জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা -বটুলী চেকপোস্টের রাস্তার কাজ দীর্ঘ জটিলতা কাটলেও শুরু হয়নি দীর্ঘদিনে। জুড়ী -ফুলতলা পর্যন্ত মূল সড়কের কাজ ৪ বছরে যারা সমাপ্ত করতে পারেনি তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে আরও ১০০ মিটারের বাড়তি কাজ।
এ নিয়ে দূর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দা।বারবার শেষ করার তাগিদ দিলেও কচ্ছপ গতিতে এগিয়ে চলছে এ রাস্তার কাজ। রহস্যজনক কারনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সওজ কর্তৃপক্ষ। খানাখন্দে ভরা মূল সড়ক যেন এখন চাষের জমি।
এ নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই এলাকাবাসীর। জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জুড়ী-ফুলতলা বটুলী চেকপোস্টের যাতায়াতের ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের পুরোটাই ভেঙেচুরে বেহাল দশায় পরিণত হয়। ২০১৮ সালের ২৯ মে জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর সভায় জেলা মহাসড়কসমূহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (সিলেট জোন) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সড়ক বিভাগ, মৌলভীবাজার এর বাস্তবায়নে জুড়ী-ফুলতলা (বটুলী) (জেড-২৮২৩) জেলা মহাসড়কটি ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুটে উন্নীতকরণসহ মজবুতকরণ কাজের জন্য ৬৯ কোটি টাকা ব্যয় অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে তা ৭৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। দুই বছরের মধ্যে কাজ সম্পাদনের জন্য ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন নামক ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই রাস্তার কাজ পায়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এর কার্যাদেশ হয়।
এরপর কাজ নিয়ে টালবাহানা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।তিন মেয়াদে কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও ৪ বছরে ও পুরো কাজ সম্পন্ন করতে পারে নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।বিভিন্ন সময় কাজে অনিয়মের অভিযোগে এলাকাবাসী মানববন্ধন করে, স্থানীয় সংসদ,পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রীর দারস্থ হয়।রাস্তা নিয়ে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলে মন্ত্রী আশ্বস্ত করলে ও এখন ও সমাপ্ত হয়নি কাজ। ৩ মেয়াদি বৃদ্ধির কাজের চুক্তির সর্বশেষ মেয়াদ শেষ হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। অথচ প্রায় চর্তুথাংশের এক ভাগ কাজ বাকি রয়েছে।
ফুলতলা থেকে বটুলী চেকপোস্ট জিরো পয়েন্টের কাজের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা মাটি কেটে বক্স করে রাখেন।বৃষ্টিতে কাদাঁ হয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হলে স্থানীয় জনসাধারণ ইট ফেলে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করেন।সম্প্রতি কিছুদিন পূর্বে আবার ও শ্রমিকরা রাস্তায় বক্স করলে বেহালদশা হয়ে যায়।জিরো পয়েন্ট থেকে রাস্তার কাজ করার জন্য সওজ বিজিবির সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দেয়।বিজিবি বিএসএফের কাছ থেকে অনমুতি নিলেও কাজ শুরু হয়নি।মাসে প্রায় কোটি টাকার জিনিষপত্র এ রাস্তা দিয়ে ভারতের সাথে বাংলাদেশের আমদানি -রপ্তানি করা হয়।দেশের স্বনামধন্য কোম্পানীগুলোর পন্য ভারতে রপ্তানি করা হলেও কিছু কাচাঁমাল আমদানি করা হয়।অনেক সময় গাড়িগুলো গর্তে,খানাখন্দে আটকে গেলে শ্রমিকরা শরীরের জোরে ধাক্কা দিয়ে রাস্তা পাড় করে দেন বলেন অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া এ রাস্তা দিয়ে কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াত।রাস্তা সংস্কারের জন্য এসব এলাকার মানুষ একাধিকবার মানববন্ধন করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্ঠা করে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু হানিফ জানান,এ রাস্তা দিয়ে আমাদের এসব এলাকার মানুষের যাতায়াতের অনেক কষ্ট হয়।দীর্ঘ দিন থেকে রাস্তায় কাজের নামে খুড়ে রেখেছে।কোন ডেলিভারী রোগীকে এ রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই রাস্তায় ডেলিভারির সম্ভাবনা থাকে।
ব্যবসায়ী লিজন আহমদ জানান, বছরে ১২-১৪ কোটি টাকার মালামালের গাড়ি এ রাস্তা দিয়ে যাওয়া -আসা করে।বারবার আবেদন দেওয়ার পর ও রাস্তাটি সংস্কার করা হচ্ছে না। সরকারের রাজস্ব আদায়ের জন্য হলেও রাস্তার কাজ দ্রুত সমাপ্ত করা উচিত।
ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা মির্জা বেগ বলেন, এই মাসের পর আর কাজ বাকি থাকবে না, নতুন করে জিরো পয়েন্টের কাজের জন্য সওজ কর্তৃপক্ষ আমাদের কে বলেছে, সেগুলো ও আমরা করে দেবো।
সড়ক ও জনপথের উপ সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম জানান, ওয়াহিদ কস্ট্রাকশনের কিছু কাজ বাকি ছিল, চলমান রয়েছে।জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় ১০০ মিটারের মত রাস্তায় কাজের অনুমতি ছিলনা, অনুমতি এসেছে, সেগুলো করা হবে।#
Leave a Reply