মাঠে পচে নষ্ট হচ্ছে বোরো ধান : কাটতে আগ্রহ নেই কৃষকের – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বড়লেখার ছিদ্দেক আলী হাইস্কুলের ‘শতবার্ষিকী’ উদযাপনে কমিটি হিনাইনগর যুবসংঘের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গুনিজন ও কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নব বিমানসেনা দলের ৫৩ তম রিক্রুটদলের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত বড়লেখায় রহস্যঘেরা বাংলোবাড়িতে পুলিশের অভিযান বড়লেখা-জুড়ী নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের কর্মবিরতি : জনভোগান্তি মৌলভীবাজারে সুজনের গোলটেবিল বৈঠকে : নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব ছাতকে ইউএনও তরিকুল ইসলাম বিদায় নতুন ইউএনও ডিপ্লোমেসি চাকমার যোগদান কুলাউড়ার শরীফপুরে সড়কে প্রাণ গেলো ২ মোটরসাইকেল আরোহীর  বড়লেখায় আর্ন্তজাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষে ৫ অদম্য নারীকে সম্মাননা বড়লেখায় আর্ন্তজাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা

মাঠে পচে নষ্ট হচ্ছে বোরো ধান : কাটতে আগ্রহ নেই কৃষকের

  • শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩

Manual4 Ad Code

এইবেলা, কুলাউড়া  :: বিভিন্নজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে প্রায় ৬ বিঘা জমিতে বোরোধান চাষ করছিলাম। আসা ছিল ধান তুলে কিছুটা বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করবো এবং সারাবছর নিজে খাবো। কিন্তু আমার কপাল এতই খারাপ। ৬ বিঘার মধ্যে ৪ বিঘার ধান মরে ছাঁই হয়ে গেছে। এখন চিন্তা করছি কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবো এবং সারাবছর কেমনে ভাত খেয়ে বাঁচবো। কথাগুলো বলতে বলতে অনেকটা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের উত্তর রংগীরকুল গ্রামের কৃষক শাহিন আহমদ। এমন কান্না শুধু শাহিন আহমদের নয়, উপজেলার হাকালুকি হাওড়সহ বোরো নির্ভরশীল এলাকার হাজারো কৃষকের।

উপজেলা কৃষি সূত্রে জানা যায়, এবছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৩’শ ১৮ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৪’শ ৯০ হেক্টর। প্রায় ১৭২ হেক্টর বেশি চাষাবাদ হয়েছে। ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে নস্ট হয়েছে প্রায় ১৫ হেক্টর জমি।

Manual4 Ad Code

আর কৃষকরা বলছেন হাওর গুলোতে আবাদকৃত পুরো ব্রি-২৮ জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়াও ব্রি-২৯ ও ৯২ জাতের ধান ৫০-৭০ ভাগ পর্যন্ত নষ্ট হয়েছে। যার পরিমাণ সরকারি তথ্যের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।

কুলাউড়া উপজেলা এবং হাকালুকি হাওরের দক্ষিণতীরের কয়েক হাজার হেক্টর জমি ধান কাটছেন না কৃষকরা। তাদের মতে একবিঘা জমির ধান কাটতে দিতে হয় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। ধান পাওয়া যাবে না ৩ মন। তাই টাকা খরচ না করতে রাজি নয় কৃষকরা। মরে পচে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে কৃষকের কষ্টের ফসল। ক্ষোভ প্রকাশ করে কৃষকরা বলেন, সরকারী কর্মকর্তাগন অফিসে বসে হিসেব করেন। উৎপাদন দ্বিগুণ তিনগুণের স্বপ্ন দেখছেন। হাওড়ে আসলে না বাস্তব চিত্র দেখতেন। জানতেন কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে, না হয়েছে।

Manual3 Ad Code

জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল, জয়চন্ডী, বরমচাল, ভাটেরা ও কাদিপুর ইউনিয়নের প্রায় ৮০-৯০ ভাগ কৃষকদের একমাত্র সম্বল হাওড়ে উৎপাদিত বোরো ফসল। তাদের পুরো বছরের খোরাকী এবং ধার দেনাসহ সকল ব্যয় চলে ওই ধান বিক্রির টাকা দিয়ে। এবছর বোরো মৌসুমে দীর্ঘ মেয়াদী খরা, স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকির অভাব ও পানি সেচের সুবিধা না থাকায় হাওড়ে কৃষকের রোপনকৃত ব্রি-২৮, ২৯ ও ৯২ জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এতে চরম লোকসানে পড়েছেন হাওড় পারের কয়েক হাজার প্রান্তিক কৃষক ও বর্গা চাষী। কোথায়ও পুরো জমির ধানে চিটা ধরায় অনেক কৃষকরা ধান কাটতে অনিহা প্রকাশ করছেন। তবে কৃষকরা বলছেন, মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা তৎপর হলে এমনটি হতো না।

জয়চন্ডী ইউনিয়নের জকিরবিল হাওড়ে ব্রি-২৮, ২৯ ও ৯২ জাতের বোরো আবাদ করেছিলেন কৃষক শাহিন আহমদ, বাদই মিয়া, এলাইছ মিয়া, মুজিব মিয়া, ফারুক আহমদ, হারিছ আলীসহ আরও অনেকে। তাঁরা বলেন, এই হাওড়ে ব্রি-১৪ নং গাজী জাতের ধান খুব ভালো ফলন হয়। কিন্তু বীজ বপনের সময় উপজেলা সরকারী গোদামে গিয়ে ব্রি-১৪ পাননি তাঁরা। তখন কৃষি বিভাগের লোকজন বলেছেন, ব্রি-২৮, ২৯ ও ৯২ জাতের ধান আবাদ করতে, এগুলোরও ফলন ভালো হয়। আর ধানগুলো রোপণ করেই তাঁদের আজ বেহাল অবস্থা। কি কারনে ধান মরে গেলো তাও বলতে পারছেন না তারা। তাঁদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের তারা পাননা। এমনকি ফোন করলেও দেখা করেন না বা কোন পরামর্শ দেন না।

ভুকশিমইল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সাহেদ আহমদ বলেন, ৮০ শতাংশ ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এসব ধান কাটতে চাচ্ছেন না কৃষকরা। আমিও কিছু ধান কেটে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। ওই এলাকার কৃষক রিয়াজুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত ঔষধ এবং স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের উদাসিনতায় এমনটি হয়েছে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে এতো বড় বিপর্যয় হতো না। বাদে ভুকশিমইল গ্রামের আরিফুর রহমান বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে একজন কৃষি উপসহকারী আছেন, এটা আমিসহ অনেকই জানেন না। একই অভিযোগ সাতির আলী, নিমার আলী, বদরুল ইসলাম খান, মাখন মিয়া, রফিক মিয়া, সাহাব উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন, মহিবুল ইসলামসহ শত শত কৃষকের।

Manual8 Ad Code

এসব কৃষকরা বলছেন, সরকারী সহায়তা না পেলে আগামীতে তাদের পক্ষে আর চাষবাদ করা সম্ভব হবে না। একইসঙ্গে ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও বর্গা চাষিদের আর্থিক সহায়তা না করলে ঋণ পরিশোধ করাসহ পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে।

Manual4 Ad Code

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আবহাওয়ার কারণে ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। রাতে ঠান্ডা-দিনে গরম এই পরিস্থিতে ব্রি-২৮ জাতের ধানের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে আছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হবে।

জনবল সংকটের কথা বলে তিনি আরও জানান, প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকেন। কিন্তু একজনকে দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা তৈরি করা সম্ভব হয় না। তবুও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।#

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!