ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি :: সিলেটের ওসমানীনগরে আলোচিত বুরুঙ্গা ইউপির তিলাপাড়া শেখ ফজিলাতুন্নেছা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শায়েখুল ইসলাম হত্যা মামলায় আসামি একই মাদ্রাসার প্রভাষক লুৎফুর রহমানকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আদালত আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি লুৎফুর রহমান একই মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি লুৎফুর রহমান সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ফরিদপুর গ্রামের মৃত তাহির আলীর ছেলে।
গত সোমবার সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে হত্যায় প্রভাষকের মৃত্যুদন্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন, আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন।
আদালত সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা শায়েখুল ইসলাম সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বুরুঙ্গা ইউপির তিলপাড়া শেখ ফজিলতুন্নেছা ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদে কর্মরত ছিলেন। হত্যাকান্ডের পূর্বে প্রভাষকের বিরুদ্ধে কর্তব্য অবহেলা, অসদাচরণ ও ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণের জন্য আইনি পদক্ষেপ নেন অধ্যক্ষ মাওলানা শায়খুল ইসলাম। এ ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রভাষক লুৎফুর রহমান সিলেটের বালাগঞ্জ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা (নং-২২/২০১৫) দায়ের করেন। অসদাচরণ না করার অঙ্গীকার করে এক পর্যায়ে পুনরায় চাকরিতে যোগদান করেন প্রভাষক লুৎফুর রহমান। চাকরীতে পুনরায় যোগদান করেও তার আচরণের পরিবর্তন হয়নি। ব্যাপারটি অধ্যক্ষ মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে অবগত করেন।
২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সামনে অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি প্রদান করেন প্রভাষক লুৎফুর রহমান। ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অধ্যক্ষ মাওলানা শায়েখুল ইসলাম সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারস্থ ভাড়া বাসা থেকে মাদ্রাসায় যেতে বের হন। প্রায় সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে হত্যার হুমকি দেয়ার ২ দিনের মাথায় পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক উপজেলার সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের বুরুঙ্গা সড়কেরমুখে লুৎফুর রহমানের সাথীদের নিয়ে নিজের প্রাইভেটকার (সিলেট-খ-১১-০০৫৪) চালিয়ে অধ্যক্ষ শায়েখুল ইসলামের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়ে তাকে হত্যা করেন।
এ সময় লুৎফুরের প্রাইভেটকার উল্টে যায় এবং তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পর পর প্রভাষক লুৎফুর রহমানকে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত অধ্যক্ষে স্ত্রী দিলবাহার তালুকদার লিপি বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম মামলার তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৪
জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (০৪/২০২০) দাখিল করেন। মামলাটি আদালতে ৩৫৩/২২ মূলে বিচারের জন্য রেকর্ড করা হয়।
একই বছরের ১১ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর বিচারশুরু হয়। মামলার দীর্ঘ শুনানিতে ৪৭জন সাক্ষীর মধ্যে ৩০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত গত সোমবার রায় ঘোষণা করেন।
Leave a Reply