী মারা গেলে সে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে দিনমজুর বাবার বাড়ীতে আশ্রয় নেয। অভাবের কারণে সে ভবানীগঞ্জ বাজারের একটি পার্লারে কাজ নেয়। পার্লারে আসা যাওয়ার পথে সায়েল আহমদ উরফে শাকিলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে সুমির দিকে। সে প্রায়ই রাস্তা পেয়ে উত্ত্যক্ত ও কু-প্রস্তাব দিত। এতে কোন ভাবেই সুমি সাড়া দেয়নি। এতে সে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকে। সে তার স্বার্থ চরিতার্থ করার সুযোগ খোঁজতে থাকে। গত ৮ আগস্ট একা পেয়ে সুমির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে তা ফেরত দেয়ার কথা বলে সুমিকে সায়েল জুড়ী রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন তার বাসার সামনে আসতে বলে। সুমি সেখানে গেলে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা সায়েল ও তার ভগ্নিপতি টেনে হেঁচড়ে তাকে বাসার ভিতরে নিয়ে দরজা আটকিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে সায়েল ছুরি দিয়ে সুমির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এসময় সুমির চিৎকার শুনেও ভয়ে কেউ তাকে উদ্ধারে এগিয়ে যায়নি। এতে সুমি মারাত্মক আহত হলে সায়েলের বোন রিনা বেগম (২৮) তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে পালিয়ে যায়। সুমির অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে সে পিত্রালয়ে ফিরে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় তার উপর পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শাকিলসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
জুড়ী থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, নির্যাতিতা মেয়েটি বৃহস্পতিবার রাতে থানায় এসে ঘটনার বর্ণনা দিলে তাৎক্ষণিক মামলা নেন। শুক্রবার ভোরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শালা-দুলাভাইকে গ্রেফতার করে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
Leave a Reply