এইবেলা, কুলাউড়া ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলায় অবস্থিত গোগালীছড়া (বদ্ধ) জলমহালটি জবর দখল করে ২ বছর থেকে মাছ লুটের অভিযোগ ইউনিয়ন পরিষদের এক মেম্বারের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ০৬ আগস্ট মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে কুলাউড়ার শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। অবশ্য অভিযুক্ত মেম্বার বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে গোগালীছড়া (বদ্ধ) জলমহালের ইজারাদার শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গোগালীছড়া (বদ্ধ) জলমহালটি (১৪২৫-১৪৩০ বাংলা) ৬ বছর মেয়াদে প্রথম ৪ বছর বার্ষিক ১ লাখ ৭২ হাজার ৬২০ টাকা এবং শেষ ২ বছরে আরও ২৫ শতাংশ বর্ধিত হারে শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে উন্নয়ন প্রকল্পে ভূমি মন্ত্রণালয় হতে ইজারা বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। ইজারা গ্রহিতা সমিতি ইতোমধ্যে তাদের ইজারা মূল্য সরকারি কোষাগারে জমা করেছেন।
জুড়ী উপজেলার জায়ফর নগর ইউনিয়নের মোম্বার মো. মতছিন আলী ও তার সহযোগিরা মিলে গত ২ বছর যাবৎ জলমহালটির শাহাপুর মৌজা অংশের মালিকানা দাবি করেন। জোরপূর্বক জলমহালটি দখল করে মাছ লুট করে নিয়ে যান। ৩ বারের নির্বাচিত এই মেম্বারের রয়েছে নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী রয়েছে বলেস্থানীয় লোকজন জানান।
এব্যাপারে সমিতির পক্ষে ২০১৯ সনে জুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে ১১ সেপ্টেম্বর জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের কোন সিদ্ধান্তই মানতে রাজি নন উক্ত মো. মহতছিন আলী মেম্বার।
জবরদখলের বিষয়টি জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হলে তিনি গত ০৫ আগস্ট বুধবার সকাল ১১টায় শুনানির জন্য নোটিশ দেন। কিন্তু ওইদিন মো. মহতোছিন আলী মেম্বার শুনানিতে উপস্থিত না হয়ে তার লাঠিয়াল ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে জলমহালে পাহারারত সমিতির লোকজনের উপর ও তার সহযোগিদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলা চালান। সমিতির লোকজনের নৌকা, জাল লুট করে নেয়। এসময় সমিতির পাহারাদাররা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
ইজারাদার শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, মো. মতছিন আলী মেম্বার ও তার সহযোগিদের লুটপাটে গত ২ বছরে জলমহালের ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এভাবে ক্ষতি হতে থাকলে জলমহালে ইজারা মূল্য পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জায়ফরনগর ইউনিয়নের মেম্বার মো. মতছিন আলীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এসব আমি কিছু জানি না। শাপলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিও আমি চিনি না।
এব্যাপারে জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার ঘটনার সত্যতা ও বৈঠকের বিষয় নিশ্চিত করে জানান, ১০ আগস্ট আবার বৈঠক আছে। মো. মতছিন আলী মেম্বারের বিষয়টি না জানা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খারাপ প্রকৃতির লোকের এমন স্বভাব।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান রুহুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে করা অভিযোগ সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছেন। উভয় পক্ষকে ডেকে, যা করণীয় করবো।#
Leave a Reply