মাহফুজ শাকিল, জুড়ী ফুলতলা থেকে ফিরে :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। তিনি তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, প্রবাসী আব্দুল আলিম সেলুর কাছে ধরাশয়ী হয়েছেন। প্রথমবারের মতো প্রবাস থেকে এসে বাবার পথে হাঁটার জন্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হন আব্দুল আলিম সেলু।
তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের হেভিওয়েট প্রার্থী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মাসুক আহমদকে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৮১৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে বাজিমাত করেছেন। বিজয়ী প্রার্থী আব্দুল আলিম সেলু পান ৫ হাজার ৩১ ভোট। আর নৌকার প্রার্থী মোঃ মাসুক আহমদ পান ২ হাজার ২১২ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মোস্তফা মিয়া (আনারস) প্রতীক নিয়ে পান ১ হাজার ৭২০ ভোট।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে আটটায় ইভিএম মেশিনে বিরামবিহীন ভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে চারটায় শেষ হয়। চা-বাগান অধ্যুষিত এই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা হলো ১৩ হাজার ৩৫৬।
বিজয়ী চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সেলু ফুলতলা ইউনিয়নের সাবেক দুই বারের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম ফয়াজ আলীর পুত্র।
বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল আলিম সেলু এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমার এই বিজয় সমগ্র ফুলতলা ইউনিয়ন বাসীর৷
একমাত্র ইউনিয়নের সকল মানুষের ভালোবাসার টানে এবং পিতার হারানো মসনদটি ফিরে পেতেই ২৩ বছরের প্রবাস জীবন ফেলে এসে এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। চা-বাগান অধ্যুষিত ফুলতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এই জরাজীর্ণ ও উন্নয়ন বঞ্চিত ইউনিয়নকে এক বন্দিদসা থেকে মুক্ত করতে এবার তাদের মূল্যবানটি ভোটটি আমাকে প্রদান করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। সেজন্য আমি ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণকে জানাই কৃতজ্ঞতা। আমার বাবা মরহুম ফয়াজ আলী এই ইউনিয়নের মানুষের জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। আমি আমার পিতার অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন ও নির্বাচিত সকল ইউপি সদস্যদের নিয়ে ফুলতলা ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে রূপান্তর করবো।
জুড়ী উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মোঃ হাফিজুর রহমান রাত আটটায় এই প্রতিবেদককে বলেন, ফুলতলা ইউপিতে ৯টি ওয়ার্ডের মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৩৫৬। বাতিল ২৪টি ভোটসহ মোট কাস্ট হয়েছে ৮ হাজার ৯৮৭। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আলিম সেলু বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে উপহার দেয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। নির্বাচনে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ১১টি ভোট কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার ছিল। এছাড়া তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও দায়িত্ব পালন করেন। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচনটি সফলভাবে শেষ হয়েছে।
Leave a Reply